মোহনবাগানের ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: ফেসবুক।
পঞ্জাবের পর বেঙ্গালুরু। টানা দু’টি ম্যাচ টাইব্রেকারে জিতে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠে গিয়েছে মোহনবাগান। টানা দ্বিতীয় বার এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠল তারা। কোচ হোসে মোলিনা চাইছেন, মোহনবাগানের হয়ে প্রথম বার ট্রফি জিততে। অতীতে এটিকের হয়ে আইএসএল জিতেছেন। কিন্তু মোহনবাগানের হয়ে ট্রফি জেতা হয়নি। অন্য দিকে, বেঙ্গালুরু ম্যাচের কৃতিত্ব গোলকিপার বিশাল কাইথকেই দিলেন তিনি।
বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর মোলিনা বলেছেন, “ম্যাচ জিতে আমি খুশি। কারণ বেঙ্গালুরু মোটেই সহজ দল ছিল না। ওদের দলে অনেক ভাল ফুটবলার রয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। ম্যাচটা জিততে পেরে খুশি। ফাইনাল খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। মোহনবাগানের হয়ে প্রথম ট্রফি জেতার আপ্রাণ চেষ্টা করব।”
দলের ভুলের পাশাপাশি রেফারির ভুলের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “আমার মতে, প্রথম ভুল এসেছে রেফারিদের তরফে। ওদের প্রথম গোলের সময় আমার মনে হয় না পেনাল্টি ছিল। কিন্তু রেফারিরাও ভুল করতে পারেন। এ ছাড়া, ম্যাচের কিছু মুহূর্তে ফুটবলারেরা ভুল খেলেছে। এটা হতেই পারে। অনুশীলনের সময় বেশি পাইনি। হয়তো এখনও আমার দর্শনের সঙ্গে ওরা মানিয়ে নিতে পারেনি। এই জায়গাগুলোয় আমাদের উন্নতি করতে হবে।”
গোলকিপার বিশাল জানালেন, দু’গোলে পিছিয়ে পড়লেও ম্যাচ জেতার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর কথায়, “কোয়ার্টার ফাইনালেও চাপের মুহূর্ত থেকে ম্যাচ জিতেছি। তার আগেও অনেক বার ম্যাচ পেনাল্টিতে গড়িয়েছে। তাই দলের প্রতি আমার ভরসা ছিল যে ওরা গোল করবে। তাই আমি জানতাম, একটা-দুটো বাঁচাতে পারলেই ফাইনালে চলে যাব।”
কী ভাবে পর পর দু’ম্যাচে নায়ক হয়ে উঠলেন? হাসতে হাসতে বিশালের জবাব, “এমন কোনও রেসিপি নেই। টাইব্রেকারের সময় আত্মবিশ্বাসী থাকি, দলকে ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করি। পেনাল্টিতে ম্যাচ গেলে আমিও বাকিদের উৎসাহ দিয়ে থাকি।”
গত বার যাঁর গোলে ডুরান্ড জিতেছিল মোহনবাগান, সেই দিমিত্রি পেত্রাতোস বলেছেন, “বিশালই আজকের নায়ক। দুটো পেনাল্টি বাঁচানো মুখের কথা নয়। আমরা ওর উপর বিশ্বাস রাখি। এ বার ফাইনাল নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আর একটাই ম্যাচ। আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করছি। তাই আগে গোল খাওয়া নিয়ে চিন্তিত নই। গোল করতে পারছি না এটাই আসল।”
গ্রেগ স্টুয়ার্ট এ দিন সহজ সুযোগ নষ্ট করলেও পেত্রাতোস পাশে দাঁড়িয়েছেন। সতীর্থকে নিয়ে বলেছেন, “গ্রেগের সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। আপনারা সবাই দেখেছেন ও কত ভাল ফুটবলার। অনেক ধরনের পজিশনে খেলতে পারে। আশা করি আগামী দিনে ওর সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলতে পারব।”
বেঙ্গালুরু ম্যাচে চোট পেয়ে উঠে গিয়েছিলেন শুভাশিস। তিনি বলেছেন, “দলটা একটা ছন্দে চলে এসেছে। আমরা একটা দল হিসাবে খেলেছি। সবাই নিজেদের ভূমিকা পালন করছে। আমি এই দলকে নিয়ে গর্বিত।” তিনি যোগ করেছেন, “মোহনবাগান ট্রফি ছাড়া কিছু ভাবে না। সমর্থকদের আশা পূরণ করার চেষ্টা করব আমরা। মোহনবাগান দলটাই খেলে ট্রফির জন্য।”
এ দিনই আরপিএসজি হাউসে এক অনুষ্ঠানে সঞ্জীব গোয়েন্কা বলেছেন, “এটিকে, এটিকে মোহনবাগান বা মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট, দলের নাম যা-ই হোক না কেন, তারা খেলতে নামে ট্রফির জন্যই। তাই রবিবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। ট্রফি জিততেই নামব আমরা।”