বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে হেরেছে আর্জেন্টিনা। মেসিদের খেলা দেখে হতাশ সমর্থকরা। ছবি: রয়টার্স
আর্জেন্টিনার জার্সি পরে স্টেডিয়ামে ঢুকেছিলেন তাঁরা। ১০ মিনিটে মেসির প্রথম গোলের পরে উল্লাসেও মেতেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ৫ মিনিটের ব্যবধানে সৌদি আরব দু’টি গোল দিতেই বদলে গেল ছবি। স্টেডিয়ামে উপস্থিত সৌদি সমর্থকদের সঙ্গে জার্সি বদল করলেন আর্জেন্টিনার বেশ কয়েক জন সমর্থক। তার পরে সৌদি সমর্থকদের সঙ্গে মিলে তাঁদেরই সমর্থন করেন তাঁরা।
সমর্থকদের জার্সি বদলের ভিডিয়ো প্রকাশ পেয়েছে সমাজমাধ্যমে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আর্জেন্টিনার এক সমর্থক দ্রুত নিজের জার্সি খুলে ফেলছেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক সৌদি সমর্থকও নিজের জার্সি খুলে ফেলছেন। তার পরে জার্সি বদল করছেন তাঁরা। সৌদির জার্সি পরার পরে তাদেরই সমর্থন করতে দেখা যায় আর্জেন্টিনার সেই সমর্থককে।
সৌদি আরবের কাছে হার হজম করতে পারছেন না আর্জেন্টিনা ফুটবলাররাও। এ ভাবে হারতে হবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি মেসিরা। হারের ধাক্কায় ভেঙে পড়েছে পুরো দল। আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র ‘ক্ল্যারিন’ জানিয়েছে, হারের পরে স্টেডিয়ামের টানেল দিয়ে ঢোকার সময় আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা একে অপরের সঙ্গে কথা বলছিলেন না। লুসাইল স্টেডিয়ামের সাজঘরে প্রায় ১ ঘণ্টা বসেছিলেন ফুটবলাররা। সেখানে মেসি মুখ খোলেননি। কিন্তু বাসে ওঠার আগে সাংবাদিকদের সামনে মেসি বলেন, ‘‘আমরা মারা গিয়েছি। এটাই সত্যি। কারণ, আমরা ভাবতে পারিনি এ ভাবে হারব। তিন পয়েন্টের আশায় মাঠে নেমেছিলাম। সব কিছুর একটা কারণ থাকে। সামনে যা আসবে তার জন্য তৈরি থাকতে হবে। আমাদের জিততেই হবে। সবটাই আমাদের উপর নির্ভর করছে।’’
কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরে ফেরার পথে বাসের মধ্যেও মুখ খোলেন নেতা মেসি। বদলা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। বাসে সতীর্থদের উদ্দেশে মেসি বলেন, ‘‘আমরা জানি এই দলটা কী দিয়ে তৈরি? সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। সামনের দিকে তাকাও।’’ কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পরে নিজের ঘরে চলে যান মেসি। বাকি ফুটবলাররাও নিজেদের ঘরে যান। একসঙ্গে খেতে নামেননি তাঁরা। ঘরে থেকে পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস তুলে ধরতে মঙ্গলবার রাতেই একটি বৈঠক ডাকেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিয়োনেল স্কালোনি। আর্জেন্টিনা দলে বেশির ভাগ ফুটবলার তরুণ। তাঁরা এ বারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলছেন। এই হারের ধাক্কায় তাঁদের মনোবল তলানিতে চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কা করেছেন কোচ। তাই সবাইকে ডেকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন তিনি। সেখানে কথা বলেছেন মেসিও। গ্রুপের বাকি দু’ম্যাচে তাঁদের কেমন খেলতে হবে সে বিষয়ে কথা বলেছেন মেসিরা।
জানা গিয়েছে, নৈশভোজেও খুব একটা কথা বলছিলেন না ফুটবলাররা। তবে তার পরে সমাজমাধ্যমে ফুটবলাররা একে অপরকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। এক হারের ধাক্কায় বদলে গিয়েছে আর্জেন্টিনার অনুশীলনের সময়ও। আগে সন্ধ্যা ৬টা বা কখনও দুপুর ৩টে থেকে অনুশীলন করতেন মেসিরা। কিন্তু বুধবার বেলা ১১টা থেকে অনুশীলন করেছেন তাঁরা।