অতিথি: ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে ঝুলন ও লিয়েন্ডার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ইস্টবেঙ্গলের ১০৩তম প্রতিষ্ঠা দিবসেই সেরা প্রাপ্তি লাল-হলুদ সমর্থকদের! আইএসএলে তাঁদের প্রিয় ক্লাবের আগে নতুন লগ্নিকারী সংস্থা ইমামি গোষ্ঠীর নাম থাকছেনা। ইস্টবেঙ্গল এফসি নামেই খেলতে দেখা যাবে লাল-হলুদের ফুটবলারদের। সোমবার সন্ধ্যায় ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে উৎসবের আবহেই জানালেন লগ্নিকারী সংস্থার ডিরেক্টর আদিত্য বর্ধন আগরওয়াল।
আজ, মঙ্গলবার বিকেলে নতুন লগ্নিকারীর সঙ্গে বহু প্রতীক্ষিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ইস্টবেঙ্গলের। তার চব্বিশ ঘণ্টা আগে সংস্থার অন্যতম প্রধান কর্তা বলে দিলেন, ‘‘আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল এফসি নামেই খেলবে দল। কারণ, প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী ক্লাবের নামের আগে সংস্থার পরিচিতি ব্যবহার করা যায় না।’’ এর পরেই তাঁর আশ্বাসবাণী, ‘‘দল তো আমরা ভাল করবই। সমর্থকদের সঙ্গে আবার দেখা হবে ট্রফি-সহ।’’ কলকাতা লিগ ও ডুরান্ডে অবশ্য ইমামি ইস্টবেঙ্গল নামে খেলবে দল। সোমবারই নওরেম মহেশ সিংহ ও সুহের ভি পি-র ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলা কার্যত চূড়ান্ত হয়ে গেল।
লগ্নিকারী সংস্থার প্রধানের ঘোষণায় লাল-হলুদ সমর্থকদের উন্মাদনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। উৎসব অবশ্য সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ময়দানে ইস্টবেঙ্গলের ক্লাব তাঁবুতে প্রদীপ জ্বালিয়ে, পতাকা উত্তোলন করে ও কেক কেটে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিকেলে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে রীতিমতো নক্ষত্র সমাবেশ। শ্যাম থাপা, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম সরকার, সমরেশ চৌধুরী, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, লিয়েন্ডার পেজ, ঝুলন গোস্বামী, সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাজা সুরেশ চন্দ্র চৌধুরীর নাতি অমরেশ চৌধুরী। দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুজিত বসু।
বাবা ভেস পেজের সামনে ভারত গৌরব সম্মান গ্রহণ করার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন লিয়েন্ডার। বলছিলেন, ‘‘বাবা-ই আমার গুরু। আমার অনুপ্রেরণা। তাঁর সামনে এই সম্মান পাওয়ার অনুভূতি অসাধারণ।’’ আরও বললেন, ‘‘আমার বাবার বয়স এখন ৭৭। আমি যখন ছোট ছিলাম, বাবা তখন ইস্টবেঙ্গলের হয়ে হকি খেলতেন। মাঝেমধ্যে বাবার সঙ্গে যখন ইস্টবেঙ্গল মাঠে যেতাম, সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়তাম। আজও একই রকম অনুভূতি হচ্ছে।’’ যোগ করেন, ‘‘খেলাধুলোর প্রতি কলকাতার মানুষের আবেগের কোনও তুলনা নেই। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বির মতোই উত্তেজনা দেখেছি রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনা দ্বৈরথে। ইংল্যান্ডে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বনাম সিটি ম্যাচকে কেন্দ্র করে। এই শহরের মানুষের সমর্থন ছাড়া আমি এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না। আমার অলিম্পিক্সের পদক তাই কলকাতার সকলেরই।’’ এর পরেই ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে হাজির কয়েক হাজার ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উদ্দেশে লিয়েন্ডারের বার্তা, ‘‘আশা করি ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হবে। কথা দিচ্ছি আপনাদের সঙ্গে উৎসবে যোগ দিতে আমিও আসব।’’
মাতিয়ে দিলেন ঝুলনও। ভারত গৌরব সম্মান গ্রহণের পরে বললেন, ‘‘আমি আজ খোলাখুলি জানাতে চাই, আমার হৃদয় জুড়ে সবসময়ই রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। এর জন্য হয়তো ভবিষ্যতে আমাকে অনেক সমস্যায় পড়তেহতে পারে।’’