বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারের সময় এ ভাবেই অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। ছবি: রয়টার্স
এ বারের বিশ্বকাপে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছেন। আবার সব থেকে বিতর্কিত গোলরক্ষকও তিনিই। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন। ফাইনালও তার ব্যতিক্রম নয়। টাইব্রেকার জিততে নানা রকমের কর্মকাণ্ড করলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক কমছে না।
বিশ্বকাপ ফাইনালের টাইব্রেকারের সময় ক্যামেরায় মার্তিনেসের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ধরা পড়েছে। বিপক্ষ ফুটবলারদের মনোযোগ নষ্ট করার সব রকমের চেষ্টা করেছেন বিশ্বকাপের সোনার গ্লাভসের মালিক।
টাইব্রেকার শুরু হওয়ার আগে টস হয়। তার পরেই গোলের দিকে ছুটে যান মার্তিনেস। তার পরে ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিসকে সেখানে অভ্যর্থনা জানান তিনি। ভাবখানা এমন, যেন সেটা তাঁর বাড়ি। সেখানে লরিস অতিথি। বিপক্ষ গোলরক্ষকের উপর চাপ তৈরি করেন।
টাইব্রেকার শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় মার্তিনেসের আরও অনেক রূপ। কিলিয়ান এমবাপে পেনাল্টি নিতে যাওয়ার সময় তিনি রেফারির কাছে বার বার অভিযোগ করতে থাকেন, বল ঠিক জায়গায় বসানো হয়েছে কি না তা দেখার। প্রথম বার রেফারি পাত্তা না দিলেও কোম্যানের পেনাল্টির আগেও মার্তিনেস একই অভিযোগ করায় রেফারি দেখতে যান ঠিক জায়গায় বল বসানো হয়েছে কি না।
ঠিক তখনই কোম্যানের কাছে ছুটে আসেন মার্তিনেস। তাঁর মুখের সামনে গিয়ে নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। তাতে কিছুটা হলেও মনোযোগ নষ্ট হয় কোম্যানের। তাঁর নেওয়া শট বাঁচিয়ে দেন মার্তিনেস।
চুয়ামেনি ফ্রান্সের হয়ে তৃতীয় পেনাল্টি নেওয়ার সময় অন্য কাণ্ড ঘটান মার্তিনেস। তিনি বল নিয়ে গোলের পিছনে থাকা আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাছে চলে যান। তাঁদের চিৎকার করতে বলেন। তার পরে চুয়ামেনিকে বল না দিয়ে অন্য দিকে ছুড়ে দেন। বাধ্য হয়ে চুয়ামেনিকে বল আনতে হয়। এই সব ঘটনায় তাঁরও মনোযোগ নষ্ট হয়। বাইরে মারেন তিনি। চুয়ামেনি পেনাল্টি নষ্টের পরে ‘অশ্লীল’ অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায় মার্তিনেসকে। সঙ্গে অনেক কিছু বলছিলেন তিনি।
মার্তিনেসের মাথায় ছিল, যে লরিসও তাঁর মতো কিছু করতে পারেন। তাই চুয়ামেনির পেনাল্টির পরে তিনি বল নিয়ে সরাসরি ছুটে যান লিয়োনার্দো পারেদেসের কাছে। আর্জেন্টিনার কাছে পরবর্তী পেনাল্টি নিতে যাচ্ছিলেন পারেদেস। তাঁকে গিয়ে বল দিয়ে দেন মার্তিনেস। যাতে ঠান্ডা মাথায় তিনি পেনাল্টি নিতে পারেন।
ফ্রান্সের হয়ে শেষ পেনাল্টি নিতে আসেন কোলো মুয়ানি। তাঁর কাছে এসেও অনেক কিছু বলেন মার্তিনেস। রেফারি বাধ্য হয়ে তাঁকে ঠেলে গোলপোস্টে নিয়ে যান। মার্তিনেসকে হলুদ কার্ডও দেখানো হয়। তাতে অবশ্য ভ্রুক্ষেপ করেননি তিনি। কোলো মুয়ানি গোল করলেও পরের পেনাল্টি থেকে মন্টিয়েল গোল করায় বিশ্বকাপ জিতে যায় আর্জেন্টিনা।