দোহার তাপমাত্রা নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া ফুটবলারদের সতর্ক থাকার পরামর্শ শরীরশিক্ষার অধ্যাপকের। ছবি: টুইটার।
বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না কাতার বিশ্বকাপের। মধ্য প্রাচ্যের এই দেশের একাধিক আইন নিয়ে আপত্তি রয়েছে ইউরোপ এবং আমেরিকার দেশগুলির। কথায় কথায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে কাতারের বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপের আগে এ বার চর্চায় দোহার তাপমাত্রা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, দোহার গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ফুটবলারদের।
কাতারের গরম নিয়ে আগে থেকেই আপত্তি জানিয়েছিল ফুটবল বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলি। তাদের আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বকাপের সময় পরিবর্তন করেছে ফিফা। জুন-জুলাইয়ের বদলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে হচ্ছে বিশ্বকাপ। তবু কাতারের তাপমাত্রা দলগুলির কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া করছে।
এখন দোহার গড় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এই তাপমাত্রায় অনুশীলন করতেই সমস্যায় পড়ছেন ইউরোপের ফুটবলাররা। সূর্যের প্রখর তাপের হাত থেকে বাঁচতে গ্যারেথ বেলের ওয়েলস অনুশীলনের সময় পরিবর্তন করেছে। দুপুরের বদলে সন্ধ্যায় অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। অনুশীলনের সময়ও কমানো হয়েছে ফুটবলারদের সুস্থ রাখতে।
বছরের এই সময় সাধারণত কাতারের তাপমাত্রা থাকে কম। সেই জন্যই বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য এই সময়কে বেছে নিয়েছে ফিফা। কিন্তু এ বার আবহাওয়াও কিছুটা বিরূপ। বেশ গরম এবং আর্দ্র। আবহবিদরা যাকে অস্বাভাবিক বলছেন। ওয়েলসের আক্রমণ ভাগের ফুটবলার মার্ক হ্যারিস বলেছেন, ‘‘হোটেলে এমনি হাঁটাহাঁটি করলেই ঘেমে যাচ্ছি আমরা। সকাল ১১টা নাগাদ কয়েক জন হাঁটতে বেরিয়ে ছিলাম। গরমে ভীষণ কষ্ট হয়েছে আমাদের।’’
দলগুলির চিন্তা বাড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের মতামত। ব্রিটেনের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরবিদ্যার অধ্যাপক মাইক টিপটন বলেছেন, ‘‘এই তাপমাত্রা ফুটবল খেলার জন্য আদর্শ নয়। ৯০ মিনিট দৌড়ে ফুটবল খেলা পরের ব্যাপার, অতিরিক্ত শরীরচর্চাও ক্ষতিকর হতে পারে এই তাপমাত্রায়। শরীরের ক্ষতি হবে। অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। হিট স্ট্রোকও হতে পারে ফুটবলারদের। এই গরমে বেশি অনুশীলন বা শরীরচর্চা না করাই ভাল।’’
খানিকটা আশ্বস্তও করেছেন তিনি। টিপটন বলেছেন, ‘‘ম্যাঞ্চেস্টার বা লিভারপুলে খেলার অভ্যাস থাকলে খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু দক্ষিণ ইউরোপ বা দক্ষিণ আমেরিকায় যাঁরা খেলেন, তাঁদের খেলায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। তাঁদের পক্ষে এক গতিতে ৯০ মিনিট দৌড়নো সম্ভব নয়। যদিও আটটি স্টেডিয়ামেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। সেটা একটা সুবিধার দিক। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ফুটবল খেলার থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে খেলা ভাল।’’ আরও কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, দোহার তাপমাত্রা সমস্যায় ফেলতে পারে বেশ কয়েকটি দেশের ফুটবলারদের। তাই দলগুলিকে যতটা সম্ভব গরম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।