গোলের পর ব্রুনো ফের্নান্দেসের ব্যাঙ্গাত্মক উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।
কথায় আছে, ফুটবলে শেষ বাঁশি বাজার আগে কেউ জেতে না। রবিবারের ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি আরও এক বার সেটা বুঝিয়ে দিল। ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কাছে পিছিয়ে থাকার পর খেলা ঘুরিয়ে দিল ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। সিটির মাঠ এতিহাদ স্টেডিয়ামে গিয়ে ২-১ গোলে জিতল তারা। পেনাল্টি আদায় এবং গোল করে ইউনাইটেডের নায়ক আমাদ দিয়ালো।
একটি ম্যাচ বেশি খেলে লিগ শীর্ষে থাকা লিভারপুলের থেকে নয় পয়েন্টে পিছিয়ে পড়ল সিটি। ১৬ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে তারা। টানা পাঁচ বার লিগ জয়ের আশা কার্যত শেষ। ১৬ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে ম্যান ইউ।
শেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে একটি ম্যাচ জিতে খেলতে নেমেছিল পেপ গুয়ার্দিওলার সিটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, প্রিমিয়ার লিগ সব জায়গায় ড্র বা হারই সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের। তবে ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি বরাবরই সম্মানের লড়াই। এই একটা ম্যাচের ফলাফল রাতারাতি কাউকে নায়ক করে দিতে পারে। আবার মাটিতে আছড়ে ফেলতেও পারে।
সেই ম্যাচে প্রথমার্ধে জোসকো গাভার্দিয়লের গোলে কিছুটা আচমকাই এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। সেই লিড তারা ধরে রেখেছিল ৮৭ মিনিট পর্যন্ত। কে জানত শেষ কয়েক মিনিটে খেলা এ ভাবে বদলে যাবে। খেলা ঘুরিয়ে দিলেন দিয়ালো। প্রথমে ব্রুনো ফের্নান্দেসের পাস ধরে ম্যান সিটির বক্সে ঢুকে পড়ার পর তাঁকে ফাউল করেন রুবেন দিয়াস। পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান ব্রুনো। কয়েক মিনিট পরে লিসান্দ্রো মার্তিনেসের নিখুঁত পাস ধরে ম্যান সিটি গোলকিপার এদেরসনকে বোকা বানিয়ে জয়সূচক গোল করেন দিয়ালো নিজেই।
তবে খেলা যে বিশ্বমানের হয়ে সে কথা বলা যাবে না। সিটির ঘরের মাঠে দাপটে শুরু করেছিল ইউনাইটেডই। বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদেরই পায়ে। সিটি সে সময় রক্ষণ সামলানোর দিকেই মন দিয়েছিল। যত খেলা এগোল, তত লড়াই হতে থাকল মাঝমাঠে। দু’-একটি সুযোগ ছাড়া কোনও দলই বিপক্ষের বক্সে হানা দিতে পারেনি।
গাভার্দিয়লের গোলটা আসে কিছুটা খেলার বিপরীতেই। বাঁ দিক থেকে কেভিন দ্য ব্রুইনির ক্রসে ম্যান ইউয়ের তিন ডিফেন্ডারের মাঝ থেকে টপকে গোল করেন গাভার্দিয়ল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সিটির খেলায় আর সেই ঝাঁজ লক্ষ করা যায়নি। ফিল ফোডেনের অফ ফর্মে থাকা, দ্য ব্রুইনির ছন্দ হারানো, বল বিতরণ করার সঠিক ফুটবলার না থাকা— ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে সিটি ঝাঁজহীন হয়ে পড়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে তারা বিপক্ষের গোলে একটিও শট নিতে পারেনি।
এমন নয় যে ইউনাইটেডও দারুণ খেলেছে। শেষ দিকের দাপট বাদে দিয়ালো শুরু থেকে সে ভাবে কিছুই করতে পারেননি। তবে ইউনাইটেড যে ক’টি ভাল সুযোগ তৈরি করেছে সবক’টিতেই ভূমিকা নিয়েছেন।