বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে দেবব্রত সরকার এবং কল্যাণ মজুমদার। ছবি টুইটার
মঙ্গলবারই ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ক্রীড়া স্বত্ত্ব ফিরিয়ে দিয়েছে শ্রী সিমেন্ট। বুধবারই ক্লাবকর্তারা জানিয়ে দিলেন, দ্রুত নতুন বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা। আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে নতুন কোনও ঘোষণা করতে পারে ক্লাব। তবে বিনিয়োগকারী নিয়ে ধোঁয়াশা এ দিনও বজায় থাকল। বাংলাদেশের বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি হবে কি না, সে ব্যাপারে খোলসা করেননি ক্লাবকর্তারা।
বুধবার ক্লাব তাঁবুতে এক সাংবাদিক বৈঠকে শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, “ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলবে। শুধু ইস্টবেঙ্গল নয়, মহমেডানও খেলবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি আমাদের বলেছেন নতুন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলতে। আমরা সেই মতো কথা শুরু করেছি। আশা করি আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারব। তার পর ওঁর সঙ্গে কথা বলব।”
দেবব্রতের সংযোজন, “শ্রী সিমেন্ট যে আমাদের ক্রীড়া সত্ত্ব ফিরিয়ে দেবে সে ব্যাপারে আমরা তৈরি ছিলাম। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা। তখন মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের সেটাই বলেছিলেন। আমরা সেই মতো প্রস্তুতি নিয়েছি। পাশাপাশি ওঁকে বলেছিলাম, যা করার আপনাকেই করতে হবে। উনি সেই আশ্বাস আমাদের দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহধন্য এক ব্যক্তি আমাদের ক্লাবের সদস্য। তিনি নিজেও ব্যাপারটা দেখছেন।” আপাতত দু’-তিনজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথাবার্তা চলছে বলে জানিয়েছেন দেবব্রত। তবে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, এ বার শুধু ফুটবলস্বত্ত্বই বিনিয়োগকারীকে দেওয়া হবে।
বসুন্ধরার সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দেবব্রতের জবাব, “ওদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ওরা আপাতত বিষয়টি নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলছে। সেখান থেকে কোনও সবুজ সঙ্কেত পেলেই আমরা ব্যাপারটা নিয়ে এগোতে পারব। কিন্তু ওদের নির্দেশিকা না এলে ব্যাপারটা নিয়ে আর বসতে পারব না। তবে এলে ওরা বিনিয়োগকারী হিসেবেই আসবে।” তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলারদের প্রদর্শনী ম্যাচ খেলার ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা রয়েছে। এখনই সে ব্যাপারে চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
শ্রী সিমেন্ট চলে গেলেও বেশ কিছু ফুটবলারের টাকা বকেয়া রয়েছে। ১১ জন ফুটবলার মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষের বেশি টাকা বকেয়া। দেবব্রতের আশা, শ্রী সিমেন্ট সেই টাকা মিটিয়ে নেবে। না হলে তাঁরা আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। দেবব্রত বলেছেন, “আমার বিশ্বাস, যে প্রতিষ্ঠান একটা ফুটবল দলের জন্য এত টাকা খরচ করেছে তারা এই সামান্য টাকার জন্য কোনও ঝামেলা করবে না।”
বুধবার ক্লাব তাঁবুতে হাজির ছিলেন মেহতাব হোসেন, রহিম নবি, মিহির বসু, অলোক মুখোপাধ্যায়, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন ফুটবলার। কর্মসমিতির বৈঠকে তাঁদের মতামতও গ্রহণ করবে ক্লাব। দেবব্রত বলেছেন, “ওঁরা ইতিমধ্যেই এ বারের আই লিগে ভাল খেলা বেশ কিছু ফুটবলারদের তালিকা দিয়েছেন। বাংলার সন্তোষ ট্রফি দলের কিছু ফুটবলারের প্রতিও আমাদের নজর রয়েছে। ওঁরা যে পরামর্শ দেবেন তা নিয়ে আমরা আলোচনা করব। এখন যে কোনও ব্যাপারে বিনিয়োগকারী, এআইএফএফ, আইএফএ-র সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। তবু প্রাক্তন ফুটবলারদের মতামত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি।”