গোলের মুহূর্তে পেত্রাতোস। ছবি: এক্স।
আইএসএলে শনিবার পঞ্জাব এফসি-কে ১-০ গোলে হারিয়ে লিগ-শিল্ডের লড়াইয়ে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখল মোহনবাগান। ম্যাচের একমাত্র গোলদাতা দিমিত্রি পেত্রাতোস। তবে আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস-হীন মোহনবাগানের খেলা দেখে অনেকেই খুশি হননি। পঞ্জাব ঠিক মতো সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে এই ম্যাচ জেতার কথাই নয় মোহনবাগানের। তারা নিজেরাও অনেক সুযোগ নষ্ট করেছে। কোনও মতে ম্যাচ জিতেছে সবুজ-মেরুন। আইএসএলের পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল মোহনবাগান। ২০ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪২। শীর্ষে থাকা মুম্বই সিটির সমসংখ্যক ম্যাচে পয়েন্ট ৪৪।
খেলার শুরু থেকেই পঞ্জাবকে চেপে ধরা চেষ্টা করেছিল মোহনবাগান। একটু পিছন থেকে আক্রমণ শুরু করছিল তারা। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পঞ্জাবও একই কৌশল নেওয়ায় খেলা হচ্ছিল মূলত মাঝমাঠেই। দুই দলই চেষ্টা করছিল বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে। খেলার বিপরীতে গিয়ে গোল করার প্রবণতা রয়েছে পঞ্জাবের। সেটা নিয়েও সতর্ক থাকতে হচ্ছিল পঞ্জাবকে। ১২ মিনিটের মধ্যে এক বার আক্রমণেও উঠেছিল পঞ্জাব। তবে সেই আক্রমণ কাজে লাগেনি। ১৬ মিনিটে মোহনবাগান একটি সুযোগ পেয়েছিল। শুভাশিস বসুর দূরপাল্লার শট বাঁচিয়ে দেন পঞ্জাব গোলকিপার।
মোহনবাগানের আক্রমণে বেশ মন্থর মনোভাব লক্ষ করা যায়। ধীরগতিতে আক্রমণে উঠছিল তারা। ফলে পঞ্জাব আগে থেকে রক্ষণ গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেয়ে যাচ্ছিল। মোহনবাগানের পাসিংও ঠিকঠাক হচ্ছিল না। একাধিক মিস পাস করছিলেন ফুটবলারেরা। মাঝে একটি খারাপ ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন দীপক টাংরি। পরের ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না। মোহনবাগান উইং দিয়েও আক্রমণের চেষ্টা করছিল। মনবীর বল বেশ কয়েক বার এগোলেও ক্রস সঠিক জায়গায় রাখতে পারছিলেন না। ডান দিকে আশিস রাইও সে ভাবে বল ভাসাতে পারছিলেন না।
তবু মোহনবাগান এগিয়ে যায় প্রথমার্ধেই। বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন শুভাশিস। সেই শট বাঁচিয়ে দিলে বল যায় জেসন কামিংসের পায়ে। তিনি পেত্রাতোসকে সাজিয়ে দেন। জোরালো শটে গোল করেন অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলার। দু’মিনিট পরেই সমতা ফেরাতে পারত পঞ্জাব। ফ্রিকিক থেকে গোল করে দিয়েছিল তারা। কিন্তু লুকা মাজসেন অফসাইডে থাকায় সেই গোল বাতিল হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের খেলায় বাড়তি কোনও ঝাঁজ লক্ষ করা যায়নি। বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে আক্রমণে উঠছিল তারা। পঞ্জাব শুধু রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল। তার মাঝেও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন জর্ডান গিল। নিজেই নিখুঁত হেড করে মাজসেনকে পাস দিয়েছিলেন। মোহনবাগানের দুই ডিফেন্ডারকে ঘাড়ে নিয়ে ফাঁকায় সেই বল গিলের উদ্দেশে ব্যাক হিল করেন মাজসেন। সামনে একা বিশাল কাইথ থাকলেও সেই বল গোলের ধারেকাছে রাখতে পারেননি গিল।
পরের মুহূর্তে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল মোহনবাগানের কাছেও। প্রতি আক্রমণ থেকে মনবীর সিংহের হালকা টোকা কোনও মতে পঞ্জাব গোলকিপার বাঁচালেও ফিরতি বল চলে গিয়েছিল কামিংসের পায়ে। তিনি জালে বল ঠেলার আগেই পঞ্জাবের এক ডিফেন্ডার এসে বল ক্লিয়ার করে দেন। ৬২ মিনিটে আবার পঞ্জাব একটি সুযোগ নষ্ট করেন। বাঁ দিক থেকে মাজসেনে হেড পেয়ে গিল শট নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তা বাঁচিয়ে দেন মোহনবাগানের গোলকিপার।
ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট বেশ ব্যস্ত থাকতে হয় মোহনবাগানে। সেই সময় সমতা ফেরানোর জন্যে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে পঞ্জাব। কিন্তু সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার না থাকার অভাব ভাল ভাবে ভোগাল তাদের। অনেক সুযোগ তৈরি করেও তারা কাজে লাগাতে পারেনি। উল্টে ৯০ মিনিটে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসো একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন।