জুয়ান ফেরান্দো। —ফাইল চিত্র
গত বার তাঁর হাত ধরে আইএসএল জিতেছিল মোহনবাগান। সেই মরসুমে দু’বারই ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিল তারা। কিন্তু নতুন মরসুমে সেই জুয়ান ফেরান্দোর কোচিংয়েই প্রথম বার ধাক্কা খেতে হল মোহনবাগানকে। মরসুমের প্রথম ডার্বিতেই হারতে হয়েছে সবুজ-মেরুনকে। তবে ডার্বিতে হারলেও তাঁকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না ফেরান্দো। তাঁর পাখির চোখ এএফসি কাপ।
ঘরোয়া ট্রফি জেতার পর এ বার আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য পেতে চায় মোহনবাগান। দলের কোচ থেকে কর্ণধার, একই কথা গত মরসুমের শেষ থেকে বলে আসছেন। সেই লক্ষ্যেই দলে আনা হয়েছে বিশ্বকাপার জেসন কামিংসকে। ট্রান্সফার ফি দিয়ে নেওয়া হয়েছে অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল আব্দুল সামাদের মতো ফুটবলারকে। তাঁদের সবাইকে নামিয়েও জিততে পারল না মোহনবাগান। তবে এই ফুটবলারদের দিয়েই এএফসি কাপ জিততে চাইছে তারা।
ম্যাচের পর মোহনবাগানের কোচ ফেরান্দো বললেন, “সমর্থকদের জন্যে এই ফলাফল দেখে খারাপ লাগছে। কিন্তু আমার কাছে খুব একটা হতাশার জায়গা নেই। কাল থেকে এএফসি কাপের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। প্রতি দিন নিজেদের উন্নতি করতে হবে। আমি একেবারেই ভেঙে পড়ছি না। এএফসি কাপে ভাল খেলাই আমাদের লক্ষ্য। আগামী বুধবার সেই লক্ষ্যে নামতে হবে আমাদের।”
হারের পিছনে সূচিকেই দায়ী করেছেন ফেরান্দো। তাঁর মতে, এক টানা ম্যাচ খেলতে হচ্ছে মোহনবাগানকে। কলকাতা লিগ, ডুরান্ড চলার মাঝেই খেলতে হচ্ছে এএফসি কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ফলে তাল মেলানো সম্ভব হচ্ছে না অনেক সময়েই। কোথায় কোন ফুটবলার খেলাবেন, সেটা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন। বললেন, “ভেবে দেখুন, দু’দিন পরেই আমাদের কলকাতা লিগে ম্যাচ। তার দু’দিন পরে এএফসি কাপ। তার পরেই আবার ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। এত গুলো ম্যাচে খেলানোর জন্যে ফুটবলার খুঁজে পাওয়াও মুশকিল। সবাইকে সব ম্যাচে খেলানো যাবে না। তাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সবাইকে খেলাতে হবে। এত কিছুর পরেও বলছি, আমাদের আসল লক্ষ্য এএফসি কাপ।”
নিজেদের লড়াই নিয়েও খুশি ফেরান্দো। বলেছেন, “রক্ষণের সামান্য ভুলে গোল খেয়েছি। তবে এটা বার বার বলছি, এটা প্রাক মরসুম প্রস্তুতির সময়। খেয়াল করলে দেখবেন, ম্যাচের অনেকটা সময় আমরা শাসন করেছি। বিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করেছি। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ভাল খেলতে পারিনি।”
দিনের শেষে প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গলের প্রশংসা করে গেলেন তিনি। বললেন, “ওরা সত্যিই ভাল খেলেছে। ইস্টবেঙ্গলের থেকে এ রকমই লড়াই প্রত্যাশা করেছিলাম। ওরা ডুরান্ড কাপে ভাল ফল করার লক্ষ্যে এসেছে। তাই এ রকম লড়াই দেখতে পেয়ে ভাল লেগেছে। নন্দর গোলটাও ভাল। ওকে আগেও এ রকম গোল করতে দেখেছি।”
ডার্বি হারলেও মোহনবাগানের কোচের প্রাপ্তি কারও চোট না পাওয়া। বললেন, “আমরা মাত্র দু’সপ্তাহ অনুশীলন করছি। আমার কাছে এই ম্যাচের অন্যতম প্রাপ্তি হল, কেউ চোট পায়নি। বেশ কিছু ট্যাকল হয়েছে ম্যাচে যেখান থেকে ফুটবলারদের গুরুতর চোট লাগতে পারত। কিন্তু আমি খুশি যে কারও চোট লাগেনি। আপাতত কয়েক দিন প্রস্তুতি নিয়ে এএফসি কাপে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার লক্ষ্যেই তৈরি করতে চাই ফুটবলারদের।”