ইস্টবেঙ্গল দল। — ফাইল চিত্র।
হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে জিতে আইএসএলের পয়েন্ট তালিকায় অনেকটাই উঠে এসেছে ইস্টবেঙ্গল। বৃহস্পতিবার জামশেদপুর এফসি-কে হারাতে পারলে প্রথম ছয়ে চলে আসবে তারা। অর্থাৎ, বাঁচিয়ে রাখা যাবে প্লে-অফে খেলার স্বপ্ন। কিন্তু জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচ কঠিন হতে চলেছে লাল-হলুদ ব্রিগেডের কাছে।
আজ পর্যন্ত আইএসএলে কোনও দিন টানা দু’টি ম্যাচে জেতেনি ইস্টবেঙ্গল। বৃহস্পতিবার ইতিহাসের সুযোগ তাদের সামনে। কিন্তু খালিদ জামিলের দলকে হারানো মোটেই সহজ নয়। জামিল কোচ হয়ে আসার পর থেকে ভাগ্য ঘুরে গিয়েছে জামশেদপুরের। মুম্বই সিটির মতো দলকে দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও হারিয়ে দিয়েছে তারা।
জামিল ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ। তিনি চাইবেন বদলা নিতে। সুপার কাপে ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে পারেননি। আইএসএলে তার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া জামিল। এই দলে অতীতে লাল-হলুদের হয়ে খেলে যাওয়া ফুটবলার ড্যানিয়েল চিমাচুকুও রয়েছেন। তিনিও চাইবেন লাল-হলুদের জালে বল জড়াতে।
ম্যাচের আগে দিন তাই কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বেশ সতর্ক। তিনি বলেছেন, “সুপার কাপে যে দল খেলেছিল তার থেকে এই জামশেদপুর দলটা ভাল। তবে আমরাও ভাল ফুটবল খেলছি। আশা করি সুপার কাপে যে খেলা খেলেছিলাম সেটা এখানেও দেখাতে পারব।” তাঁর সংযোজন, “জামশেদপুরে প্রতিভার অভাব নেই। আমাদের মতো ওরাও প্লে-অফের জন্য লড়াই করছে। আমরাই শেষ দল যারা জামশেদপুরকে হারাতে পেরেছি। তবে কঠিন লড়াই তা নিয়ে সন্দেহ নেই। আমরা জয়ের জন্যই নামব।”
এখনও পর্যন্ত জানুয়ারিতে ইস্টবেঙ্গলের যে নতুন দুই বিদেশি এসেছেন, তাঁরা ছাপ ফেলতে পারেননি। আর এক নতুন বিদেশি আলেকজ়ান্ডার পান্টিচকে বৃহস্পতিবারই প্রথম বার খেলতে দেখা যেতে পারে। মাঝমাঠে সাউল ক্রেসপোর অভাব একটু হলেও ভোগাচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে। খেলা জমাট বাঁধছে না। যদিও কুয়াদ্রাত তা মানতে চাইলেন না। বলেছেন, “আমরা বেশ ভালই লড়াই দিচ্ছি বাকি দলগুলোর বিরুদ্ধে। অনেক ম্যাচেই ফলাফলের খুব কাছাকাছি গিয়েছি। ফুটবলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুশি। ওদের থেকে যা চাইছি সেটাই পাচ্ছি। তাই খুশি না থাকার কারণ নেই।” তিনি আরও বলেছেন, “ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল ইতিহাসে কখনও এ রকম হয়নি যে তারা পর পর দুটো ম্যাচে জিতেছে। আশা করি সেটা বৃহস্পতিবারই দেখা যাবে। খেলোয়াড়েরা এই ম্যাচ নিয়ে খুবই ফোকাস্ড।”
জামিলের অধীনে যে ভাবে জামশেদপুর ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাকে সমীহ করলেও ঘাবড়াচ্ছেন না কুয়াদ্রাত। বলেছেন, “ফুটবল এ রকম বৈচিত্রময়। হঠাৎ করেই কোনও দল ফর্ম ফিরে পেতে পারে। দলের মধ্যে নেতিবাচক মানসিকতার প্রভাব যেমন পড়ে, তেমন ইতিবাচক মানসিকতা থাকলে ঘুরে দাঁড়ানো যায়। ওরা খেলা আমি দেখেছি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে খুব খারাপ খেলেছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিন গোল দিয়ে ম্যাচটা জিতে নিল। দু’অর্ধে দু’রকম জামশেদপুরকে দেখেছিলাম আমরা।”
নতুন বিদেশি পান্টিচ এসেছিলেন কুয়াদ্রাতের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, “২-৩ দিন হয়ে গেল দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছি। কোচ এবং ফুটবলারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওদের জন্যই খুব অল্প সময়ের মধ্যে দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। আশা করি মাঠে নামলে নিজের সেরাটাই দিতে পারব।” পান্টিচ আরও বললেন, “এই প্রথম বার ভারতে এসেছি। আগে এখানে খেলে যাওয়া ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলেছি। শুনেছি ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব হল ইস্টবেঙ্গল। এখানকার ফুটবলের সম্পর্কে অনেক ভাল কথা শুনেই ভারতে এসে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”