মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো হাবাস। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা ডার্বিতে জিতেও তিনি খুশি হতে পারেননি দলের দ্বিতীয়ার্ধের পারফরম্যান্সে। কেরলের মাঠে তাদের চার গোল দিয়েও অখুশি মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। এ বার তাঁর চিন্তা দলের সুযোগ নষ্ট। যে ভাবে কেরলের বিরুদ্ধে সুযোগ নষ্ট করেছেন জেসন কামিংস, আর্মান্দো সাদিকুরা, তা খুশি করতে পারেনি হাবাসকে। তাঁর মতে, অন্তত সাত গোল দেওয়া উচিত ছিল। তিন গোল খাওয়া নিয়েও খুশি নন তিনি।
বুধবারের জয় নিয়ে এ বারের আইএসএলে টানা আটটি ম্যাচে অপরাজিত মোহনবাগান। ছ’টি জিতেছে। পাশাপাশি টানা চারটি অ্যাওয়ে ম্যাচে অপরাজিত রইল তারা। যার মধ্যে তিনটি জিতেছে। এ মরসুমে অ্যাওয়ে ম্যাচে সপ্তম জয় পেল তারা।
ম্যাচের পর হাবাস বলেছেন, “আমাদের আরও তিন গোল করা উচিত ছিল। জেসন, লিস্টন গোলের ভাল সুযোগ পেয়েছিল। পাশাপাশি আমরা যখন একটানা আক্রমণে ওঠার সময় রক্ষণে অনেক ফাঁকা জায়গা থেকে যাচ্ছিল। প্রতিপক্ষ কাজে লাগাতেই পারত। ছেলেদের বলব, ভবিষ্যতে বিপক্ষকে ফাঁকা জায়গা না দেওয়ার চেষ্টা করতে।”
গোলপার্থক্যে উন্নতি করার জন্য তিনি যে ম্যাচটা ৪-০ জিততে চেয়েছিলেন, তা জানিয়ে হাবাস বলেছেন, “কেরল ম্যাচ কঠিন হবে জানতাম। উল্টো দিকে একটা ভাল দল। সমর্থকদের প্রচণ্ড চিৎকার। তার উপর, তিন দিন আগেই ডার্বি খেলে লম্বা সফর করে এখানে এসেছি। এই অবস্থায় এ রকম একটা ম্যাচ খেলা মোটেই সোজা ছিল না। আমাদের গোলপার্থক্য ভাল আছে ঠিকই। তবু আজকের ম্যাচটা ৪-০ জিততে চেয়েছিলাম। তবে তিন পয়েন্ট পাওয়াটাও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।”
বুধবার সাদিকু এবং কামিংস দু’জনেই গোল করেছেন। গোল পাচ্ছেন দিমিত্রি পেত্রাতোসও। তিন বিদেশি স্ট্রাইকারই গোলের মধ্যে থাকায় হাবাস খুশি। বলেছেন, “আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি, গোলও পেয়েছি। তিন স্ট্রাইকারেরই গোলের মধ্যে থাকাটা দলের পক্ষে ভাল। কখন কার চোট-আঘাত বা কার্ড-সমস্যা হয় ঠিক নেই। দিমি, জেসন, সাদিকু তিন জনেই ভাল খেলায় আমি খুশি।”
কেরলের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করা আলবেনিয়ার সাদিকুকে নিয়ে হাবাস বলেছেন, “সাদিকু খুবই ভাল খেলোয়াড়। ওর সঙ্গে দিমিত্রি, জেসনকে একসঙ্গে খেলাতে পারলে ভালই হত। সেই উপায় নেই। তাই ওদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলাচ্ছি যাতে প্রত্যেকে সমান সময় পায়। কাজটা মোটেই সোজা নয়।”
অতীতে তাঁকে অনেকে রক্ষণাত্মক কোচ বলে আখ্যা দিলেও, এ বার হাবাস কোচের দায়িত্বে আসার পর মোহনবাগান যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে স্প্যানিশ কোচ বলেছেন, “আগে যখন আমার হাতে ভাল আক্রমণের খেলোয়াড় ছিল, তখনও আমি দলকে আক্রমণ-নির্ভর খেলা খেলিয়েছি। কিন্তু আক্রমণ ও রক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য থাকা উচিত। দুটোই একসঙ্গে করতে হয়। শুধু আক্রমণ বা শুধু রক্ষণ করে ফুটবল হয় না। আমরা সেটাই করছি।”
আপাতত আইএসএলে দীর্ঘ ছুটি পাবেন হাবাসের খেলোয়াড়রা। আট জনকে চলে যেতে হবে জাতীয় দলের শিবিরে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দু’টি ম্যাচ খেলতে হবে তাঁদের। জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময় চোট-আঘাতের সম্ভাবনা থেকেই যায়। লিগের এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কোনও নির্ভরযোগ্য ফুটবলারের চোট লাগলে কী করবেন? হাবাস বলেছেন, “জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড় ছাড়তেই হবে। এটা বাধ্যতামূলক। ভারতীয় দলের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল। আমাদের খেলোয়াড়রা ভারতীয় শিবির থেকে ফেরার পর শারীরিক অবস্থা যাচাই করে দেখতে হবে। তার উপর ভিত্তি করে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ওদের খেলাতে হবে। এ ছাড়া কোনও উপায় নেই।”