ISL 2024-25

অস্কারের নির্দেশে থিম্পুতে দু’হাজার সিঁড়ি ভাঙেন নন্দরা

আইএসএল ডার্বিতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে ০-২ হারের পরেই ইস্টবেঙ্গলকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৫
Share:

প্রস্তুতি: অস্কারের নজর দিমিত্রিয়স ও মাধি তালালের উপরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আইএসএলে গত মরসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। সেরা মিডফিল্ডার মাধি তালাল। দুই তারকাই এ বার ইস্টবেঙ্গলে। এখানেই শেষ নয়। আনোয়ার আলি, জিকসন সিংহ, মহেশ সিংহ, নন্দ কুমারের মতো জাতীয় দলের ফুটবলাররাও রয়েছেন। তা সত্ত্বেও টানা আটটি ম্যাচে হার। ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে। আক্রমণ থেকে রক্ষণ— প্রতিটি বিভাগই ছন্নছাড়া। কেন এই বেহাল অবস্থা ইস্টবেঙ্গলের?

Advertisement

অস্কার ব্রুসো দায়িত্ব নিয়েই উপলব্ধি করেছিলেন সমস্যা একাধিক। এক) ৯০ মিনিট খেলার মতো শারীরিক সক্ষমতা নেই ফুটবলারদের। দুই) দলের মধ্যে সংহতির অভাব স্পষ্ট। তিন) একের পর এক হারে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে মানসিক ভাবে সাউল ক্রেসপো-রা এতটাই বিপর্যস্ত যে, ফুটবলের প্রাথমিক পাঠও যেন ভুলে গিয়েছেন। চার) অন্দরমহলের দমবন্ধকরা পরিবেশ।

অস্কার প্রথমেই জোর দেন দলীয় সংহতি এবং ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস ফেরানোর উপরে। আইএসএল ডার্বিতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে ০-২ হারের পরেই ইস্টবেঙ্গলকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। মাঠে নামার আগে ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার সঙ্গে অনুশীলনের ফাঁকেও আলাদা করে কথা বলেন। জানার চেষ্টা করেন কী সমস্যা হচ্ছে? কেন নিজেদের সেরাটা দিতে পারছেন না ফুটবলাররা?

Advertisement

আইএসএলে ওড়িশা এফসি-র কাছে ১-২ গোলে হারলেও লড়াই করেছিলেন দিয়ামানতাকোস-রা। কিন্তু কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় শারীরিক সক্ষমতার অভাব। ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল গত ২২ অক্টোবর। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের ‘এ’ গ্রুপে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ ছিল ২৬ অক্টোবর। প্রতিপক্ষ পারো এফসি। মাঝের চারটি দিনকেই অস্কার বেছে নিয়েছিলেন ফুটবলারদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। এর পরের কাহিনি চমকে দেওয়ার মতো। ২৪ অক্টোবর দুপুরে থিম্পু পৌঁছেই স্পেনীয় কোচ ফুটবলারদের জানান, ১০ মিনিটের মধ্যে কুয়েনসেলফোদ্রংয়ে ১৭৭ ফিট উচ্চতার গৌতম বুদ্ধের মূর্তি দর্শন করতে যাওয়া হবে। ফুটবলাররা ভাবতেও পারেননি, কী অপেক্ষা করে রয়েছে। কুয়েনসেলফোদ্রংয়ের প্রায় তিন কিলোমিটার আগে হঠাৎ টিমবাস থামিয়ে অস্কার নির্দেশ দেন বাকি রাস্তা দৌড়ে উঠতে হবে। প্রায় দু’হাজার সিঁড়ি ভেঙে বুদ্ধ পয়েন্টে পৌঁছন সৌভিক চক্রবর্তীরা। অস্কারের উদ্দেশ্য ছিল, ফুটবলারদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে থিম্পুর উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া।

প্রথম ম্যাচে তেমন পরিবর্তন ধরা না পড়লেও বসুন্ধরার বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল ছিল বিধ্বংসী। ৪-০ গোলে জেতে। শেষ আটে ওঠে গ্রুপে শেষ ম্যাচে লেবাননের নেজমেহ এসসি-কে হারিয়ে। অস্কার যদিও মনে করেন, ফুটবলাররা এখনও শারীরিক সক্ষমতায় শীর্ষে পৌঁছতে পারেননি। এই কারণেই সোমবার বিকেলের অনুশীলনে সবচেয়ে বেশি জোর দেন বিভিন্ন ধরনের শারীরিক কসরতের উপরেই। আগামী শনিবার মহমেডান স্পোর্টিংকে হারিয়ে আইএসএলে প্রথম জয়ই যে পাখির চোখ অস্কারের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement