তেহরানের একটি নামী ফুটবল ক্লাবের প্রাক্তন এবং বর্তমান ফুটবলারদের শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফাইল ছবি
বর্ষবরণের উদ্যাপনে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। গিয়েছিলেন একটি পার্টিতে উচ্ছ্বাস করতে। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হল ইরানের জাতীয় দলের কয়েক জন ফুটবলারকে। শনিবার রাতে তাদের গ্রেফতার করেছে তেহরানের পুলিশ। কারওরি পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে আশঙ্কা, বিশ্বকাপে খেলা ফুটবলারও গ্রেফতারের তালিকায় রয়েছেন।
ইরানের এক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, তেহরানের একটি নামী ফুটবল ক্লাবের প্রাক্তন এবং বর্তমান ফুটবলারদের শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। দামাভান্দ শহরের একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। এঁদের মধ্যে অনেকেই মদ্যপান করায় স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না।
ইরানের আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র যাঁরা অ-মুসলিম তাঁরাই মদ্যপান করতে পারেন। সেটাও হতে হবে শুধু ধর্মীয় কারণেই। কিন্তু যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা অনেকে মুসলিম ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, কোনও পার্টিতে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে নাচগান করার অধিকার নেই ইরানে। এই ফুটবলাররা সেই কাজও করেছেন বলে সূত্রের খবর।
বিশ্বকাপের সময়ে ইরানে মহিলাদের উপর হয়ে চলা অত্যাচারের প্রতিবাদ দেখিয়েছিলেন সে দেশের ফুটবলাররা। প্রথম ম্যাচে তাঁরা জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে গলা মেলাননি। তার প্রতিবাদ জানিয়ে দেশের সরকার কড়া শাস্তির হুমকি দিয়ে রেখেছিল। পরে জানা যায়, ফুটবলার আমির নাসের-আজাদানি এবং আরও দুই ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হতে পারে। সেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছে এমন কোনও খবর এখনও পর্যন্ত নেই।
তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ ইরানে এখনও দেশজুড়ে হিজাব-বিরোধী প্রতিবাদ চলছে। সে রকমই একটি প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন আমির। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে ইরানের সেনাবাহিনীর কলোনেল এস্মায়েল চেরাঘি এবং আরও দুই সেনার মৃত্যু হয়। সেই মৃত্যুর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে আমিরকে। সেই প্রতিবাদে আমিরের উপস্থিত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্লোগান দেওয়া ছাড়া আমির আর কোনও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেনাবাহিনীর তিন কর্মীর মৃত্যুর সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই।
ইরানের সরকার অবশ্য সে সব শুনতে রাজিই নয়। তারা আমিরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ফিফপ্রো টুইট করেছে, “মহিলাদের অধিকার এবং স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানোর অপরাধে পেশাদার ফুটবলার আমির নাসের-আজদানি ইরানে মৃত্যুদণ্ডের সামনে দাঁড়িয়ে, এটা জানতে পেরে আমরা প্রচণ্ড অবাক। আমরা আমিরের পাশে রয়েছি এবং তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”