গোলের পর রোনাল্ডোর উচ্ছ্বাস। ছবি: টুইটার।
আল নাসেরের হয়ে গোল করেই চলেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। আরব চ্যাম্পিয়ন্স কাপের সেমিফাইনালেও গোল করলেন পর্তুগিজ ফুটবলার। দলকে তুলে দিলেন ফাইনালে। আল নাসের ১-০ গোলে হারাল আল শর্তাকে। আগামী ১২ অগস্ট সৌদি আরবেরই ক্লাব আল হিলালের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলবে আল নাসের।
ম্যাচের শুরুর দিকেই গোল করেন রোনাল্ডো। সতীর্থের পাস পেয়ে বিপক্ষ গোলকিপারকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। এর পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আল নাসেরের থাকলেও, আল শর্তার ফুটবলাররা গোল করার কোনও জায়গাই দেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও আগ্রাসী মেজাজে শুরু করে রোনাল্ডোর ক্লাব। ফলও মেলে। বিপক্ষের ভুলে পেনাল্টি পায় আল নাসের। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে সৌদির ক্লাবটিতে সই করা সাদিয়ো মানেকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন আল শর্তার এক ফুটবলার। প্রথমে পেনাল্টি না দিলেও ভার-এর সাহায্য নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলান রেফারি। পেনাল্টি থেকে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন রোনাল্ডো।
আগের ম্যাচেও গোল করেছিলেন রোনাল্ডো। রাজা কাসাব্লাঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে তাঁর পা থেকেই। খেলা শুরুর ১৯ মিনিটের মাথায় দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন রোনাল্ডো। রক্ষণ থেকে বাঁ প্রান্তে বল পেয়েছিলেন ট্যালিস্কা। ব্রাজিলীয় ফুটবলার দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের মধ্যে রোনাল্ডোর জন্য বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন। বাঁ পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন রোনাল্ডো। গোল করা পরে দেখা গিয়েছিল তাঁর চিরপরিচিত ‘সিউ’ কায়দায় উল্লাস। রোনাল্ডোর নতুন সতীর্থ সাদিয়ো মানেকেও সেই কায়দায় উল্লাস করতে দেখা গিয়েছিল। যা দেখা গিয়েছে বুধবার রাতের ম্যাচেও।
সেই ম্যাচে আরও একটি গোল পেতে পারতেন রোনাল্ডো। এক বার তাঁর বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তাতে অবশ্য দলের জিততে কোনও সমস্যা হয়নি। কারণ, ২৯ মিনিটের মাথায় আল ঘান্নাম ও ৩৮ মিনিটে সেকো ফোফানা গোল করে দলকে ৩-০ এগিয়ে দেন। ৪১ মিনিটে আল নাসেরের আব্দুল্লা মাদু আত্মঘাতী গোল করলেও শেষ পর্যন্ত ৩-১ জিতে সেমিফাইনালে যায় আল নাসের।
কয়েক দিন আগে তিউনিসিয়ার ক্লাব মোনাস্তিরের বিরুদ্ধে মরসুমের প্রথম গোল করেছেন রোনাল্ডো। সেই সঙ্গেই নজির গড়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ফুটবল মিলিয়ে এত দিন হেডে গোল করার নিরিখে সবার উপরে ছিলেন জার্মানির গার্ড মুলার। হেডে ১৪৪টি গোল করেছিলেন তিনি। আল নাসেরের হয়ে হেডে নিজের ১৪৫তম গোল করেন রোনাল্ডো। ম্যাচের ৭৪ মিনিটে গোল করেন তিনি। ডান দিক থেকে ভাসানো ক্রসে শূন্যে শরীর ঝাঁপিয়ে হেড করেন তিনি। রোনাল্ডোর হেড বাঁচাতে পারেননি গোলরক্ষক।
আগের ম্যাচেই অবশ্য বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রোনাল্ডো। আল শাবাবের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়। রেফারি ম্যাচ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসেন রোনাল্ডো। প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিয়ম করতেও দেখা যায়নি তাঁকে। শুকনো মুখে মাঠ ছাড়ার সময় রোনাল্ডোকে ক্যামেরাবন্দি করছিলেন সম্প্রচারকারী চ্যানেলের এক চিত্রগ্রাহক। রোনাল্ডো মাঠের বাইরে চলে আসার পরে সাইড বেঞ্চের সামনে খুব কাছ থেকে রোনাল্ডোর ছবি তুলছিলেন তিনি। ম্যাচ ড্র হওয়ায় বিরক্ত রোনাল্ডো তাতে মেজাজ হারান। মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে জল খাচ্ছিলেন। খানিকটা জল ওই চিত্রগ্রাহকের দিকে ছুড়ে দেন রোনাল্ডো। একই সঙ্গে ওই চিত্রগ্রাহককে সরে যেতে বলেন পর্তুগিজ তারকা। এই ঘটনায় তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক।