পাকিস্তানকে হারিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন সুনীল ছেত্রী। ছবি: পিটিআই
সাফ কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ঝামেলায় জড়িয়েছেন দু’দলের ফুটবলারেরা। লাল কার্ড দেখেছেন ভারতের কোচ ইগর স্তিমাচ। সেই ঝামেলা নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের সহকারী কোচ মহেশ গাউলি। স্তিমাচ লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়ার পরে মহেশই ছিলেন কোচের ভূমিকায়।
মহেশ স্বীকার করে নিয়েছেন যে স্তিমাচের দোষ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘স্তিমাচের ও ভাবে মাথা গরম করা উচিত হয়নি। খেলা আমাদের দখলে ছিল। কোনও দরকার ছিল না ওদের ফুটবলারের সঙ্গে বিবাদে জড়ানোর। স্তিমাচের দোষ ছিল।’’ তবে সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন যে স্তিমাচকে একটু কড়া শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ভারতের সহকারী কোচ বলেন, ‘‘ওকে লাল কার্ড দেখানো উচিত হয়নি। পাকিস্তানের কোচও তো ঝামেলা করেছিল। ওকে হলুদ কার্ড দেখানো হল। স্তিমাচকেও হলুদ কার্ড দেখালে ঠিক হত।’’
খেলার মাঝে অবশ্য কোনও বিতর্কে যেতে চাইছেন না সুনীল ছেত্রী। ভারত অধিনায়ক শুধু খেলার দিকে মন দিতে চাইছেন। ম্যাচ শেষে সুনীল বলেন, ‘‘ম্যাচে গোল না খেলে খুব ভাল লাগে। এই পরিবেশে খেলা সহজ ছিল না। নিজেদের সেরাটা দিয়েছি। এই জয় খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গ্যালারি ভরিয়েছিলেন ভারতীয় সমর্থকেরা। তাঁদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন সুনীল। ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‘সবটাই হয়েছে সমর্থকদের জন্য। এই রকম দর্শকদের সামনে খেলতে ভাল লাগে। একটা আলাদা উত্তেজনা অনুভব করি। এই কারণেই তো আমরা মাঠে খেলতে নামি। এ ভাবে আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’’
সাফ কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফিফা ক্রমতালিকায় প্রায় ১০০ ধাপ পিছিয়ে থাকা পাকিস্তানকে ঘরের মাঠে সারা ক্ষণ চাপে রাখেন সুনীলরা। দুই অর্ধে মোট চারটি গোল দেয় ভারত। সুনীল হ্যাটট্রিক করেন। ভারতের হয়ে আর একটি গোল করেন উদান্তা সিংহ। কিন্তু প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে ঝামেলায় জড়ান দু’দলের ফুটবলারেরা। ভারতের ডাগআউটের সামনে পাকিস্তানের ডিফেন্ডারের সঙ্গে লড়াইতে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান প্রীতম কোটাল। পাকিস্তান থ্রো-ইন পায়। কিন্তু ভারতের কোচ স্তিমাচ আবেদন করতে থাকেন ফাউলের। রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি। পাকিস্তানের আবদুল্লাহ ইকবাল থ্রো করতে যান। ঠিক তার আগে ভারতের কোচ পিছন থেকে তাঁর হাত থেকে বল কেড়ে নেন।
পাকিস্তানের ফুটবলাররা সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একের পর এক ফুটবলার ছুটে আসেন। পাকিস্তানের কয়েক জন ফুটবলার ধাক্কা মারেন স্তিমাচকে। ভারতের ফুটবলাররা এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাকিস্তানের ফুটবলারদের রাগ কিছুতেই থামছিল না। আসরে যোগ দেন পাকিস্তানের কোচও। তিনিও রেগে গিয়ে স্তিমাচকে লক্ষ্য করে কিছু বলতে থাকেন। বেশ কয়েক বার তেড়েও যান।
রেফারি, লাইন্সম্যান এবং দু’দলের কিছু ফুটবলারের মধ্যস্থতায় ঝামেলা থামে। রেফারি ভারতের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী এবং পাকিস্তানের অধিনায়ক হাসান বশিরকে মাঠে ডেকে কিছু কথা বলেন। তার পরেই স্তিমাচকে লাল কার্ড দেখান তিনি। এর ফলে শনিবার নেপালের বিরুদ্ধে ভারতের দ্বিতীয় ম্যাচে ডাগ আউটে থাকতে পারবেন না স্তিমাচ। তাঁর বদলে কোচিং করাবেন মহেশ। পাকিস্তানের কোচকেও হলুদ কার্ড দেখানো হয়। এ ছাড়া হলুদ কার্ড দেখানো হয় ভারতের সন্দেশ জিঙ্ঘন এবং পাকিস্তানের নবিকে।