সচিন এবং ভারতীয় ক্রিকেটের খ্যাতনামী সমর্থক সুধীর। ছবি: টুইটার।
পার্সি অভয়শেখর, মহম্মদ বসির বা সুধীর কুমার গৌতমরা ভারতীয় উপমহাদেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। তেমনই সৌদি আরবের বদের তুর্কিস্তানি। গত ২০ বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেশের ফুটবল দলকে সমর্থন করেন তিনি। কাতারেও পৌঁছে গিয়েছেন তুর্কিস্তানি।
অর্থসঙ্কটের মধ্যেও গত দু’দশকে জাতীয় দলের একটিও খেলা বাদ দেননি। দেশের ফুটবল দলের প্রতি ভালবাসা তাঁকেও খ্যাতনামী করে তুলেছে। দিনে দিনে জাতীয় দলের ফুটবলারদের সঙ্গেও তাঁর সখ্যতা গড়ে উঠেছে। সৌদির জাতীয় দলের ফুটবলাররাও জানেন, গ্যালারি এক দম ফাঁকা থাকবে না। এক জন হলেও থাকবেন তুর্কিস্তানি। সৌদির জেড্ডা থেকে আকাশ পথে দোহার দূরত্ব আড়াই ঘণ্টার। বিদেশেও তুর্কিস্তানির তেমন সমস্যা হচ্ছে না। তাঁর মনে হচ্ছে নিজের দেশেই আছেন। কারণ দু’দেশের আবহাওয়া বা সংস্কৃতির মিলও অনেক।
৩৭ বছরের তুর্কিস্তানি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বলেছেন, ‘‘সৌদি আরবের ফুটবলাররা মনে করতেই পারে নিজেদের দেশে খেলছে। এখানে আমাদের দেশের অনেক সমর্থক আছেন। তাই ফুটবলাররা মনে করতেই পারে, ওরা নিজেদের দেশেই খেলছে। একটা সাধারণ সীমান্ত আমাদের আলাদা করে রেখেছে। প্রতি ম্যাচে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ হাজার সমর্থক থাকবেন স্টেডিয়ামে।’’ রাশিয়া বিশ্বকাপে সৌদির মাত্র পাঁচ হাজার সমর্থক গিয়েছিলেন। কাতারের চিত্র ভিন্ন। ৫০ হাজারের বেশি সৌদি নাগরিক কাতারে এসেছেন ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে। দেশের শতাধিক ম্যাচে হাজির থাকা তুর্কিস্তানি কাতারে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদী। বলেছেন, ‘‘এখানে সব কিছুই আমাদের নিজেদের মতো। সৌদি এবং আরব দেশের মানুষ আমাদের দলকে সমর্থন করবেন। দেখে নেবেন, সৌদি দল এ বার বিশ্বকাপে চমক দেখাবে। কাতার, মরক্কো এবং তিউনিসিয়া দলও ভাল সমর্থন পাবে এখানে।’’ জেড্ডা এবং দোহার মধ্যে সপ্তাহে ছ’টি বিমান চলাচল করে সাধারণ ভাবে। কিন্তু বিশ্বকাপের জন্য বিমানের সংখ্যা এক লাফে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৪০টি।
বিশ্বকাপে প্রিয় দলকে সমর্থন করতে কাতারে পৌঁছে গিয়েছেন বাদের তুর্কিস্তানি। ছবি: টুইটার।
পার্সি, বসির বা সুধীর নিজেদের দেশের ক্রিকেট দলকে সমর্থন করার জীবন উৎসর্গ করেছেন। এক সময় শ্রীলঙ্কার ম্যাচ মানেই গ্যালারিতে থাকবেন পার্সি। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তেমনই ছিলেন বসির চাচা। এখন ভারতের সুধীর। বিশ্বের যে প্রান্তেই ভারতীয় ক্রিকেট দল খেলুক না কেন গ্যালারিতে সুধীর থাকবেনই। সুধীর মূলত সচিন তেন্ডুলকরের ভক্ত। সেই থেকেই ক্রমে ভারতীয় ক্রিকেট দলের একনিষ্ঠ সমর্থক হয়ে উঠেছেন। তেমনই সৌদির কোনও ফুটবল ম্যাচ মানেই গ্যালারিতে তুর্কিস্তানি থাকবেনই।