বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে স্কালোনি। ছবি: রয়টার্স
চার বছর আগে তিনি আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়ার সময় প্রয়াত দিয়েগো মারাদোনা বলেছিলেন, “ও রাস্তায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করার যোগ্যও নয়।” রবিবার রাতের পর লিয়োনেল স্কালোনি নিশ্চয়ই কোনও যুৎসই উত্তর দিতে পারতেন। কিন্তু দেশের কিংবদন্তির বিরুদ্ধে কিছুই বলেননি। যেমন ভদ্র, নম্র ছিলেন, বিশ্বকাপ জিতেও তাঁকে তেমন অবস্থাতেই পাওয়া গেল। রাতারাতি যে দুনিয়া তাঁর কাছে ওলটপালট হয়ে গিয়েছে, এমনটা মোটেই মনে হল না।
ফাইনালের আগেই কেঁদেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, দলের ছেলেদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁকে এই সম্মান দেওয়ার জন্য। ফাইনালের পরেও স্কালোনির চোখের কোণে দেখা গেল জল। তাই নিয়েই বললেন, “এই রাত কোনও দিন ভুলতে পারব না। চার পাশে যা ঘটে গেল, সেটা বিশ্বাসই হচ্ছে না। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতি ঠিক কী রকম, সেটা এ বার বুঝতে পারছি।”
এর পরেই চলে গেলেন দলের প্রশংসায়। লিয়ো মেসিদের ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন, “প্রচুর লড়াই করতে হয়েছে আমাদের। তার মাঝেও এটা ভেবে গর্বিত যে, আমার এই দল পাল্টা দিতে জানে। যে কোনও পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে জানে। ম্যাচের সময় আমি শান্তই ছিলাম। কারণ জানতাম এই দলটার ক্ষমতা রয়েছে ম্যাচে ফেরত আসার। আত্মবিশ্বাসই ওদের এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। এমনও ফুটবলার রয়েছে যারা নিজেরাই এগিয়ে এসে বলে, ‘চিন্তা করার দরকার নেই, আমি একাই দু’জনকে আটকে দেব।’ আর এক জন এসে বলে দেয়, ‘আমি ওকে পাস দিয়ে দেব সময় মতো।’ ওদের মধ্যে এই বোঝাপড়াটাই বাকিদের থেকে আলাদা করে দেয়।”
দেশবাসীর উদ্দেশে স্কালোনি বলেছেন, “এই মুহূর্ত জীবনে বার বার আসে না। সবাইকে বলব, সময়টা ভাল ভাবে উপভোগ করে নিতে। প্রত্যেকে জাতীয় দলের হয়ে সেরাটা দিতে চায়। এই ফুটবলারদের আবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।”
আনন্দের মুহূর্তে নিজের বাবা-মায়ের প্রসঙ্গও আনলেন স্কালোনি। বলেছেন, “আমার বাবা হয়তো এখন আমাকে দেখছেন। আমার মা সারা জীবন শিখিয়েছেন, কখনও হাল না ছাড়তে। কারও বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত লড়াই না রাখতে। সব সময় সামনে তাকাতে। সেটাই আমি করে এসেছি। আজ এই জায়গায় পৌঁছতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।”