বিশাল কায়েথ জেতালেন মোহনবাগানকে। ছবি: এক্স।
মোহনবাগান ৩
পঞ্জাব এফসি ৩
(টাইব্রেকারে মোহনবাগান ৬-৫ ব্যবধানে জয়ী)
একটি-দু’টি নয়, ছ’-ছ’টি গোল। শুক্রবার জামশেদপুরে মোহনবাগান বনাম পঞ্জাব ম্যাচ এতটাই নাটকীয়তায় ভরা থাকল। গোল, পাল্টা গোলের শেষে জয়ী মোহনবাগান। টাইব্রেকারে ৬-৫ জিতল তারা। ৯০ মিনিটে খেলার ফলাফল ছিল ৩-৩। ডুরান্ড কাপে অতিরিক্ত সময় নেই। ফলে ম্যাচ সরাসরি গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে মোহনবাগান জিতল বিশাল কায়েথের সৌজন্যে। নির্ধারিত সময়ে মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট, মনবীর সিংহ এবং জেসন কামিংস।
টাইব্রেকারের প্রথম দিকে পর পর ভুল দিকে ঝাঁপাচ্ছিলেন মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল। কিন্তু শেষ দু’টি শট বাঁচালেন তিনি। তাতেই ম্যাচ জিতল মোহনবাগান। প্রথম শট পোস্টে মারেন কামিংস। গোল করেন পঞ্জাবের বিনীত। এর পর মোহনবাগানের হয়ে পর পর গোল করেন মনবীর, লিস্টন, দিমিত্রি, স্টুয়ার্ট, শুভাশিস বসু এবং টম অলড্রেড। পঞ্জাবের ইভান এবং ধনচন্দ্রের শট বাঁচিয়ে দেন বিশাল।
পঞ্জাবকে হালকা ভাবে নিয়েছিলেন কি না জানা নেই। তবে হোসে মোলিনা প্রথম একাদশে রাখেননি দিমিত্রি পেত্রাতোস, মনবীর সিংহ এবং জেসন কামিংসকে। সামনে সুহেল ভাটের সঙ্গে রেখেছিলেন গ্রেগ স্টুয়ার্টকে। ছিলেন দীপেন্দু বিশ্বাসও। ৩-৪-৩ ছকে নেমেছিল মোহনবাগান। শুরু থেকে পঞ্জাবের ফুটবলারদের নিজেদের অর্ধে টেনে আনার চেষ্টা করছিল মোহনবাগান। লক্ষ্য ছিল প্রতি আক্রমণে গোল করার।
সেই কৌশল কাজে লাগেনি। পঞ্জাবের রক্ষণ যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। ১০ মিনিটের মাথায় স্টুয়ার্টের ফ্রিকিক থেকে আলবের্তো রদ্রিগেসের হেড বাইরে যায়। মোহনবাগান চেষ্টা করছিল লম্বা বলে খেলার। উইং ধরে আক্রমণের চেষ্টাও চলছিল। তবে খেলার বিপরীতে পেনাল্টি পায় পঞ্জাব। লুকা মাজসেনের পাস পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন বিনীত রাই। তাঁকে ফাউল করেন আলবের্তো। পেনাল্টি থেকে পঞ্জাবকে এগিয়ে দেন লুকা।
গোল শোধের মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে মোহনবাগান। লিস্টন কোলাসোর একটি শট বাইরে যায়। এর পর লিস্টন, সাহালের পা ঘুরে একটি প্রয়াসও ব্যর্থ হয়। বাঁ দিক থেকে লিস্টন ভাল খেলছিলেন। তাঁর জন্যেই প্রথমার্ধে আগে গোল শোধ করে মোহনবাগান। বাঁ দিক থেকে ঢুকে নিখুঁত পাস বাড়িয়েছিলেন স্টুয়ার্টকে। স্টুয়ার্টে গোলমুখী শটে জোর না থাকলেও সুহেলের পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়।
বিরতির পর একসঙ্গে তিন বদল করেন মোলিনা। রক্ষণ জমাট করতে নামান শুভাশিস বসুকে। আক্রমণে নামান কামিংস এবং মনবীরকে। ফল মেলে হাতেনাতে। দ্বিতীয়ার্ধের তিন মিনিটের মধ্যে গোল করেন মনবীর। সাহালের পাস থেকে পঞ্জাবের বক্সে ঢুকে গোলকিপারের ডান দিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধে নামার পর থেকেই পঞ্জাবের এজ়েকিয়েল ভিদাল ভাল খেলছিলেন। তাঁর সৌজন্যেই সমতা ফেরায় পঞ্জাব। ৬৩ মিনিটের মাথায় তিনি ফিলিপকে পাস দেন। বক্সের ঠিক সামনে থেকে জোরালো শটে গোল করেন ফিলিপ।
আট মিনিটের মধ্যে মোহনবাগানের রক্ষণের দোষে এগিয়ে যায় পঞ্জাব। ডান দিক থেকে ফিলিপ বল নিয়ে ঢুকে এসে পাস দেন বাঁ দিকে অরক্ষিত থাকা ভিদালকে। বল রিসিভ করে আশিস রাইকে কাটিয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে গোল করেন ভিদাল।
নাটক তখনও শেষ হয়নি। মোহনবাগান সমতা ফেরায় ৭৯ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে একটি ক্রস দ্বিতীয় পোস্টে হেডে কামিংসের উদ্দেশে নামিয়ে দেন মনবীর। সেই বল বুকে রিসিভ করে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন কামিংস।