সৌরভকে সামনে রেখে ভাইচুংয়ের প্রচার। ফাইল ছবি
এক সময় মনে করা হয়েছিল সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) সভাপতি পদে সর্বসম্মত ভাবে নির্বাচিত হতে চলেছেন প্রাক্তন ফুটবলার, তথা বিজেপির সদস্য কল্যাণ চৌবে। তবে বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন ভাইচুং ভুটিয়া। রাজস্থানের সমর্থন নিয়ে তিনি সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদাহরণ তুলে ধরে জানিয়ে দিলেন, খেলোয়াড়রাও প্রশাসক হিসাবে সফল হতে পারেন। তাঁদের সেই সুযোগটা দিতে হবে।
ভাইচুং বলেছেন, “সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখুন। ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বিসিসিআই সভাপতি হিসাবে কত ভাল কাজ করছে ক্রিকেটে। এতেই বোঝা যায় খেলোয়াড়রা প্রশাসক হিসাবে কত ভাল কাজ করতে পারে। আমি তো ফুটবলে নতুন নই। জাতীয় দলের হয়ে ১৬ বছর খেলেছি। ১২ বছর অধিনায়কত্ব করেছি। তার পরে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেছি। তাই আত্মবিশ্বাসী যে ভাল কাজ করতে পারব।”
ভাইচুং জানেন যে কল্যাণের বিরুদ্ধে তাঁর জেতার সম্ভাবনা কম। তার মূল কারণ, কল্যাণের পিছনে অনেক রাজ্য সংস্থার সমর্থন রয়েছে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের মতে, কল্যাণকে হয়তো ভুল বোঝানো হচ্ছে। কারণ সভাপতি হিসাবে নিজের যে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি, ভাইচুংয়ের মতে, এই মুহূর্তে তা কখনওই অগ্রাধিকার হতে পারে না। ভাইচুংয়ের কথায়, “কল্যাণ বলেছে, ‘প্রত্যেক রাজ্যের একটা ভাল অফিস এবং পরিকাঠামো থাকা দরকার, যেখানে পরিকল্পনা এবং নীতি নির্ধারণ হবে। প্রত্যেক রাজ্যের হাতে ১০ হাজার স্কোয়্যার ফুট জায়গা থাকা দরকার, তাতে ভাল অফিস গড়ে তোলা যাবে।’ আমার কাছে এটা মোটেই অগ্রাধিকার নয়। এটা ওর বিবৃতি কি না জানি না। মনে হয় কল্যাণকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। পরের দিকে এ সব কাজ হতেই পারে। আগে ফুটবলের পরিকাঠামো, উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা উচিত। ফুটবল লিগ, তৃণমূল স্তরের উন্নয়ন করা উচিত, যাতে বাচ্চা ছেলেরাও ফুটবল খেলতে পারে। কোচেদের জন্য পরিকল্পনা করা যেতে পারে।”
সভাপতি নির্বাচিত হলে নিজের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন ভাইচুং। দুটো জিনিসের উপরে জোর দিতে চাইছেন। প্রথমত, তৃণমূল স্তরের ফুটবলের উন্নতি। দ্বিতীয়ত, রাজ্য সংস্থাগুলিকে আরও বেশি টাকা দেওয়া। পাশাপাশি এ দিন জানালেন, প্রতিটি রাজ্যে একটি করে উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তুলতে চান। সেখানে ছোট থেকে সমস্ত দলের ফুটবলাররা যাতে অনুশীলন করতে পারেন। কোচেদের উন্নতির পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। কোচেদের জন্য যাতে স্থানীয় ভাষায় পরীক্ষা হয়, সে ব্যবস্থাও করতে চান তিনি।
কল্যাণের পিছনে বিজেপির প্রচ্ছন্ন সমর্থন থাকলেও ভাইচুং জানিয়েছেন, তিনি এখন কোনও জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। ফলে ফুটবলের উন্নতিতে কোনও দলের কাছে যেতেই বাধা নেই তাঁর। বলেছেন, “আমি যে কোনও রাজ্যে সাহায্যের জন্যে যেতে পারি। সেখানে কংগ্রেস, বিজেপি, এনসিপি, টিএমসি, জেডিইউ যে-ই ক্ষমতায় থাকুক না কেন। আমি কোনও জাতীয় স্তরের পার্টির সদস্য নই। রাজনৈতিক যোগাযোগ, বৈরিতার কারণে আগে অনেক সমস্যা হয়েছে। আমি চাই না আর সে রকম কোনও সমস্যা হোক। আমার জ্ঞান রয়েছে, অভিজ্ঞতা রয়েছে, ভাল পরিকল্পনা রয়েছে। তাই আত্মবিশ্বাসী যে ভাল কাজ করতে পারব।”