মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
গত মরসুমে ঘরের মাঠে মুম্বই সিটি এফসি-কে হারিয়েই আইএসএলের লিগ-শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। সেই ঘরের মাঠেই ক’দিন বাদে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। মুম্বই প্রতিশোধ নেয় মোহনবাগানকে হারিয়ে আইএসএলের কাপ জিতে। পরের মরসুমের আইএসএলও শুরু হচ্ছে এই দ্বৈরথ দিয়েই। যুবভারতীতে শুক্রবার প্রথম ম্যাচে মোহনবাগান খেলবে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে।
তবে গত মরসুমের থেকে দুই দলেই অনেক পরিবর্তন হয়েছে। হর্হে পেরেরা দিয়াস-সহ একাধিক ফুটবল দল বদলে পাড়ি দিয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। অন্য দিকে, মুম্বই থেকে মোহনবাগানে এসেছেন আপুইয়া। মোহনবাগানও নতুন ভাবে শুরু করছে কোচ হোসে মোলিনার অধীনে। আনোয়ার আলিকে হারানো ছাড়া তাদের দলে অবশ্য খুব বেশি বদল হয়নি। মোলিনা অবশ্য সাফ জানালেন, গত মরসুমে কী হয়েছিল তা তাঁর মাথায় নেই।
বৃহস্পতিবার মোহনবাগান তাঁবুতে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, “গত বারের বেশ কিছু ম্যাচ দেখেছি ঠিকই। কিন্তু এটা নতুন মরসুম। নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। নতুন ফুটবলারেরাও এসেছে। আমি নিজেও ছিলাম না গত বার। তাই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। গত বার কী হয়েছে তা মাথাতেই রাখছি না।”
মোহনবাগান-মুম্বই ম্যাচ গত কয়েক বছর ধরেই অন্য মাত্রা পেয়েছে। দু’দলেই তারকা ফুটবলার ভর্তি। তবে মোহনবাগানকে এগিয়ে রাখতে রাজি হননি মোলিনা। বলেছেন, “মানসিক ভাবে আমরা তৈরি। দুটো দলের মান একই রকম। মানসিক ভাবে আমরা ওদের থেকে এগিয়ে থাকতে চাই। আশা করি কাল মাঠে নেমে আমার ছেলেরা নিজেদের সেরাটাই দেবে।”
ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠলেও ট্রফি জিততে পারেনি মোহনবাগান। তবে ছ’টি ম্যাচ খেলতে পেরেছে। যদিও তাতে সঠিক প্রস্তুতি হয়েছে এমনটা মানতে রাজি নন মোলিনা। প্রস্তুতির খামতির কথা স্পেনীয় কোচ মেনে নিয়েছেন।
মোলিনার কথায়, “দলের ফুটবলারেরা যে ভাবে পরিশ্রম করেছে তাতে আমি খুশি। ওরা প্রত্যেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে। তবে এখনও অনেক উন্নতি করতে হবে। ডুরান্ড কাপ প্রস্তুতির সঠিক মঞ্চ নয়। মাত্র ছ’সপ্তাহ কোনও দলকে ফিটনেস বা বোঝাপড়ার দিক থেকে সেরা পর্যায়ে তুলে আনা যায় না। আরও সময় দরকার। আমরা ডুরান্ড কাপ ভুলে গিয়েছি। এখন যাবতীয় নজর আইএসএলে।”
মোহনবাগানের লেফট ব্যাক পজিশন অনেক দিন ধরেই দুর্বলতার কারণ। শুভাশিস বসু মাঝেমাঝেই ভুল করে ফেলছেন। মোলিনা অবশ্য একজন খেলোয়াড়কে দোষ দিলেন না। তিনি বলেছেন, “দোষ হলে গোটা দলের হবে। কোনও সমস্যা থাকলে তা সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ডুরান্ড কাপে বেশ কিছু খারাপ গোল খেয়েছি। সেগুলো ঠিক করতে হবে। আমাদের সবাইকে যেমন গোল করতে হবে, তেমনই সবাইকে রক্ষণেও ভূমিকা নিতে হবে।”
এ দিন আবারও মোলিনা জানিয়েছেন, আলাদা করে ইস্টবেঙ্গল বা মহমেডানকে নিয়ে ভাবছেন না। যাতায়াত না করে কলকাতাতেই বেশি ম্যাচ খেলতে পারবেন, এটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে। পাশাপাশি এটাও জানিয়েছেন, মুম্বই ম্যাচে জেমি ম্যাকলারেন খেলবেন না। অনিশ্চয়তা রয়েছে আলবের্তো রদ্রিগেসকে নিয়েও।
মোলিনার সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন আপুইয়া, যিনি এ বারই মুম্বই থেকে মোহনবাগানে এসেছেন। তিনি বললেন, “এত দিন মুম্বইয়ের হয়ে খেলেছি। এ বার ওদের বিরুদ্ধে খেলব ভেবে উত্তেজনা হচ্ছে। মোহনবাগানের হয়ে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। মুম্বই ছেড়ে আসলেও ওদের প্রতি কোনও রাগ নেই।”
লালিয়ানজুয়ালা ছাংতের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের কথা তুলতেই আপুইয়ার মুখে হাসি। বললেন, “ছাংতে খুবই ভাল ছেলে। আমার ভাল বন্ধু। মুম্বইয়ের প্রচুর লোক ওকে ভালবাসে। গোটা মরসুমে ভাল খেলুক, এটাই চাই। তবে আমাদের বিরুদ্ধে যেন গোল না করে।”
পরীক্ষা দিতে যাবেন বলে আন্তর্মহাদেশীয় কাপে খেলেননি আপুইয়া। এ দিন জানালেন, তিনি ইন্দিরা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর পড়েছেন। প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন বলে খেলা হয়নি।