কামিংস এবং পেত্রাতোস। — ফাইল চিত্র।
লিগ-শিল্ড জয় করেও হারতে হয়েছে আইএসএলের কাপ ফাইনালে। তবে গত মরসুম ইতিমধ্যেই ভুলে গিয়ে সামনের দিকে তাকানো শুরু করে দিয়েছে মোহনবাগান। একটা মরসুম শেষ হতেই পরের মরসুমের দল গড়ার ভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর সেখানে সবচেয়ে চর্চিত নাম জেমি ম্যাকলারেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপার আগেই জানিয়েছিলেন তিনি মেলবোর্ন সিটি ছাড়তে চলেছেন। সেই পোস্টে দিমিত্রি পেত্রাতোস ‘কমেন্ট’ করতেই জল্পনা শুরু হয়। শোনা গিয়েছে, ম্যাকলারেনকে মোটা টাকার প্রস্তাব পাঠিয়েছে মোহনবাগান। সেই পোস্টে তিনি সম্মতিও জানিয়েছেন। তবে একটি বিষয় নিয়ে গোটা চুক্তি ঝুলে রয়েছে।
গত মরসুমে বিশ্বকাপার জেসন কামিংসকে সই করিয়েছিল মোহনবাগান। তার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে কামিংসের। যদি ম্যাকলারেন ভারতে খেলতে আসেন, তাঁরও জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। অস্ট্রেলিয়ার কোচ গ্রাহাম আর্নল্ড এ ব্যাপারে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার লিগের থেকে নীচে রয়েছে, এমন কোনও লিগে খেলা ফুটবলারদের জাতীয় দলে নিতে চান না তিনি। তাইল্যান্ডের ক্লাব বুরিরাম ইউনাইটেডে যোগ দিতে চলা ম্যাট লেকির ক্ষেত্রেও একই ভাবনা কাজ করতে পারে।
জাতীয় দলের দরজা পাকাপাকি বন্ধ করে ম্যাকলারেন আসবেন কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন অসি ফুটবলার। কিন্তু মোহনবাগানের অর্থের প্রস্তাবও ফেলে দিতে পারছেন না। তাঁকে নিতে ঝাঁপিয়েছে মুম্বই সিটিও। কারণ মুম্বইয়ের কোচ পিটার ক্রাকতি অতীতে মেলবোর্নের ক্লাবের কোচ থাকায় ম্যাকলারেনের সঙ্গে তাঁর সমীকরণ ভাল। তবে একাংশের মতে, ম্যাকলারেন সিটি গ্রুপের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছেন।
এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কথা মাথায় রেখে মোহনবাগানে আরও কিছু বদল হতে পারে। ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে বদলের সম্ভাবনা নেই। সবার সঙ্গেই লম্বা চুক্তি। পরের মরসুমে আশিক কুরুনিয়ান ফিট হয়ে গেলে দল আরও শক্তিশালী হবে। তাই বদলের ভাবনা বিদেশিদের নিয়েই। তবে কিয়ান নাসিরি সম্ভবত চেন্নাইয়িন এফসি-তে যোগ দিচ্ছেন।
শোনা গিয়েছে, জনি কাউকোকে ছেঁটে ফেলা হতে পারে। তাঁর জায়গায় ইরানের জাতীয় দলের ফুটবলার রুজ়বে চেশমিকে নেওয়া হতে পারে। তিনি ইরানের ক্লাব এস্তেঘলালে খেলেন। কাউকোর মতোই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। সেন্টার ব্যাকেও খেলতে পারেন। বিশ্বকাপে ওয়েলসের বিরুদ্ধে গোল রয়েছে।
ডিফেন্ডার ব্রেন্ডন হামিল এবং ফরোয়ার্ড আর্মান্দো সাদিকু যে বাদ পড়তে চলেছেন তা এক রকম নিশ্চিত। দুই জায়গাতেই বিকল্প খুঁজছে মোহনবাগান। যদি আরও বিকল্প পাওয়া যায় তা হলে হেক্টর ইয়ুস্তেকেও ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। ভাল খেললেও বয়সই ৩৬ বছরের ইয়ুস্তেকে পিছিয়ে রাখছে। এ ছাড়া, হুগো বুমোসের সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন করতে পারে মোহনবাগান।
সবুজ-মেরুন যখন দল বদলের লড়াইয়ে নেমেছে, তখন বাকি দুই প্রধান কী করছে? ডেভিড লালানসাঙ্গা এবং দেবজিৎ মজুমদারকে নিশ্চিত করার পর ইস্টবেঙ্গল ঝাঁপিয়েছিল মুম্বইয়ের বিনিত রাইয়ের দিকে। কিন্তু তিনি পঞ্জাবের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। আপাতত ভাল দেশীয় ফুটবলার নেওয়ার চেষ্টায় ইস্টবেঙ্গল।
মহমেডানে রয় কৃষ্ণের আসা নিয়ে জোর জল্পনা ছড়িয়েছিল। তবে মহমেডান চাইছে আরও ভাল কোনও ফুটবলার আনতে। এর জন্যে অনেকটা অর্থ খরচ করতেও কার্পণ্য করতে চাইছে না তারা।