স্টপার
Juan Ferrando

ATKMB: কৃষ্ণদের মনোবল ফেরানোই বড় পরীক্ষা কোচের 

প্রথম দুটি ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্স ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে জয়ের পরে কিছু বোঝা যায়নি।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৬
Share:

লক্ষ্য: এটিকে-মোহনবাগানে সুদিন ফেরাতে চান জুয়ান। টুইটার

অষ্টম আইএসএলে শেষ চার ম্যাচে জয় নেই এটিকে-মোহনবাগানের। এই ব্যর্থতার জন্য ইতিমধ্যেই বরখাস্ত হয়েছেন আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। দায় কি একা কোচের? খারাপ ফলের জন্য ক্লাব কর্তারাও তো সমান দায়ী। এই দলের সব ফুটবলারকে তো হাবাস নেননি। কর্তারা সই করিয়েছেন।

Advertisement

আইএসএলে সবচেয়ে সফল কোচ হাবাস। দু’বার এটিকে-কে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। গত মরসুমে ফাইনালে তুলেছিলেন সবুজ-মেরুনকে। প্রথম বছর থেকেই দেখেছি, হাবাসের রণনীতিই হল নিজের ঘর সুরক্ষিত রেখে আক্রমণের কথা ভাবা। এই কারণেই ওঁর দলের খেলা দেখতে অনেকেই পছন্দ করেন না। আমি মনে করি, এই স্পেনীয় কোচ অত্যন্ত বাস্তববাদী। ঝুঁকিহীন ফুটবল খেলেন। তাই কে কী বলছেন, তা নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাতেন না। ওঁর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলের জয়। দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপহার দেওয়া নয়। রক্ষণ, মাঝমাঠ ও আক্রমণ ভাগের অসাধারণ বোঝাপড়া থাকত। বিপক্ষ দল যখন আক্রমণে উঠত, তখন রক্ষণের শক্তি বাড়াতে রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিংহরাও নেমে আসত। এই কারণেই গত মরসুমে আইএসএলের লিগ পর্বে সবচেয়ে কম গোল খেয়েছিল ওরা। ২০ ম্যাচে ১৫টি।

অষ্টম আইএসএলেই দেখলাম অন্য ছবি। সম্পূর্ণ বদলে যাওয়া এটিকে-মোহনবাগান। অচেনা হাবাস। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলছে ওরা। রক্ষণে অসংখ্য ফাঁকফোকর। বিস্মিতই হয়েছিলাম। এত দ্রুত কী ভাবে নিজেকে বদলে ফেললেন হাবাস! সব কোচই প্রতিপক্ষ অনুযায়ী রণকৌশলে সামান্য পরিবর্তন করেন। কখনওই সম্পূর্ণ বদলে ফেলেন না।

Advertisement

রক্ষণের অন্যতম ভরসা সন্দেশ জিঙ্ঘন দল ছেড়েছে। হাভিয়ের হার্নান্দেস, প্রণয় হালদারও নেই। মুম্বই সিটি এফসি থেকে হুগো বুমোস, হায়দরাবাদ এফসি থেকে লিস্টন কোলাসো যোগ দিয়েছে এটিকে-মোহনবাগানে। দু’জনেই আক্রমণাত্মক ফুটবলার। এই কারণেই কী রণনীতি বদলে ফেলেছেন স্পেনীয় কোচ? তখনও জানতাম না যে, হাবাস নিজে আনেননি বুমোসদের। টিম ম্যানেজমেন্টের পছন্দের ফুটবলার ওরা। জানি না, রণনীতি বদলাতেও কি বাধ্য করা হয়েছিল হাবাসকে?

প্রথম দুটি ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্স ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে জয়ের পরে কিছু বোঝা যায়নি। সমস্যা শুরু হল মুম্বইয়ের কাছে এটিকে-মোহনবাগান ১-৫ গোলে হারার পর থেকে। ছয় ম্যাচে দুই জয়, দুই হার, দুই ড্র। করেছে ১৩ গোল। খেয়েছেও ১৩টি গোল। অনেকেই বলবেন, রক্ষণের ব্যর্থতার জন্যই এত গোল খেয়েছে প্রীতম কোটালরা। আমার মতে দায়ী ভুল রণনীতি। কোচকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে না দিলে সাফল্য পাওয়া যায় না। জানি না, হাবাসের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল কি না।

হাবাসের পরিবর্তে জুয়ান ফেরান্দোকে নতুন কোচ নিয়োগ করেছে এটিকে-মোহনবাগান। ওর বয়স কম। জুয়ানের কোচিংয়ে গত মরসুমে এফসি গোয়া দারুণ খেলেছিল। পাসিং ফুটবলই অস্ত্র ওর। কিন্তু এটিকে-মোহনবাগানে কাজটা অনেক কঠিন হবে জুয়ানের। এই দলটা ও তৈরি করেনি। এমন একটা সময় দায়িত্ব নিচ্ছে, যখন সবুজ-মেরুন অন্দরমহলের আবহ রীতিমতো উত্তপ্ত। হাবাসের বিদায়কে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়ে গেলেও অবাক হওয়ার নেই। রয় কৃষ্ণ-সহ এই দলের অনেক খেলোয়াড় হাবাসের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে আছে। তাই বিদায়ী কোচের প্রতি তাদের আনুগত্য থাকতেই পারে।

জুয়ানের এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত, ড্রেসিংরুমে শান্তি রক্ষা করা। ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মনোবল ফেরানো, আস্থা অর্জন করা। এখন কোচের চেয়েও বেশি করে দরকার উদ্বুদ্ধ করার মতো অগ্রজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement