কল্যাণকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন আইএফএ সভাপতি সুব্রত দত্ত এবং চেয়ারম্যান অজিত বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নিজস্ব চিত্র
সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) সভাপতি হয়ে প্রথম বার আইএফএ দপ্তরে এসেছিলেন কল্যাণ চৌবে। জেলাভিত্তিক লিগগুলিকে যাতে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেই আবেদন করলেন তিনি। কল্যাণের মতে, যে কোনও রাজ্য ফুটবল সংস্থার কাছে সেটাই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। পাল্টা আইএফএ-র তরফে কল্যাণের কাছে আবেদন করা হল, কলকাতা লিগের জন্য বছরে অন্তত দু’-তিন মাস মঞ্জুর করার।
আইএফএ-র চেয়ারম্যান অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ৩০০-র উপর ক্লাব রয়েছে। বছরে ১৭০০-১৮০০ ম্যাচ খেলা হয়। তিন মাসের একটা সময় যদি আমরা পাই, তা হলে লিগটা সম্পূর্ণ করতে পারব। এখনকার অবস্থা দেখুন, সুপার সিক্স নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। মাঠ পাচ্ছি না। তাই আমার অনুরোধ, একটা সময় দেওয়া হোক। এত বড় লিগ আর কোনও রাজ্যে হয় না। আমরা যদি স্থানীয় লিগের উন্নতি না করতে পারি, তা হলে বাংলার ফুটবলের উন্নতি হবে না।”
অজিতের কথায় সম্মতি দেন কল্যাণ নিজেও। পাশাপাশি তিনি বলেন, “প্রতিটি জেলায় ২০-৩০টি ক্লাব রয়েছে। কিছু ক্লাবকে যদি একে অপরের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে সঠিক পরিকাঠামো অনুসরণ করা যায়, তা হলে অনেক পরিকল্পিত ভাবে লিগ হতে পারে। আমাদের প্রাথমিক কাজ জেলাভিত্তিক লিগ করা। বেশির ভাগ ফুটবলার আসে গ্রামবাংলা থেকে। সেটা নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করতে হবে। জেলার ম্যাচ যেমন-তেমন করে চললে হবে না। জেলার লিগে যাতে কোনও বৈষম্য না থাকে এবং ভারসাম্য থাকে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।”
এ বিষয়ে তিনি এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন আইএফএ সভাপতি সুব্রত দত্তকে। বলেছেন, “সুব্রতদা-র এ ব্যাপারে অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ওঁর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা আশা করি। জেলা লিগের প্রধান হিসাবে যদি সুব্রতদা দায়িত্ব নেন, তা হলে ভাল হয়। কৃষ্ণনগর, বসিরহাট, মালদা— সব জায়গায় লিগ করতে হবে।”
সম্প্রতি কাতারে ঘুরে এসেছেন এআইএফএফ সভাপতি। দেখা করেছেন ফিফা সভাপতি এবং কাতার ফুটবল সংস্থার প্রধানের সঙ্গে। সেই প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেছেন, “আমি ফিফা সভাপতির কাছে ১৫ মিনিট সময় চেয়েছিলাম। তবে প্রায় ৮০ মিনিট আমাদের কথা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর উনি ভারতে আসবেন। ৩১ অক্টোবর অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালে থাকবেন। সে দিনই উনি বলবেন, ভারত কী ভাবে ফিফার থেকে লাভবান হতে পারে।”
ভারতের রেফারিদের মানোন্নয়নের দাবিও ফিফা সভাপতির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানালেন কল্যাণ। তাঁর কথায়, “আমি ওঁকে বললাম, ভারত কবে বিশ্বকাপ খেলবে জানি না। কিন্তু ভারতের রেফারিরা তো বড় ম্যাচ পরিচালনা করতেই পারে। উনি বেশ আগ্রহ নিয়ে শুনলেন। তার পর বললেন, ফিফার রেফারি কমিটির প্রধান পিয়েরলুইগি কলিনাকে অনুরোধ করবেন, যাতে ভারতের রেফারিদের সঠিক ভাবে পরিচালনা করা হয়। তবে উনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, রেফারিদেরও ফুটবলারদের মতো ফিট থাকতে হবে। ফুটবলারদের মতো জীবনযাপন করতে হবে। আমি বলেছি, রেফারি অ্যাকাডেমি তৈরি করতে চাই। আপনি আমাদের সঠিক পথ বাতলে দিন। উনি সেই আশ্বাসও আমাদের দিয়েছেন। পাশাপাশি, কাতারের সঙ্গে স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো নিয়ে কথা হয়েছে। সে ব্যাপারে ওরা সাহায্য করবে। ভারতের সেরা ফুটবলাররা যাতে কাতারের অ্যাকাডেমিতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারে, সেই ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি।”