আইএসএল ট্রফি। —ফাইল চিত্র
আইএসএলে কেরল ব্লাস্টার্স বনাম মুম্বই সিটি ম্যাচের শেষ দিকে বার বার ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন দু’দলের ফুটবলারেরা। সেই সময়েই প্রতিপক্ষ ফুটবলারের হাতে আক্রান্ত হন কেরলের বাঙালি ফুটবলার প্রবীর দাস। চোখের জলে মাঠ ছাড়েন তিনি। পরে প্রবীর মুখ খুললেন মায়ের হেনস্থা নিয়ে। তাঁর অভিযোগ, ম্যাচ হেরে যাওয়ায় নয়, মায়ের হেনস্থার জন্যই কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি।
মুম্বইয়ের মাঠে খেলা চলাকালীন মাঝেমধ্যেই দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে হাতাহাতি হচ্ছিল। দু’দলের এক জন করে ফুটবলারকে লাল কার্ডও দেখান রেফারি। ম্যাচের সংযুক্তি সময়ের খেলা চলাকালীন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ১-২ গোলে পিছিয়ে থাকায় গোল করার মরিয়া চেষ্টা করছিল কেরল। তখন একটি কর্নারের সময় পিছন থেকে হাত দিয়ে প্রবীরের গলা টিপে ধরেন মুম্বইয়ের ফুটবলার রস্টন গ্রিফিথ। এই ঘটনার পরে কেরলের ফুটবলারেরা বার বার রেফারির হস্তক্ষেপের আবেদন করলেও রেফারি কিছু করেননি। ফলে তার পরে একটি ট্যাকলকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি শুরু হয়। কোনও রকমে পরিস্থিতি শান্ত করেন রেফারি। ১-২ গোলে হেরে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় দেখা যায়, কাঁদতে কাঁদতে বার হচ্ছেন প্রবীর।
সেই সময় দেখে মনে হয়েছিল, দল হেরে যাওয়ায় ও তিনি আক্রান্ত হওয়ায় কেঁদে ফেলেছেন প্রবীর। পরে আসল কারণ জানান তিনি। ইনস্টাগ্রামে বাঙালি ফুটবলার লেখেন, ‘‘খেলায় হার-জিত থাকবেই। কিন্তু প্রত্যেকের ক্রীড়াসুলভ মানসিকতা রাখা দরকার। মাঠে মতানৈক্য হতেই পারে। কিন্তু সব কিছুর একটা সীমা থাকা দরকার। আমার মাকে হেনস্থা করা হয়েছে। মায়ের তো কোনও দোষ ছিল না।’’
তাঁর ফুটবলার হয়ে ওঠার নেপথ্যে মায়ের ভূমিকার কথাও লিখেছেন প্রবীর। তিনি লেখেন, ‘‘আমি এমন পরিবেশ থেকে উঠে এসেছি যেখানে প্রতি মুহূর্তে লড়াই করতে হয়। আমার স্বপ্ন পূরণে জন্য মা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। সেই সব ত্যাগ আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না। তাই আমি হেরে যাওয়ায় কাঁদিনি। মায়ের অসম্মান হওয়ায় কেঁদেছি।’’
অবশ্য সেই সঙ্গে প্রবীর জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর কান্নাকে কেউ যেন তাঁর দুর্বলতা না ভাবে। তিনি লেখেন, ‘‘আমি দুর্বল নই। কোনও দুর্বলতা থেকে কাঁদিনি। মায়ের প্রতি ভালবাসা আমার চোখে জল এনে দিয়েছিল। মাঠে যা হল তাতে অনেকের প্রতি আমার সম্মান নষ্ট হয়ে গেল।’’ কে বা কারা তাঁর মাকে হেনস্থা করেছেন তাঁদের নাম বলেননি প্রবীর। তবে তাঁর কথা থেকে স্পষ্ট যে মুম্বই ম্যাচে এমন কিছু হয়েছে, যা মেনে নিতে পারেননি বাঙালি ফুটবলার।