উচ্ছ্বাস পেত্রাতোস, কামিংসদের। ছবি: এক্স।
আইএসএলের ফাইনালে মোহনবাগানের সামনে সেই মুম্বই সিটিই। যাদের হারিয়ে লিগ-শিল্ড জিতেছিল সবুজ-মেরুন, তাদের হারিয়েই আইএসএলের ট্রফি জিততে হবে তাদের। সোমবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে গোয়াকে ২-০ হারিয়েছে মুম্বই। সব মিলিয়ে তারা জিতেছে ৫-২ গোলে। শনিবার যুবভারতীতে ৬০ হাজার দর্শকের সামনে সেই মুম্বই-গাঁট পেরোতে হবে মোহনবাগানকে। মুম্বইয়ের হয়ে এ দিন গোল করে হর্হে পেরেরা দিয়াস এবং লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে।
আইএসএলের ফাইনালে ওঠার জন্য সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে মোহনবাগানের দু’গোলে জয় দরকার ছিল। রবিবার দু’গোলেই জিতে ফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসে ফুটছে মোহনবাগান। প্রত্যেকেই বলছেন, শনিবার ঘরের মাঠে ৬০ হাজারের বেশি সমর্থকের সামনে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ফাইনালেও নিজেদের উজাড় করে দেবেন।
রবিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে জেসন কামিংস ও সাহাল আব্দুল সামাদের গোলে জিতে ফাইনালে উঠেছে গত বারের কাপজয়ীরা। বেঙ্গালুরু এফসি-র পর এই প্রথম কোনও দল পর পর দু’বার ফাইনালে উঠল। বেঙ্গালুরু ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ মরসুমে ফাইনালে উঠেছিল। প্রথম বার চেন্নাইয়িন এফসি-র কাছে হেরে গেলেও পরের বার চ্যাম্পিয়ন হয়। মোহনবাগানের সামনে পরপর দু’বার কাপ জিতে নজির গড়ার সুযোগ।
এই নিয়ে আইএসএলের চারটি মরসুমের মধ্যে তিনটিতেই ফাইনালে উঠল মোহনবাগান। প্রথম বার আন্তোনিও লোপেস হাবাসের কোচিংয়ে ফাইনালে মুম্বই সিটির কাছে হেরে যায়। গত মরসুমে বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারিয়ে কাপ জিতে নেয়। এ বারও সাফল্য নিয়ে আশাবাদী সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলাররা।
রবিবারের ম্যাচের প্রথম গোলদাতা জেসন কামিংস আইএসএলের ওয়েবসাইটে বলেছেন, “আমাদের বিশ্বাস আইএসএল কাপ জিততে পারি। এই মরসুমটা ভাল যাচ্ছে। ত্রিমুকুট জয়ের জন্য অবশ্যই চেষ্টা করব। প্রত্যেকের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। আমাদের অনুশীলনে ফিরতে হবে, ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হতে হবে এবং নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে।”
সেমিফাইনালে গ্যালারিতে ৬২ হাজার দর্শক ছিলেন। সমর্থকদের ভূয়সী প্রশংসা করে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপার বলেন, “গোটা মরসুমে সমর্থকেরা আমাদের পাশে থেকেছেন। আমাদের খুব সাহায্য করেছেন এবং ওঁদের জন্যই মাঠে নেমে নিজেদের খুব শক্তিশালী মনে হয়। আমাদের সমর্থকেরাই ভারতের সেরা। সাফল্যের পিছনে তাঁদের অবদান অনেক।” কামিংস এ বার ১১টি গোল করে ফেললেন। সবক’টি গোলই তিনি করেছেন প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে। এই নজির এ বার রয় কৃষ্ণ (১৩) ও নোয়া সাদাউইয়েরও (১১) আছে।
দলের স্ট্রাইকার দিমিত্রি পেত্রাতোস বলেছেন, “ট্রফিটা চাই। এর জন্যই তো এত লড়াই করছি। ওড়িশাকে হারিয়েছি। আর একটা ম্যাচ বাকি। রিকভারির পর আমাদের ফোকাসে একটা জিনিসেই থাকবে, পরের ম্যাচে জেতা।”
সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে জেতা নিয়ে যে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তাঁরা, তা জানিয়ে পেত্রাতোস বলেন, “আমাদের জিততেই হবে তা জানতাম। সে জন্য ফোকাস্ড ছিলাম সবাই। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলার ফল পেলাম।”
তাঁর মুখেও সমর্থকদের প্রশংসা। বলেন, “কলকাতায় যত বার খেলেছি প্রত্যেক বারই ৬০ হাজার সমর্থক এসেছেন গলা ফাটাতে। ওঁরা আমাদের মধ্যে যে শক্তির সঞ্চার করেন, তাতেই উজ্জীবিত হয়ে যাই। যে কোনও ফুটবলারই ছোট থেকে এ রকম সমর্থকদের সামনে খেলার স্বপ্ন দেখে। ওদের খুশি করতেই হবে।”
ফিনল্যান্ডের হয়ে ইউরো কাপে খেলা জনি কাউকো জানিয়েছেন, ফাইনাল ঘরের মাঠে হবে বলে তাঁরাই এগিয়ে থেকে মাঠে নামবেন।তাঁর কথায়, “ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলা বিরাট সুবিধা। সমর্থকেরা যখন আমাদের হয়ে গলা ফাটান, প্রত্যেকের খুব ভাল লাগে। আশা করি, ফাইনালেও এত মানুষ আসবেন আমাদের সমর্থন করতে।”
রবিবারের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মনবীর সিংহ ফাইনালের দিকে তাকিয়ে। বলেন, “ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে ফাইনালে জেতার খুব চেষ্টা করব। তবে আমাদের সমর্থকদের আমাদের পাশে চাই। ওরা মাঠে থাকলে আমরা বাড়তি শক্তি পাই।”