বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের জন্য ফ্রান্সের তিন ফুটবলারকে দায়ী করছেন ফুটবলপ্রেমীদের একাংশ। ছবি: টুইটার।
বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও দেশে ফিরে নায়কের সম্মান পেয়েছেন ফ্রান্সের ফুটবলাররা। তাঁদের পাশে রয়েছেন কোচ দিদিয়ের দেশঁ। উৎসাহ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। তবু কিলিয়ন এমবাপের তিন সতীর্থকে তীব্র হেনস্থা হতে হচ্ছে।
কিংগসলে কোমান, অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি এবং কোলো মুয়ানিকে দেশের ফেরার পর বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয়েছে। সমাজমাধ্যমে তাঁদের সম্পর্কে নানা রকম কুমন্তব্য করছেন ফুটবলপ্রেমীদের একাংশ। ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের জন্য এই তিন ফুটবলারকেই দায়ী করছেন ওই ফুটবলপ্রেমীরা।
মুয়ানি ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। কোমান এবং চুয়ামেনি দু’জনেই পেনাল্টি নষ্ট করেন। তাই ফুটবলপ্রেমীদের একাংশ তাঁদের উপর ক্ষুব্ধ। সমাজমাধ্যমে এই তিন ফুটবলার সম্পর্কে নানা রকম বিরূপ মন্তব্য করা হচ্ছে। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার জন্য কোনাম, চুয়ামেনি এবং মুয়ানিকেই খলনায়ক বেছে নিয়েছেন তাঁরা। নানা বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করা হচ্ছে তাঁদের সম্পর্কে। সমর্থকদের একাংশ ক্ষুব্ধ হলেও দলের সকলেই এই তিন ফুটবলারের পাশে রয়েছেন। পাশে রয়েছেন কোচ দেশঁও। রিয়াল মাদ্রিদ পাশে দাঁড়িয়েছে চুয়ামেনি। কোমানের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছে তাঁর ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখও।
তিন ফুটবলারের পাশে দাঁড়িয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষও। সমস্ত রকম অপমানজনক বা বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য মুছে দেওয়া হচ্ছে। এমন ধরনের বিষয় বরদাস্ত করা হবে না বলে জানানো হয়েছে সংস্থার পক্ষ থেকে। বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘কোনও রকম বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য আমরা সমর্থন করি না। সমস্ত আপত্তিকর মন্তব্য মুছে দেওয়া হচ্ছে।’’ ফ্রান্সের প্রশাসনও নজর রাখছে সমাজমাধ্যমের উপর। এমন ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। গত ইউরো কাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড হারার পর মার্কাস রাশফোর্ড, জাডন স্যাঞ্চো এবং বুকায়ো সাকাকেও আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছিলেন ফুটবল সমর্থকদের একাংশ।
বিশ্বকাপ ফাইনালে একাধিক বার পিছিয়ে পড়ার পরেও এমবাপে দু’বার দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন। পর পর দু’বার বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ ছিল তাঁদের সামনে। অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন মুয়ানি। গোলটি হলে ফাইনালের ফলাফল অন্যরকম হতেও পারত। কাছাকাছি পৌঁছেও বিশ্বকাপ দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেনি দেশঁর দল।
কাতার থেকে এমবাপেরা দেশে ফেরার পর বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন বিমানবন্দরে। তাঁদের নায়কের সম্মান দেওয়া হয়। বিশ্বকাপে এমবাপেদের পারফরম্যান্সে ফ্রান্সের সাধারণ ফুটবলপ্রেমীরা গর্বিত হলেও একাংশের আচরণ নষ্ট করছে আবহ। উল্লেখ্য, ফাইনালে ফ্রান্সের হারের পরও এক দল সমর্থক অশান্তি তৈরির চেষ্টা করেছিল।