বিশ্বকাপ নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে মেসি। রবিবার রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে। ছবি: টুইটার।
সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনা। তার পর বাকি সব ম্যাচ জিতেছেন লিয়োনেল মেসিরা। প্রতিটি ম্যাচ জেতার পর সাজঘরে ফিরে উৎসব করেছেন তাঁরা। অভ্যাসে পরিণত হওয়া সেই উৎসবেরই নতুন রূপ দেখা গেল রবিবার রাতে।
১৭ বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলা হয়ে গিয়েছে, দেখে কে বলবে! শিশুর মতো লাফাচ্ছিলেন মেসি। বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে সাজঘরে ফেরার আগেই উৎসব শুরু করে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। সেই উৎসব চলল সাজঘরে ফিরেও। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ জেতার পরেই সাজঘরে ফিরে সতীর্থদের নিয়ে উৎসবে মেতেছেন মেসি। প্রতিযোগিতা যত এগিয়েছে মেসিদের উৎসবের রূপ তত খুলেছে। তবু একটা বাঁধন ছিল সেই উৎসবের। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থাকল না সেই বাঁধন।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কে আর কবে বাঁধন বজায় রেখে উৎসবে মেতেছেন? মেসিও বাঁধন উপড়ে ফেললেন। যে ভাবে একের পর এক ম্যাচে প্রতিপক্ষের রক্ষণের জাল উপড়ে ফেলেছেন, সে ভাবেই রবিবার রাতে উচ্ছ্বাসের বাঁধন উপড়ে ফেললেন মেসি। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মাঠে কিছুটা সংযত দেখিয়েছে তাঁকে। উচ্ছ্বাসে মাতলেও তা আগলহীন ছিল না। সাজঘরে আবার ফিরে এলেন কাতারে দেখা অচেনা আগ্রাসী মেসি।
বিশ্বকাপটা কাছছাড়া করতেই চাইছিলেন না আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। প্রতিটা মুহূর্তে তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল, কতটা আকুল ছিলেন এই ট্রফির জন্য। সাজঘরে ফিরে ট্রফি নিয়ে উঠে পড়লেন মাঝখানে রাখা টেবিলে। টেবিলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা ছিল কয়েক বোতল অ্যালকোহলহীন বিয়ার। তার মাঝেই লাফালেন বেশ কিছুক্ষণ। দলের বাকিরা নীচে অধিনায়ককে ঘিরে লাফিয়েই যাচ্ছিলেন। তাঁকে দেখে টেবিলে উঠে পড়েন সতীর্থ লাউতারো মার্টিনেজ়ও।
কিছুক্ষণ নাচার পর টেবিলের মাঝে মেসি নামিয়ে রাখলেন বিশ্বকাপ। তার পর আবার শুরু করলেন নাচ। সঙ্গে উল্লাসের সমবেত চিৎকার। থামতেই চাইছিলেন না মেসি এবং তাঁর সতীর্থরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দলের কোচিং স্টাফ এবং অন্য সহকারীরাও। বিশ্ব জয়ের উৎসব কেউ কেউ বন্দি করলেন মোবাইলের ক্যামেরায়। সবই হচ্ছিল লাফাতে লাফাতে।
প্রতিটি ম্যাচের পর সাজঘরে উৎসব করা নিয়ে ফাইনালের আগে মেসি বলেছিলেন, প্রতি ম্যাচের পর উৎসব পালনটা অভ্যাসে পরিণত করছেন তাঁরা। প্রতিযোগিতার শেষ দিন পর্যন্ত এ ভাবেই উৎসব করতে চান। শেষ দিনও মেসি এবং তাঁর সতীর্থদের উৎসব পালনের অভ্যাস বদল করতে হল না। বরং তাতে আরও রং জুড়ে দিলেন অধিনায়ক মেসিই।