বেঙ্গালুরু গেলেন হীরা। ফাইল ছবি।
দল ভাল খেলতে পারেনি। কিন্তু গত আইএসএলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে সাড়া জাগিয়েছিলেন। হুগলির বৈদ্যবাটির হীরা মণ্ডলের লক্ষ্য, আরও উন্নতি এবং জাতীয় দলে সুযোগ করে নেওয়া। সেই কারণে হীরা এ বার ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে বেঙ্গালুরু এফসি-তে। এই ডিফেন্ডার জানালেন, ইস্টবেঙ্গল তাঁর হৃদয়েই থাকবে।
আইএসএলের সরকারি ওয়েব সাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হীরা জানালেন, ‘‘বেঙ্গালুরু এফসি বড় দল। দেশে গত দশ বছরে ওদের মতো সাফল্য আর কোনও দল পায়নি। ভারতীয় দলের অনেকেই এখানে খেলে। আমাকেও সেই লক্ষ্যের দিকে এগোতে হবে। সে জন্য প্রতিদিন নিজেকে উন্নত করে তুলতে হবে। এখানকার সুযোগ-সুবিধা ও পরিকাঠামো খুবই উন্নত। সেজন্যই এই ক্লাবকেই বেছে নিলাম। আমার গত বারের পারফরম্যান্সকে ছাপিয়ে যাওয়াই এ বার লক্ষ্য। গত বার যদি পাঁচ পেয়ে থাকি, এ বার সাত নম্বর পেতেই হবে। নিজের যাবতীয় প্রতিভা, দক্ষতা উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করব, যাতে কোচ, সতীর্থ, কর্তা, সমর্থকেরা সবাই আমাকে নিয়ে গর্বিত হতে পারে।’’
ইস্টবেঙ্গল ছাড়া নিয়ে হীরার বক্তব্য, ‘‘সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটেই সহজ ছিল না। ওরাও বড় ক্লাব। প্রচুর সমর্থক রয়েছে। বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অনেক ভাবতে হয়েছে আমাকে। ইস্টবেঙ্গলের জায়গা আমার হৃদয়েই থাকবে। সবাই যে ভাবে আমাকে সমর্থন করেছেন, তা অনবদ্য। এই ভালবাসা কখনও ভুলতে পারব না।’’
বেঙ্গালুরুতে হীরা পাশে পাবেন সুনীল ছেত্রীকে। থাকবেন তাঁর মতোই আর এক বঙ্গসন্তান প্রবীর দাস। সুনীলের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাওয়া নিয়ে হীরা বলেন, ‘‘ভারতের যে কোনও ফুটবলারই এই স্বপ্ন দেখে। আমিও দেখি। ওর সঙ্গে একই সাজঘরে থাকতে পারাটা আমার কাছে বিরাট সৌভাগ্যের। এতদিন ধরে খেলছে, এত অভিজ্ঞতা, এত গোল। অনেক কিছু শেখার আছে ছেত্রীভাইয়ের কাছ থেকে। ওর সঙ্গে কবে অনুশীলন শুরু করব, সেই অপেক্ষায় রয়েছি। মাঠের বাইরেও যথেষ্ট শৃঙ্খলাপরায়ণ। সব কাজেই নিয়ম মেনে চলে। এগুলো শিখতে হবে। সেই সুযোগ পাওয়ায় আমি ভাগ্যবান।’’
ইস্টবেঙ্গলের সিনিয়রদের থেকেও এই সাহায্যটা পেয়েছিলেন জানিয়ে হীরা বলেন, ‘‘গত বছরও দলের সিনিয়ররা খুব সাহায্য করেছিল। অরিন্দমদা (ভট্টাচার্য), রাজুভাই (গায়কোয়াড়), বলবন্তভাই (সিং), বিকাশদা (জায়রু) আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়েছে। কোচও সঠিক রাস্তা দেখিয়েছিলেন। ওদের সাহায্য নিয়েই উন্নতি করেছি।’’
এ বার সতীর্থ হিসাবে পাবেন প্রবীরকে। বেঙ্গালুরুর জার্সি গায়ে নামার আগে সেটাও বাড়তি উৎসাহিত করছে হীরাকে। বলেন, ‘‘আমরা দু’জনেই বাংলার। তাই পরস্পরকে খুব ভাল জানি। অনেক দিন ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলছে প্রবীরদা। ওরও অনেক অভিজ্ঞতা। আশা করি আমাদের বোঝাপড়া আরও ভাল হবে।’’
এই বছর থেকে ম্যাচের সংখ্যা বাড়ছে। দীর্ঘ ফুটবল মরসুম নিয়ে হীরার চিন্তা তো নেই, বরং তিনি খুশি। তাঁর মতে, ‘‘ফুটবলারদের পক্ষে লম্বা মরশুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আরও বেশি ম্যাচ খেলতে পারব আমরা। কোচেরা যে পরিকল্পনাগুলি তৈরি করেন, তা কার্যকর করার জন্যও বেশি সুযোগ পাবেন তাঁরা। সবার জন্যই এই সিদ্ধান্তটা খুবই ভাল।’’