কল্যাণ চৌবে। ছবি ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব।
দুই প্রধানের প্রাক্তন গোলরক্ষক কল্যাণ চৌবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই থেকে নতুন এআইএফএফ (অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন) প্রেসিডেন্ট হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। বুধবার নয়াদিল্লির সভায় কার্যত নির্বাচনের আগে নির্বাচন হয়েই গেল। যেখানে কল্যাণের প্রার্থীপদ নিয়ে কেউ আপত্তিটুকুও তোলার লক্ষণ দেখাননি। বরং একপেশে ভাবে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য সমর্থন ছিল তাঁর দিকেই।
আজ, বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হচ্ছে। বাংলার প্রাক্তন গোলরক্ষক এবং বিজেপি পার্টি সদস্য কল্যাণ ফের প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন জমা দেবেন। এই মুহূর্তে এতটাই কল্যাণের দিকে হাওয়া যে, তিনি ছাড়া সর্বোচ্চ পদের জন্য আর কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আশা করছে না কেউ। ভাইচুং ভুটিয়া যতই জনতার দরবারে অনেক বড় নাম হোন, এই মুহূর্তে নির্বাচন লড়ার ‘ঝুঁকি’ নিলে অবাকই হতে হবে। ওয়াকিবহাল মহলের তেমনই ধারণা। কল্যাণের সমর্থনে যে বিভিন্ন রাজ্য সংস্থাতেও সর্বোচ্চ রাজনৈতিক স্তর থেকে ফোন গিয়েছে, তা কারও অজানা নয়। শাসক পার্টির ‘বার্তার’ বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচনী দামামা বাজানোর চেষ্টা কেউ করতে পারেন, এমন সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ।
দেশের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য সব চেয়ে ভাল খবর যদিও এটাই যে, দ্রুতই সম্ভবত নির্বাসনদণ্ড তুলে নিচ্ছে ফিফা। ইতিমধ্যেই এআইএফএফের কার্যকরী সাধারণ সচিব সুনন্দ ধর ফিফাকে চিঠি লিখে নির্বাসন তোলার আর্জি জানিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ)-কে। অর্থাৎ, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ আর নেই সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে। যে কারণে নির্বাসনের সাজা দিয়েছিল ফিফা। এখন নির্বাচনও করা হচ্ছে ফিফা গঠনতন্ত্র মেনে। নির্বাচনের দিনক্ষণও ঘোষিত, ২ সেপ্টেম্বর। বুধবার দিল্লির সভাতেও এসে পৌঁছেছে এই ইঙ্গিত। সেখানেও বলাবলি হল, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যেই ফিফা নির্বাসন উঠে যাওয়ার ঘোষণা এসে যেতে পারে। বুধবার রাজধানীতে হওয়া সভার পরে তো আরওই হাওয়া কল্যাণের পক্ষে বইছে। প্রত্যাশা মতোই এবং বুধবারের আনন্দবাজারে করা পূর্বাভাস মতোই কল্যাণের ডাকা বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হাজিরা ছিল। কিন্তু উপস্থিতির সংখ্যা ছাপিয়ে গেল প্রত্যাশাকেও। রাতের দিকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, তিরিশের কাছাকাছি উপস্থিতি ছিল রাজধানীর পাঁচতারা হোটেলে সন্ধ্যায় শুরু হওয়া বৈঠকে। সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, ফিফার নিয়ম মেনে ৩৬টিরাজ্য সংস্থাই শুধু ভোটাধিকার পাবে। প্রাক্তন ফুটবলারদের ভোটাধিকার থাকবে না। এই ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে কাশ্মীর এবং লাদাখ নিয়ে জটিলতা রয়েছে। নির্বাচনী অফিসার খুব সম্ভবত এই দুই সংস্থাকে নির্বাচনের বাইরে রাখছেন। তার মানে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে ৩৪। তার মধ্যে ৩০টি সংস্থা হাজির থাকা মানে নির্বাচন নিয়ে শেষ বাঁশি প্রায় বেজেই গিয়েছে।বুধবার রাতে বৈঠকের পরে প্রভাবশালী কয়েক জনকে ফোন করে জানা গেল, এই ম্যাচ আর এক্সট্রা টাইম পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভাবনা তাঁরা দেখছেন না।
তবে বিজেপি হাইকম্যান্ডের সমর্থনপুষ্ঠ কল্যাণকে নিয়ে দ্বিমত তৈরি না হলেও অন্যান্য পদের জন্য বেশ সময় ব্যয় হয়েছে বৈঠকে। যে কারণে কোষাধ্যক্ষ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ঠিক করা নিয়েই চার ঘণ্টার উপর চলে আলোচনা। এগজ়িকিউটিভ কমিটি নিয়েও জোরালো আলোচনা হয়। তবে শোনা যাচ্ছে, আইএফএ প্রেসিডেন্ট অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বুধবার রাজধানীর বৈঠকে হাজির ছিলেন, তিনি স্থান পাচ্ছেনএগজ়িকিউটিভ কমিটিতে।