ত্রয়ী: সবুজ-মেরুনের ভরসা রয় কৃষ্ণ, কাউকো ও বুমোস। টুইটার
গত বছর প্রথম বার এটিকে-মোহনবাগানের কোচ হিসেবে আইএসএল জয়ের ইচ্ছাপূরণ হয়নি। ট্রফির কাছে পৌঁছেও ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হারতে হয়েছিল স্পেনীয় কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসকে। তাই এ বার খেতাব জিততে মরিয়া তিনি। শুক্রবার আইএসএলে প্রথম ম্যাচের আগে ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দেন, ‘‘জিততে হবে। এর বাইরে কিছু ভাবার অবকাশ নেই।’’
প্রথম ম্যাচে এটিকে-মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স। গত বছরও কেরলের দলটির বিরুদ্ধে খেলেই অভিযান সূচনা করেন হাবাস। এবং সাপ-লুডোর মতো লিগের উত্থান-পতন অতিক্রম করে রয় কৃষ্ণেরা রানার্স হন। সেখানে দু’বার ফাইনাল খেলা কেরলের দলটি হয় দশম। হাবাস সে সব নিয়ে ভাবতে নারাজ। গত বছর বাঁ প্রান্ত দিয়ে ধারাবাহিক আক্রমণ তৈরি হচ্ছিল না। মাঝমাঠ থেকে কৃষ্ণরাও সে ভাবে গোলের বল পাননি। এ বার কিন্তু মাঝমাঠের ‘জাদুকর’ আখ্যা পাওয়া হুগো বুমোস তাঁর দলে। বাঁ প্রান্তে এসেছেন গতিময় লিস্টন কোলাসো। সঙ্গে ইউরো ২০২০-তে ফিনল্যান্ডের হয়ে খেলে আসা মিডফিল্ডার জনি কাউকো। সমর্থকেরা তাই বুঝতে পারছেন না, চার বিদেশির মধ্যে
কারা খেলবেন।
অবধারিত ভাবে সাংবাদিক সম্মেলনে উঠল সে প্রশ্নও। দু’টি আইএসএল জয়ী স্পেনীয় কোচ কিন্তু চেনা মেজাজে বলে দিলেন, ‘‘কাজটা কঠিন। কিন্তু তার জন্যই তো বেতন পাই।’’ যোগ করেন, ‘‘পরিস্থিতি বুঝে সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাব। আমার দল তৈরি। একজন বিদেশি এ বার কমেছে। তার জায়গায় এক জন ভাল মানের ভারতীয়
ফুটবলার দরকার।’’
এটিকে-মোহনবাগানের বৃহস্পতিবারে অনুশীলন দেখে মনে হয়েছে, গোলে অমরিন্দর সিংহকে রেখে রক্ষণে তিন ফুটবলার প্রীতম কোটাল, কার্ল ম্যাকহিউ ও শুভাশিস বসুকে খেলাতে পারেন কোচ। মাঝমাঠে তাঁর পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে দুই প্রান্তে মনবীর সিংহ (ডান দিকে) ও লিস্টন কোলাসোর (বাঁ দিকে) খেলার সম্ভাবনা বেশি। বিপক্ষের আক্রমণ ভাঙা ও রক্ষণের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার জন্য থাকতে পারেন লেনি রদ্রিগেস ও দীপট টাংরি। তাঁদের সামনে জনি। এবং আক্রমণে জোড়া ফলা কৃষ্ণ ও হুগো।
হাবাস অবশ্য চূড়ান্ত দল বাছবেন শেষ মুহূর্তে। তা হলেও, আক্রমণে জনি-হুগো-কৃষ্ণের ত্রিভুজই এ বার তাঁর পাশুপাত। বলছেন, ‘‘কেমন ফুটবলার রয়েছে তার উপরে নির্ভর করবে আমরা কী ভাবে ফুটবল খেলব। বেশি আক্রমণাত্মক, না রক্ষণাত্মক, না ভারসাম্যের ফুটবল— তা খেলোয়াড় দেখে ঠিক করব।’’
প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্স দলে এ বার নতুন কোচ সার্বিয়ার ইভান ভুকোমানোভিচ। ১০০ দিনেরও বেশি প্রস্তুতি শিবির করেছেন তিনি। কলকাতায় ডুরান্ড কাপে একটি মাত্র ম্যাচ জিতে ছিটকে গিয়েছিল তাঁর দল। তার পরে কেরল ইউনাইটেড, ওড়িশা এফসি-সহ একাধিক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে হলুদ জার্সিধারীরা।
‘এ’ লিগ চ্যাম্পিয়ন মেলবোর্ন সিটির মিডফিল্ডার উরুগুয়ের আদ্রিয়ান লুনা, চেন্নাইয়িন এফসি-র এনেস সিপোভিচ, আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড হর্হে পেরেরা দিয়াস, ক্রোয়েশিয়ার জাতীয় দলের প্রাক্তন স্টপার মার্কো লেসকোভিচ, স্পেনীয় আলভারো ভাস্কেজরা থাকায় কেরলও শক্তিশালী। সঙ্গে রয়েছেন হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরা, ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলা সঞ্জীব স্তালিনরাও।
কেরল দল নিয়ে হাবাস বলছেন, ‘‘ওদের সম্পর্কে বিশ্লেষণ হয়েছে। বিপক্ষকে শ্রদ্ধা করি। তবে নিজেদের দল কেমন সেটাই ৮৫ শতাংশ গুরুত্বপূর্ণ। বাকি ১৫ শতাংশ বিপক্ষের খেলার উপরে নির্ভর করবে।’’ কেরল কোচ ভুকোমানোভিচের মন্তব্য, ‘‘গত বছর কী হয়েছিল, তা অতীত। এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নতুন করে শুরু করতে চাই। আমার দলে প্রতিভার অভাব নেই। ওরা নিরাশ করবে না।’’
শুক্রবার আইএসএলে: এটিকে-মোহনবাগান বনাম কেরল ব্লাস্টার্স, সন্ধে ৭.৩০ থেকে। স্টার স্পোর্টস টু, স্টার স্পোর্টস থ্রি-তে সম্প্রচার।