East Bengal and Mohun Bagan

২ বনাম ৩ এবং ১১ বনাম ১২, শনিবার একই দিনে নামছে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল

একটি দল, যারা তিন নম্বর থেকে আইএসএলের শীর্ষে ওঠার মরিয়া চেষ্টা করছে। অপর দলটি পয়েন্ট তালিকায় শেষ থেকে দ্বিতীয়। তাদের লক্ষ্য প্রথম স্থান নয়, অন্তত ছ’নম্বরে শেষ করা। শনিবার আবার নামছে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৬
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

একটি দল, যারা তিন নম্বর থেকে আইএসএলের শীর্ষে ওঠার মরিয়া চেষ্টা করছে। অপর দলটি পয়েন্ট তালিকায় শেষ থেকে দ্বিতীয়। তাদের লক্ষ্য প্রথম স্থান নয়, অন্তত ছ’নম্বরে শেষ করা। শনিবার এই পরিস্থিতিতেই খেলতে নামছে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে দুই দলের পরিস্থিতি দু’রকম। মোহনবাগান যেখানে জয়ের সরণিতে ফিরেছে, ইস্টবেঙ্গল সেখানে আবার একের পর এক ম্যাচ হারছে। শনিবার ঘরের মাঠে মোহনবাগান খেলবে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গল অ্যাওয়ে ম্যাচে নামবে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

লিগের অপরাজিত দল গোয়াকে আগের ম্যাচে হারিয়ে চনমনে মোহনবাগান দল। শনিবার তারা জিততে পারলে উঠে আসবে দুইয়ে। তার পরের ম্যাচেও জিতলে বাকিদের সঙ্গে সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলেই শীর্ষে চলে যাবে। এই সুযোগ হারাতে চাইছেন না আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস, যিনি আসার পর থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সবুজ-মেরুন। শনিবারের ম্যাচে তিনি দলে বদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

অন্য দিকে, সুপার কাপ জয়ের পর থেকে ইস্টবেঙ্গলের ফর্ম তলানির দিকে। কলকাতা ডার্বি ড্র করলেও পরের দু’টি ম্যাচেই হেরেছে তারা। শুক্রবার চেন্নাইয়িন জেতায় তারা নেমে গিয়েছে ১১ নম্বরে। ছ’নম্বরে উঠতে গেলে শনিবার লিগের লাস্ট বয় হায়দরাবাদকে হারানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই স্বপ্নই দেখছেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তিনি এখন লিগের নীচের দিকে থাকা দলগুলিকে হারাতে চাইছেন।

Advertisement

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে হাবাসের মুখে ইস্টবেঙ্গলের কোচের কথাই শোনা গিয়েছে। আইএসএলের সূচি নিয়ে তোপ দেগে হাবাস বলেছেন, “পুরো অবাস্তব ব্যাপার (এই সূচি)। শুধু আমাদের নয়, সব দলের ক্ষেত্রেই এটা দেখা যাচ্ছে। একটা দল সাত দিন বিশ্রাম নিয়ে তার পর এখানে ম্যাচ খেলতে আসছে। আর আমরা দেশের আর এক প্রান্ত গোয়া থেকে ফিরে দু’দিনের মধ্যে ম্যাচ খেলতে নামছি। আমি তো ভাল করে ঘুমোতেই পারিনি। খুব কঠিন এ ভাবে খেলা। কিন্তু এটার সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।”

হাবাসের সংযোজন, “শুধু ফুটবলারদের জন্য নয়, দর্শকদের কথাও মাথায় রাখতেই হবে। আমরা প্রায়ই বলি মাঠে কোনও দর্শক হচ্ছে না। আরে দর্শকদের সময়কেও তো গুরুত্ব দিতে হবে। এত ঘন ঘন খেলা দেখলে ওঁরা ক্লান্ত হয়ে যেতেই পারেন। সবার কথাই মাথায় রাখতে হবে।”

ইস্টবেঙ্গল কোচের মতোই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর কথা বলেছেন হাবাসও। নর্থইস্ট ম্যাচে একাধিক বদল দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছুই নয়। হাবাস বলেছেন, “ফুটবলারদের রিকভারির দিকটা আমাদের মাথায় রাখতে হচ্ছে। গোয়ায় হোটেলে গিয়ে বিশ্রাম নিয়েছি। ফেরার সময়েও রিকভারির চেষ্টা করেছি। কোনও অজুহাত দিতে চাই না। তবে দল গঠনের আগে সব দিক মাথায় রাখতে হচ্ছে। কাদের প্রথম একাদশে খেলাব, কাদের বিশ্রাম দেব সেটাও ভেবে নিচ্ছি। দলের সব ফুটবলারদের মধ্যে যাতে একটা ভারসাম্য থাকে, সেটা দেখছে আমাদের সাপোর্ট স্টাফেরা। দু’দিন আগেই যে ফুটবলারটা ৯০ মিনিট খেলেছে, তার পক্ষে বিশ্রাম না নিয়ে আবার ৯০ মিনিট খেলা সমস্যার। সব খেলোয়াড়দের থেকে সেরাটা যাতে বার করে আনা যায় সেটা দেখাই সাপোর্ট স্টাফদের কাজ। তার জন্য বিশ্রাম দরকার।”

তার ঠিক আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে দলের বিভিন্ন অসুবিধার কথা তুলে ধরেন কুয়াদ্রাত। লাল-হলুদের নতুন ফুটবলার নিয়ে শুক্রবার কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বললেন, “আমাদের দলে আরও একজন চোট পেল এবং দ্রুত আর একটা ফুটবলারকে নিতে হল। জর্ডান এলসের সময়েও এ রকম হয়েছিল। ওর জায়গায় হিজাজিকে নিয়েছিলাম। এ বার বিকল্প ফুটবলারকে নিয়ে অত দৌড়োদৌড়ি করতে হয়নি। সূচি এ রকমই। কিছু করার নেই। দু’দিন অন্তরই খেলতে হবে আমাদের। এক হয়ে সমস্যার সমাধান খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি।”

কুয়াদ্রাতের সংযোজন, “পারদোর চোট নিয়ে হতাশ। দলকে দারুণ ভাবে সাহায্য করছিল ও। এই মুহূর্তে সঙ্গে সঙ্গে কোনও ফুটবলারকে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। কিন্তু স্কাউটিং দলের সৌজন্যে সেটা সম্ভব হয়েছে। দেখেছিলাম যে পান্টিচের সঙ্গে কারও চুক্তি নেই। তাই ওর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলি। ও আসতে রাজি হয়ে যায়। তাই আর কারও ব্যাপারে ভাবতে চাইনি।”

দলের জন্য নতুন লক্ষ্যও ঠিক করে দিয়েছেন কুয়াদ্রাত। লাল-হলুদের কোচ বলেন, “আমাদের কাছে এখন প্রত্যেকটা ম্যাচই জিততে হবে। ছেলেরাও ফোকাস্‌ড। নুঙ্গা এবং মহেশকে আমরা পাচ্ছি না। তবে চার জন বিদেশিকে অন্তত খেলাতে পারব। এটাই আমাকে শান্তি দিচ্ছে।” তবে প্লে-অফে ওঠার লড়াই যে সহজ হবে না এটা মেনে নিচ্ছেন কুয়াদ্রাত। ব্যাখ্যা দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের কোচ বলেন, “মরসুমের মাঝে বার বার বিদেশি বদলাতে হচ্ছে আমাদের। ভিক্টর (ভাসকুয়েস), ফেলিসিয়ো (ব্রাউন), পান্টিচকে এখন নতুন করে বোঝাতে হবে ভারতীয় ফুটবলের ব্যাপারে। আমাদের লক্ষ্যটা ঠিক কী সেটাও বুঝিয়ে দিতে হবে। এর জন্য আরও অন্তত ১৫ দিন লাগবে। তার পর বুঝতে পারব প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করা সম্ভব কি না। এখন অন্তত চারটে দল লড়াই করছে একটা স্থানের জন্য। আমরাও সেই লড়াইয়ে রয়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement