দ্বিতীয় পর্বেও তাঁদের ফুটবল দর্শনে যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না, তা সাফ জানিয়েছেন সবুজ-মেরুন কোচ। ছবি: টুইটার
সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হায়দরাবাদে গিয়ে গোলশূন্য ড্র করেছে এটিকে মোহনবাগান। সোমবার দ্বিতীয় পর্বের খেলা ঘরের মাঠে। গত মরশুমে সেমিফাইনালে হারের বদলা নিয়ে নিজেদের সমর্থকদের সামনে জিতে ফাইনালে ওঠার সুযোগ মোহনবাগানের সামনে। সোমবার ৯০ মিনিটেই সেই কাজ সেরে ফেলতে চান সবুজ-মেরুন কোচ জুয়ান ফেরান্দো। গত দশ দিনে তিনটি কঠিন ম্যাচ খেলতে হয়েছে তাঁদের। প্রস্তুতির সুযোগ খুব কমই পেয়েছেন। দ্বিতীয় পর্বের আগেও মাত্র দু’দিনের প্রস্তুতি হয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই কিছুটা হলেও চিন্তিত কোচ।
সোমবার আবারও একটি ‘ফাইনাল’ তাঁদের সামনে। সাংবাদিক বৈঠকে রবিবার বলেছেন ফেরান্দো। তাঁর কথায়, “কালকের ম্যাচটা ফাইনালের মতোই। ৯০ মিনিটের লড়াই। গত বৃহস্পতিবারের চেয়ে এই ম্যাচ অন্য রকম হবে। তবে মানসিকতা ফাইনাল খেলার মতোই থাকবে। জিততেই হবে নির্ধারিত সময়ে।”
দ্বিতীয় পর্বের আগে সূচি নিয়ে কিছুটা বিরক্ত ফেরান্দো। বলেছেন, “গত ম্যাচের আগে হায়দরাবাদ লম্বা বিশ্রাম পেয়েছিল। আমরা পাইনি। তা-ও যথেষ্ট লড়াই করেছিলাম। এ বারও একই রকম পরিস্থিতি। তবু আমার বিশ্বাস, কোনও দলই ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যেতে চাইবে না। আমরা ৯০ মিনিটেই জিতে মাঠ ছাড়তে চাই। যদি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়, তা হলে আমাদের রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়রাও তৈরি থাকবে।”
ফাইনাল ধরে মাঠে নামলেও সেরা দল মাঠে নামাতে পারবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই মোহনবাগানে। আশিক কুরুনিয়ন ও কিয়ান নাসিরির চোট এখনও সারেনি। দু’জনের জন্যেই ম্যাচের আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান ফেরান্দো। বলেছেন, “আশিক ও কিয়ানের জন্য ম্যাচের আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করব। ডাক্তার, ফিজিয়োরা সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছে। দেখা যাক কাল ম্যাচের আগে ওরা কেমন থাকে।” মোহনবাগানের পক্ষে আশার খবর, সুস্থ হয়ে উঠেছেন গ্লেন মার্টিন্স। অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে পুরোদমে অনুশীলন করছেন ব্রেন্ডন হ্যামিলও। তবে রক্ষণে প্রীতম কোটাল এবং স্লাভকো দামিয়ানোভিচের জুটি ফেরান্দো ভাঙতে চান কিনা, সেটা দেখার।
পরিস্থিতি যা-ই হোক, ফুটবল দর্শনে যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না, তা সাফ জানিয়েছেন সবুজ-মেরুন কোচ। বলেছেন, “জিততে হলে আক্রমণ করতেই হবে। মাঝে মাঝে প্রতিপক্ষ সেকেন্ড বলে বা ট্রানজ়িশনে এগিয়ে থাকতে পারে। তখন আমরা রক্ষণে জোর দেব। কিন্তু জায়গা তৈরি করা, তা কাজে লাগানো, বল নিয়ন্ত্রণে রাখা, আক্রমণে ওঠা— এ সব একই রকম থাকবে। ৯০ মিনিটই আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।”
চলতি মরশুমে এত চড়াই-উতরাইয়ের পরেও দল ফাইনালের দোরগোড়ায়। ফেরান্দোর কাছে এটাই অনুপ্রেরণা। বলেছেন, “এই মরশুমে আমরা অনেক খারাপ সময় কাটিয়েছি। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে ছেড়ে দিতে হয়েছে। তা সত্ত্বেও একই রকম ভাবে এগিয়েছি। দুঃসময়েও নিজেদের ভাবনাগুলো ঠিক ছিল। এখন আমরা ফাইনালের সামনে ঠিকই। কিন্তু যত বার খারাপ সময় এসেছে এবং তা কাটিয়ে ওঠার জন্য দলের ছেলেরা যে মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে, তা আমার কাছে এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
শুধু ফাইনালে ওঠাই নয়, মোহনবাগানের আসল লক্ষ্য ট্রফি। ফেরান্দো বলেছেন, “আমাদের ট্রফিটা জেতাই প্রধান লক্ষ্য। গত দু’বারে যেটা করতে পারিনি। আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ওটাই। গত বার আমরা প্রথম সেমিফাইনালেই ৩-১ হেরে যাই। পরে ১-০ জিতেও ছিটকে যাই। এ বার ঘরের মাঠে বেশ কয়েকটা ম্যাচে ভাল খেলেছি। আশা করি, সোমবারও জিতব।”