ফুরফুরে: মাজিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে রবিবার চূড়ান্ত অনুশীলনে মগ্ন দিমিত্রিরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দোর বিশেষত্ব হল, কোনও ব্যাপারেই উচ্ছ্বসিত হন না। দল জিতুক বা হারুক, তাঁর অভিব্যক্তিতে পরিবর্তন হয় না।
অশ্বমেধের ঘোড়ার মতোই এই মরসুমে ছুটতে শুরু করেছেন দিমিত্রি পেত্রাতসরা। ডুরান্ড কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে এএফসি কাপে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ওড়িশা এফসিকে ৪-০ চূর্ণ করেছেন। আইএসএলে টানা দু’টি ম্যাচ জিতেছেন। এখনও পর্যন্ত চলতি মরসুমে এগারোটির মধ্যেই দশটিতেই জিতেছেন তাঁরা। সোমবার এএফসি কাপে মোহনবাগানের মুখোমুখি হওয়ার আগে চিন্তিত মলদ্বীপের মাজ়িয়া এসআরসি-র কোচ মিলোমির সেসলিজা।
রবিবার দুপুরে যুবভারতীতে সাংবাদিক বৈঠকে বলেই দিলেন, ‘‘মোহনবাগানের আক্রমণভাগ ভয়ঙ্কর। একসঙ্গে ছয় জন ফুটবলার আক্রমণে উঠে আসে। প্রচুর গোল করছে। তা ছাড়া জাতীয় দলের একাধিক দক্ষ ফুটবলার রয়েছে ওদের। কোচ জুয়ান ফেরান্দোর রণকৌশলও অসাধারণ। অস্বীকার করার জায়গা নেই এই ম্যাচে ওরাই এগিয়ে।’’ যোগ করলেন, ‘‘চোটে প্রথম দলের তিন ফুটবলার নেই। তা সত্ত্বেও রক্ষণাত্মক খেলব না। চেষ্টা করব জেতার।’’
গত বছর যুবভারতীতে পূর্ণ শক্তি নিয়ে খেলতে আসা মলদ্বীপের এই দলকেই ৫-২ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়ে এএফসি কাপের আন্তঃআঞ্চলিক সেমিফাইনালে উঠেছিল মোহনবাগান। জোড়া গোল করেছিলেন জনি কাউকো। বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে মাজ়িয়া এই মরসুমে এএফসি কাপে যাত্রা শুরু করলেও হুগো বুমোসদের মুখোমুখি হওয়ার আগে নানা সমস্যায় জর্জরিত। অথচ গত মরসুমের তুলনায় এই মোহনবাগান অনেক বেশি শক্তিশালী। কাউকো দল ছাড়লেও যোগ দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় বিশ্বকাপার জেসন কামিংস। রয়েছেন দিমিত্রি, বুমোস, আর্মান্দো সাদিকু, হেক্তর ইউতসে। রক্ষণে অসাধারণ খেলছেন আনোয়ার আলি। মাঝমাঠে দুরন্ত সাহাল আব্দুল সামাদ।
জুয়ান অবশ্য জানাচ্ছেন, দ্বৈরথ একেবারেই সহজ হবে না। সাংবাদিক বৈঠকে বললেন, ‘‘কঠিন ম্যাচ। মাজ়িয়া আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে। বসুন্ধরা কিংসের মতো দলকে হারিয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘প্রতিপক্ষকে নিয়ে বেশি না ভেবে নিজেদের পরিকল্পনার উপরেই মনোনিবেশ করতে চাই। ওদের বিরুদ্ধে সেরাটা দিতে হবে।’’
ফুটবলারদের ক্লান্তি নিয়ে জুয়ান বলেন, ‘‘এএফসি কাপের এই ম্যাচের পরে আইএসএলের (৭ অক্টোবর চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে) খেলা রয়েছে। অর্থাৎ, এই সপ্তাহে দু’টি ম্যাচ খেলব। শারীরিকের চেয়ে মানসিক দিকটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কতটা তরতাজা হয়ে ছেলেরা মাঠে নামবে, তার উপরে সব কিছু নির্ভর করবে।’’ যোগ করেন, ‘‘এএফসি কাপ আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে হবে। তা না হলে জেতা কঠিন।’’
সোমবার মাঠে নামছে ওড়িশা এফসি-ও। মোহনবাগানের কাছে ঘরের মাঠে হারের যন্ত্রণা ভুলে ঢাকার মাঠে বসুন্ধরা কিংসকে হারাতে মরিয়া রয় কৃষ্ণরা।
আজ এএফসি কাপে: মোহনবাগান বনাম মাজ়িয়া এফসি (সন্ধে ৭.৩০ থেকে, স্পোর্টস ১৮ চ্যানেলে)।