মোহনবাগানের অনুশীলনে শুভাশিস বসু। ছবি: ফেসবুক।
এক বছর আগে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে রেকর্ড সংখ্যক ১৬তম ডুরান্ড কাপ জিতেছিল মোহনবাগান। শনিবার সেই সংখ্যা আর একটা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ তাদের সামনে। তবে এ বার সামনে ইস্টবেঙ্গল নয়, খেলবে নর্থইস্ট ইউনাইটেড। প্রথম বার ডুরান্ড কাপ ফাইনালে ওঠা দলকে নিয়ে সমীহ কোচ হোসে মোলিনার গলায়। একই সঙ্গে জানালেন, আর টাইব্রেকারে ম্যাচ ফয়সালা চান না।
শনিবার যুবভারতীতে খেলতে নামার আগে মোলিনা বলেছেন, “ঘরের মাঠে খেলতে পারব ভেবে ভাল লাগছে। কিন্তু মাঠের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে ১১ জন লড়বে। আমার মনে হয় না কোনও ম্যাচ সহজ। তা-ও আবার এটা ফাইনাল। আমার রক্ষণ ভাগ বেশ ভাল। তার মানে এই নয় যে কোনও দল আমাদের বিরুদ্ধে গোল করতে পারবে না।”
নর্থইস্টে রয়েছেন আলেদ্দিন আজরাই, হামজা রেগ্রাগুইয়ের মতো মরক্কোর খেলোয়াড়। ভারতীয় বেশ কিছু খেলোয়াড়ও নজর কাড়ছেন। তবে কোনও নির্দিষ্ট ফুটবলারকে নিয়ে ভাবতে রাজি নন মোলিনা। বলেছেন, “আমরা বিপক্ষের কোনও নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের দিকে নজর দিতে চাই না। আমরা গোটা নর্থইস্ট দলটাকে নিয়ে ভাবছি। ওরা খুবই ভাল দল। ওদের খেলাও আমরা দেখেছি। ওদের বিরুদ্ধে গোল করা সহজ নয়। তবে আমরা ইতিবাচক থাকতে চাই। গোল করব, এই মানসিকতা নিয়ে নামতে হবে।”
ফাইনালের আগে মোলিনার চিন্তা কমেছে শুভাশিস বসুকে নিয়ে। শুক্রবারের পর শনিবারও তিনি অনুশীলন করেছেন। ফাইনালে প্রথম একাদশে কার্যত পাকাই। তবে চোটের কারণে জেমি ম্যাকলারেন, ধীরজ সিংহ, আশিক কুরুনিয়ান খেলবেন না। প্রথম একাদশ কী হবে তা এ দিন খোলসা করেননি মোলিনা। বলেছেন, “আমার হাতে অনেক ভাল ভাল ফুটবলার রয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জনের দল বেছে নেওয়া কঠিন কাজ নয়। তবে প্রতিপক্ষকে দেখে দল বেছে নিতেই পছন্দ করি। সেই মুহূর্তে কোন ১১ জনকে খেলালে জিততে পারব সেটার সিদ্ধান্ত আমাকেই নিতে হয়।”
একই সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, “তবে আবারও বলছি, যারা রিজ়ার্ভ বেঞ্চে থাকে তারাই আসল খেলোয়াড়। পঞ্জাব ম্যাচে মনবীর, কামিংস পরে নেমে গোল করেছে। যারা বেঞ্চে রয়েছে তাদের মনে রাখতে হবে, দলের যে কোনও মুহূর্তে ওদের দরকার হতে পারে। চার-মিনিট বাকি থাকতে মাঠে নেমেও ম্যাচের ফল বদলে দেওয়া যায়।”
আরও এক বার প্রশংসা করেছেন গোলকিপার বিশাল কাইথের। বলেছেন, “বিশাল দারুণ গোলকিপার। ওকে নিয়ে দলের সবাই খুশি। আমি জাতীয় দলের কোচ নই। যে কোচ তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মানোলো মার্কেজ়কে সমীহ করি। যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভেবেচিন্তেই নিয়েছেন। বিশাল আমাদের দলকে সাহায্য করছে এতেই খুশি। বিশালের বদলে অন্য কোনও গোলকিপারকে নেওয়ার কথা ভাবতেই পারি না।”
পঞ্জাব এবং বেঙ্গালুরু ম্যাচের পুনরাবৃত্তি চান না মোলিনা। সে কারণেই শেষ বেলায় বললেন, “৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করতে চাই। হয়তো সব সময় সেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। আমরা নিখুঁত দল নই। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা করি। প্রতি দিন উন্নতি করাই আমাদের লক্ষ্য। কখনও কিছু অর্জন করতে পারি, কখনও পারি না। কিন্তু চেষ্টা করি।”
এ দিকে, আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় গ্রেগ স্টুয়ার্ট স্বপ্ন দেখছেন সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে প্রথম ট্রফি জেতার। তিনি বলেছেন, “গত মরসুমে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলেছি। তখন থেকেই ওদের পছন্দ করতাম। সেই দলে খেলতে পেরে গর্বিত। চার সপ্তাহ হল এখানে এসেছি। আগামী কাল প্রথম ট্রফি জেতার সুযোগ রয়েছে আমাদের সামনে।”
স্টুয়ার্টের সংযোজন, “কালকের ম্যাচে জেতাই প্রধান লক্ষ্য। ভাল খেলেও ট্রফি না জিততে পারলে কিছুই হবে না। প্রথম লক্ষ্য হল গোল করে দলকে ট্রফি জেতানো। তাই প্রথম একাদশে থাকতে চাই।”