স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথম বার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে মরক্কো। ছবি: টুইটার।
কাতার বিশ্বকাপে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছেন মরক্কোর বাসিন্দা ডেরুইচ ফাখেরদ্দিন। স্পেন-মরক্কোর দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে স্টেডিয়ামে নিয়োগ করা হয়েছিল তাঁকে। দায়িত্ব ছিল দর্শকদের দিকে নজর রাখা। তাই ইচ্ছা থাকলেও নিজের দেশের খেলা দেখতে পাননি তিনি। যদিও মরক্কো হারিয়ে দেওয়ার পর আবেগ বশ মানেনি তাঁর।
মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন ফাখেরদ্দিন। ইচ্ছা করলেই খেলা দেখতে পারতেন। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিল না তাঁর। কারণ, গ্যালারির দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। মাঠের দিকে মুখ করে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল না। গ্যালারিতে বসা দর্শকদের উপর নজর রাখছিলেন তিনি। ফুটবলারদের সুরক্ষার জন্য নিরাপত্তারক্ষীদের গ্যালারির দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাই নিয়ম। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেই দেখা যায় এই দৃশ্য। খেলা দেখার জন্য সব থেকে ভাল জায়গায় থাকলেও খেলা দেখতে পারেন না নিরাপত্তারক্ষীরা।
ফাখেরদ্দিনও নিজের কাজে কোনও রকম অবহেলা করেননি। যতক্ষণ খেলা হয়েছে, ততক্ষণই গ্যালারির দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সুযোগ পেলে দু’এক বার হয়তো পিছন ফিরে মাঠের দিকে তাকিয়েছেন। কিন্তু সে ভাবে তো খেলা দেখা যায় না। তাঁর নিজের দেশ প্রথম বার বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠছে। গ্যালারির দিকে তাকিয়ে থাকায় বুঝতে পারছিলেন দেশের ফুটবলপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা, আবেগ। তবু ঐতিহাসিক আবহের মধ্যে আবেগ সংযত রেখে কর্তব্যে অবিচল ছিলেন ফাখেরদ্দিন। এমনকি টাইব্রেকারের সময়ও মাঠের দিকে তাকাননি
খেলা শেষ হওয়ার পর আর নিজের আবেগ লুকিয়ে রাখতে পারেননি ফাখেরদ্দিন। তাঁর চোখ ভিজেছে জলে। ফুটবল বিশ্বকাপে দেশের ঐতিহাসিক সাফল্যের আনন্দে কেঁদেছেন। সেটাও গ্যালারির দিকে মুখ করেই।
শুধু প্রতিযোগিতার শেষ আটে ওঠাই নয়, মরক্কো প্রথম বার গ্রুপের বাধা অতিক্রম করেছে এ বারের বিশ্বকাপে। সেই অর্থে স্পেনের সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচও ছিল মরক্কোর ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিক। সেই সময় মাঠে থেকেও খেলা দেখেননি ফাখেরদ্দিন। কাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার প্রশংসা করেছেন বহু মানুষ। আবেগ সামলে তাঁর কর্তব্যে অবিচল থাকার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে।