Durand Cup 2024

শনিবার যুবভারতীতে ডুরান্ড ফাইনালে বাগান, আবার জেতাল বিশাল-হাত, টাইব্রেকারে হার সুনীলদের

দুই গোলে পিছিয়ে থাকার পরেও জিতল মোহনবাগান। যুবভারতীতে টাইব্রেকারে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠল সবুজ-মেরুন। আবার জয়ের নায়ক হয়ে উঠলেন বিশাল কাইথ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ১৯:৪২
Share:

বিশাল কাইথ। —ফাইল চিত্র।

মোহনবাগান ২ — বেঙ্গালুরু ২ (মোহনবাগান টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয়ী)

Advertisement

হাল ছাড়েনি মোহনবাগান। দুই গোলে পিছিয়ে থাকার পরেও হাল ছাড়েনি তারা। যুবভারতীতে বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে শেষ ৩০ মিনিট যে খেলাটা তারা খেলল তা দেখার মতো। ৫১ মিনিটে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল মোহনবাগান। দেখে মনে হচ্ছিল, হেরে মাঠ ছাড়তে হবে। সেখান থেকে সমতা ফেরাল তারা। খেলা গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে নায়ক আবার সেই বিশাল কাইথ। কোয়ার্টার ফাইনালের পর সেমিফাইনালেও দলকে জেতালেন বিশাল। বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠল মোহনবাগান।

দলকে জেতাতে যুবভারতী ভরিয়েছিলেন মোহনবাগান সমর্থকেরা। কিন্তু তাঁদের সামনে প্রথমার্ধে যে খেলাটা দল খেলল, তা দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথমার্ধের শেষ পাঁচ মিনিট বাদে বাকি সময়ের খেলা দেখে মনেই হল না কোনও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে সেমিফাইনালের প্রথম একাদশে ছ’টি বদল করেছিলেন কোচ হোসে মোলিনা। প্রথম থেকে মাঠে ছিলেন জেসন কামিংস ও দিমিত্রি পেত্রাতোস। তাতেও প্রথমার্ধে কাজের কাজ কিছু হল না।

Advertisement

প্রথম থেকেই রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলছিল বাগান। বেশির ভাগ সময় নিজেদের গোল বাঁচাতেই ব্যস্ত থাকেন শুভাশিস বসু, টম অলড্রেডরা। দু’তিনটির বেশি সঠিক পাস হচ্ছিল না। কোনও পরিকল্পিত আক্রমণ হচ্ছিল না। মোহনবাগানের ছন্নছাড়া ফুটবলের সুবিধা পায় বেঙ্গালুরু। প্রথমার্ধে কয়েক বার বাগান গোলের সামনে পৌঁছে যায় তারা। ২৭ মিনিটের মাথায় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন শুভাশিস। ফলে বাগানের রক্ষণ আরও নড়বড়ে হয়ে যায়।

বেঙ্গালুরুকে এগিয়ে দেন সেই সুনীল ছেত্রী। এই মাঠেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মাঠেই আবার গোল করলেন সুনীল। ৪৩ মিনিটের মাথায় বেঙ্গালুরুর বিনিথকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন মনবীর সিংহ। পেনাল্টি পায় বেঙ্গালুরু। গোল করতে ভুল করেননি সুনীল। পিছিয়ে পড়ার পরে কিছুটা তাগিদ দেখা যায় বাগান ফুটবলারদের মধ্যে। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে অনিরুদ্ধ থাপার ক্রস থেকে হেড করেন আলবের্তো রদ্রিগেস। বল পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। নইলে প্রথমার্ধেই সমতা ফেরাতে পারত বাগান। ভাগ্য সহায় না থাকায় পিছিয়ে বিরতিতে যায় তারা।

দ্বিতীয়ার্ধে আবার ভুল করে বাগান রক্ষণ। ৫১ মিনিটের মাথায় অলড্রডের একটি ব্যাক পাস বার করতে গিয়ে মিস্‌ করেন গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান বিনিথ। ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে ভুল করেননি তিনি। বাধ্য হয়ে অলড্রেডকে তুলে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নামান মোলিনা। নেমেই ম্যাচের সহজতম সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। বল বার করতে গিয়ে ভুল করেন বেঙ্গালুরুর গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। ফাঁকা গোলে হেড করতে যান স্টুয়ার্ট। কিন্তু ঠিক মতো মাথায় বল লাগাতে পারেননি তিনি। ফলে বল গোলের বাইরে বেরিয়ে যায়।

সময় যত বাড়ছিল, বাগানের উপর তত চাপ বাড়ছিল। ৬৬ মিনিটের মাথায় ম্যাচে ফেরার সুযোগ পায় বাগান। বক্সের মধ্যে মনবীরকে জার্সি ধরে ফেলে দেন বেঙ্গালুরুর ডিফেন্ডার। পেনাল্টি পায় বাগান। গোল করতে ভুল করেননি পেত্রাতোস। কিন্তু ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যেতে হলে আরও একটি গোল দরকার ছিল বাগানের। বেঙ্গালুরুর কোচ ডিফেন্সে লোক বাড়িয়ে ফেলেন। ফলে আক্রমণ করলেও গোলের মুখ খুলতে পারছিলেন না কামিংসেরা।

সেই কাজটা করলেন থাপা। ৮৪ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে ফিরতি বলে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ে জোরালো শট মারেন থাপা। ফুটবলারদের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বল জালে জড়িয়ে যায়। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন গুরপ্রীত। কিছু করার ছিল না তাঁর। সমতা ফেরানোর পরে আরও গোল করার চেষ্টা করে বাগান। কিন্তু বাকি সময়ে আর গোল হয়নি। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকার আবার নায়ক হয়ে ওঠেন বিশাল। সুনীলকে তুলে নেওয়ায় তিনি পেনাল্টি নিতে পারেননি। দু’দলের প্রথম তিন ফুটবলার গোল করতে ভুল করেননি। বলা ভাল, দুই গোলরক্ষক বিশাল ও গুরপ্রীতকে ভুল দিকে ঝাঁপাতে বাধ্য করেন তাঁরা। মোহনবাগানের হয়ে কামিংস, মনবীর ও লিস্টন এবং বেঙ্গালুরুর হয়ে মেন্ডেজ়, ভেকে ও পেদ্রো গোল করেন। তার পরেই বিশালের জাদু। মোহনবাগানের পেত্রাতোস গোল করার পরে বেঙ্গালুরুর চতুর্থ রেফারি নিতে যান হোলিচরণ নার্জারি। তাঁর শট বাঁচিয়ে দেন বিশাল। পরের শটে স্টুয়ার্ট গোল করলেই বাগান জিতে যেত। কিন্তু তাঁর শট বাঁচিয়ে দেন গুরপ্রীত। তার পরেও দলকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। জোভানোভিচের পঞ্চম শট বাঁচিয়ে দিয়ে দলকে ফাইনালে তোলেন বিশাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement