ইংল্যান্ডের স্ট্রাইকার বেথানি ইংল্যান্ড। ছবি: রয়টার্স
ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের তকমা দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। দলের কোচ সেরিনা উইগম্যান তাঁকে তুরুপের তাস বলছেন। মহিলাদের ফুটবল বিশ্বকাপ ফাইনালে নামার আগে অসম্ভব শান্ত বেথানি ইংল্যান্ড। জীবনের সব থেকে বড় ম্যাচে নামার আগে নিজের জীবনের লড়াই থেকে রসদ নিচ্ছেন বেথানি। ফুটবলের খরচ জোগাতে এক সময় মাছ বিক্রি করতেন। কঠিন পরিশ্রম করে সাফল্য পেয়েছেন। সেই পরিশ্রম ফাইনালেও করতে চান বেথানি।
রবিবার প্রথম বার মহিলাদের ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামছে ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষ স্পেন। জিততে পারলে ১৯৬৬ সালের পরে আবার বিশ্বকাপ জিতবে ইংল্যান্ড। স্পেনের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের দলে বড় অস্ত্র বেথানি। ১২ বছর বয়সে বার্নসলের যুব দলে সুযোগ পান বেথানি। সেখানে ৪ বছর খেলার পরে শেফিল্ড ইউনাইটেডে সই করেন ১৬ বছরের বেথানি। কিন্তু খেলার খরচ জোগাতে মাছ বিক্রি করতে হত তাঁকে। ইয়র্কশায়ারের একটি দোকানে কাজ করতেন তিনি। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করতেন। তার পরে অনুশীলন। রাতে ৩ ঘণ্টা ঘুমোতে পারতেন। অনেক সময় ম্যাচের দিনও মাছ বিক্রি করতে হত তাঁকে।
২০২০ সালে একটি সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের লড়াইয়ের কথা জানিয়েছিলেন বেথানি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সবার লড়াই আলাদা। আমারটাও সহজ ছিল না। নিজের কাছে অনেক কিছু প্রমাণ করার ছিল। তাই ছোট থেকেই লড়াই করেছি। বাবা-মা সব সময় সাহস জুগিয়েছেন। বলেছেন কাজ করে যেতে। সেটাই করেছি। ইংল্যান্ডের হয়ে ফুটবল খেলা আমার স্বপ্ন।’’ বেথানির সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
২০১৬ সালে মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসিতে সই করেন বেথানি। সেই তাঁর প্রথম বড় ক্লাবে যাওয়া। সাত বছর সেই ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। চার বার চেলসিকে মহিলাদের সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন করেছেন। এই সময়ের মধ্যে ৭৩টি গোল করেছেন বেথানি। চেলসির কোচ এমা হায়েসের মতে বেথানি ইংল্যান্ডের সেরা স্ট্রাইকারদের মধ্যে অন্যতম।
চেলসির হয়ে ভাল খেলার সুবাদে এই মরসুমের আগে তাঁকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা দিয়ে নিজেদের দলে সই করায় টটেনহ্যাম। মরসুমে ১৩ গোল করে দলকে অবনমন থেকে বাঁচান বেথানি। তার পরেই ইংল্যান্ডের কোচ উইগম্যানের নজরে পড়েন বেথানি। ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে সুযোগ পান তিনি।
বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত বেথানিকে খুব সাবধানে ব্যবহার করেছেন উইগম্যান। ডেনমার্ক, চিন, নাইজিরিয়া ও কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসাবে খেলিয়েছেন এই স্ট্রাইকারকে। কিন্তু যতটুকু সময় বেথানি মাঠে থেকেছেন নজর কেড়েছেন। শেষ ষোলোর ম্যাচ কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে গোলও করেছেন তিনি। আর একটি ম্যাচ। একটি ফাইনাল। আরও এক বার লড়াই করতে চান বেথানি। ৫৭ বছর পরে ইংল্যান্ডকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।