জুটি: টোকিয়োয় প্রাক-মরসুম প্রস্তুতি নেওয়ার ফাঁকে ফুরফুরে মেজাজে মেসি ও নেমার। ছবি পিটিআই।
গত মরসুমে বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সাঁ জারমাঁয় যোগ দিলেও তাঁর স্বপ্নের ফুটবল দেখা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে প্যারিসের ফুটবলপ্রেমীদের। নতুন মরসুম শুরুর আগে লিয়োনেল মেসি জানিয়ে দিলেন, এই বছরে তিনি পিএসজি সমর্থকদের যাবতীয় ইচ্ছাপূর্ণ করে দেবেন। সে ভাবেই তৈরি করেছেন নিজেকে।
প্রাক মরসুম সফরে জাপানে এসেছে পিএসজি। দলের তিন তারকা মেসি, কিলিয়ান এমবাপে এবং নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রকে নিয়েই সব চেয়ে বেশি আগ্রহ জাপানের মানুষদের। সাংবাদিক বৈঠকে মেসি বলেছেন, “নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু সময় লেগে যায়। তাই পিএসজির জার্সিতে প্রথম মরসুম তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না আমার কাছে। কিন্তু এখন প্যারিসের আবহাওয়ার সঙ্গে অনেকটাই পরিচিত হয়ে গিয়েছি। সঙ্গে নেমার এবং এমবাপের মতো দুই দুর্দান্ত তারকা রয়েছে। ফলে আমি নিজেকে পুরনো ছন্দে ফিরিয়ে আনতে পারব বলেই আশা করি।” যোগ করেছেন, “আমি খুব ভাল করেই জানি, জাপানের মানুষ ফুটবল নিয়ে কতটা আবেগপ্রবণ। ফলে তাঁরা যেমন দু’হাত উজাড় করে ভালবাসা দিতে পারেন, তেমনই খারাপ খেললে তার জবাব দিতেও সময় নষ্টস করেন না। আমরা সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে জাপান সফর শেষ করতে চাই।”
নিজের ফুটবল দর্শন নিয়ে প্রশ্ন উড়ে আসে মেসির দিকে। জবাবে আর্জেন্টিনীয় তারকা বলেছেন, “আমি এই খেলাটাকে ছোটবেলা থেকে ভালবেসে এসেছি। ফুটবল ছাড়া এখনো কিছু ভাবতেই পারি না। তাকে আঁকড়ে ধরেই সকলকে আনন্দ দিতে চাই।” যোগ করেছেন, “নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ফুটবলকে প্রত্যেক মুহূর্তে উপভোগ করতে হবে। জীবনে সেরা হতে গেলে কঠোরতম অনুশীলনে ডুবিয়ে দিতে হবে নিজেকে। মাঠে নেনে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। তারই সঙ্গে দলের প্রতি দায়বদ্ধ এবং সতীর্থদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। আমি সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েই নিজেকে এই উচ্চতায় নিয়ে এসেছি। তবে আমার কাজ এখনও শেষ হয়নি।”
আসন্ন কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে স্পেনের সঙ্গে খেলবে জাপান। মেসি মনে করেন, সেই ম্যাচে লুইস এনরিকের দলকে চাপে থাকতে হবে। তিনি বলেছেন, “আন্তর্জাতিক ফুটবলে জাপান নিজেকে শক্তিধর হিসেবে প্রমাণ করে ফেলেছে। ফলে ওরা বিশ্বকাপেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে চাইবে। আমার মনে হচ্ছে, কাতারে জাপানের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে স্পেনকে।”
প্রাক্তন আর্জেন্টিনীয় স্ট্রাইকার সের্খিয়ো আগুয়েরো জানালেন, বার্সেলোনা যখন ঘোষণা করে যে লিয়োনেল মেসি ক্লাব ছাড়ছেন, তখন তাঁর মনে হয়েছিল নিশ্চয়ই স্পেনের ক্লাবের প্রচার মাধ্যম হ্যাক করে রসিকতা করা হয়েছে।খবর আদৌ সত্য নয়!
ক্যাম্প ন্যুর ক্লাবের হয়ে মেসি খেলেছেন মোট ৫২০টি ম্যাচ। ২০২১ সালে ক্লাব ছাড়ার সময় তাঁদের নামের পাশে লেখা ছিল ৪৭৪ গোল! ম্যাঞ্চেস্টার সিটির প্রাক্তন স্ট্রাইকার আগুয়েরো অল্প কিছুদিন বার্সায় খেলেছেন। কিন্তু হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি ফুটবল থেকে অবসর নেন। ঘটনাচক্রে মেসি ক্যাম্প ন্যুতে এসেছিলেন জাতীয় দলের কিংবদন্তি সতীর্থর সঙ্গে এক ক্লাবের জার্সি পরে খেলতে। কিন্তু নাটকীয় আবহে মেসিকে কার্যত বাধ্য হয়ে বার্সা ছেড়ে প্যারিস সাঁ জারমাঁয় যোগ দিতে হয়।
আগুয়েরো নতুন ক্লাবে সই করার ঠিক এক মাস পরেই এই ঘটনা ঘটে। এক টিভি চ্যানেলে দিয়েগো মারাদোনার প্রাক্তন জামাই বলেছেন, ‘‘মেসি থাকছে না প্রথম বার বার্সেলোনা ঘোষণা করার পরে ভেবেছিলাম, নিশ্চয়ই কেউ ক্লাবের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক হ্যাক করেছে। ভেবেছিলাম, এটা নিছকই ঠাট্টা।’’