এ বারের বিশ্বকাপে প্রায় ১৫০ জন ফুটবলার খেলছেন অন্য দেশের হয়ে। সব থেকে বেশি ৩৭ জন ফুটবলার ফ্রান্সের। ছবি: টুইটার।
কাতার বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ৩২টি দেশ। প্রতি দলে রয়েছেন ২৬ জন করে ফুটবলার। সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৮৩২ জন ফুটবলার এ বারের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেতে পারেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১৫০ জন ফুটবলার নিজেদের মাতৃভূমি বা জন্মভূমির হয়ে খেলছেন না।
বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী মাত্র চারটি দলে কোনও অন্য দেশে জন্মগ্রহণ করা বা অন্য দেশ থেকে আসা ফুটবলার নেই। সেই দেশগুলি হল আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সৌদি আরব। গত বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের ১২ জন ফুটবলারেরই জন্ম অন্য দেশে অথবা তাঁদের শিকড় অন্য দেশে। অতীতে বিভিন্ন কারণে তাঁরা বা তাঁদের পরিবার জন্মভূমি ছেড়ে চলে এসেছিলেন ফ্রান্সে। যেমন এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গা। রিয়েল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডারের জন্ম অ্যাঙ্গোলার কাবিন্দা অঞ্চলের এক শরণার্থী শিবিরে। কাবিন্দার সঙ্গে অ্যাঙ্গোলার বাকি ভূখণ্ডের সরাসরি যোগাযোগ নেই। মাঝে রয়েছে কঙ্গোর শরু ভূখণ্ড। আলাদা দেশের দাবিতে ২৭ বছর বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চালায় কাবিন্দা। সেই সময়ই জন্ম এডুয়ার্ডোর। দু’বছরের এডুয়ার্ডোকে নিয়ে তাঁর বাবা-মা আশ্রয় নিয়েছিলেন ফ্রান্সে। পরে তাঁরা ইউরোপের দেশটির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এডুয়ার্ডোর মতোই ফ্রান্সের মোট ১২ ফুটবলারের জন্ম আফ্রিকার কোনও দেশে। ফ্রান্সের অন্যতম ভরসা কিলিয়ন এমবাপের জন্ম ফ্রান্সে হলেও তাঁর বাবা আলজ়েরিয়ান এবং মা ক্যামেরুনের। ফ্রান্স দলের বৈচিত্র সব থেকে বেশি এ ব্যাপারে।
ফ্রান্সে জন্ম এক ফুটবলার আবার রয়েছেন জার্মানির দলে। আদতে জার্মান এক ফুটবলার বিশ্বকাপ খেলবেন ওয়েলসের হয়ে। আফ্রিকান বংশোদ্ভূত একাধিক ফুটবলার রয়েছেন ইংল্যান্ড দলেও। ফ্রান্সে জন্ম এমন ফুটবলারের সংখ্যা এ বারের বিশ্বকাপে ৩৭ জন। তিউনিসিয়া দলের ১০ ফুটবলারের জন্ম ফ্রান্সে। সেনেগালের নয় ফুটবলার জন্মগ্রহণ করেছেন ফ্রান্সে। ক্যামেরুন দলেও রয়েছেন ফ্রান্সে জন্ম নেওয়া আট জন ফুটবলার। পর্তুগাল, কাতার দলেও রয়েছেন এক জন করে ফ্রান্সে জন্ম নেওয়া ফুটবলার।
ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, ২১ বছর বয়স হওয়ার আগে কোনও ফুটবলার নিজের দেশের হয়ে তিনটির কম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেললে, তিনি অন্য কোনও দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পেতে পারেন পরবর্তী সময়। এই নিয়মের সুযোগ নিয়ে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে জন্ম হওয়া ৫০ জনের বেশি ফুটবলার এ বার খেলবেন অন্য ১১টি দেশের জার্সি গায়ে। জার্মানির হয়ে খেলতে দেখা যাবে আট জন আফ্রিকাজাত ফুটবলারকে। নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়ার একাধিক ফুটবলারের জন্মও আফ্রিকার কোনও না কোনও দেশে।