সমস্যায় ভারতের মহিলা ফুটবল দল ছবি: টুইটার
মহিলাদের এশিয়া কাপ ফুটবলে অভিযান শুরু করার ঠিক আগে বড় ধাক্কা খেল ভারতীয় দল। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে ইরানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলতে নামার কথা ভারতের। তার আগে দুই ফুটবলারের কোভিড পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে।
জানা যাচ্ছে, যে দু’ জনের কোভিড হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন ম্যাচের আগেই সম্ভবত সুস্থ হয়ে যাবেন। কারণ গত ১৫ জানুয়ারি তিনি পজিটিভ হয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় জনের খেলার কোনও সম্ভাবনাই নেই। তাঁর বুধবার করোনা হয়েছে।
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) টুইট করে জানিয়েছে, ‘দুই ভারতীয় ফুটবলারকেই নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। এএফসি-র কোভিড বিধি মেনেই এআইএফএফ চলছে। ফুটবলারদের স্বাস্থ্যই অগ্রাধিকার পাচ্ছে ফেডারেশনের কাছে।’
একটি সূত্র মারফৎ পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে। সব ফুটবলারকেই আলাদা আলাদা ঘরে রাখা হয়েছে। হোটেলকর্মীরা আপাতত বাড়ি যেতে পারছেন না। খাওয়ার সময় এক একটি টেবিলে দু’ জনের বেশি বসতে দেওয়া হচ্ছে না।
ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল প্রফুল্ল পটেল সোমবার জানিয়েছিলেন, যদি দু’টি দলের অন্তত ১৩ জন করে ফুটবলার পাওয়া যায়, তা হলে ম্যাচ বাতিল হবে না। তিনি এটিও জানিয়েছেন, শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বিকল্প ব্যবস্থাও তাঁদের তৈরি আছে।
এ দিকে এই এএফসি এশিয়ান কাপে সাফল্য পেলে আগামী বছর বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারবে ভারত। গত পাঁচ মাস ধরে যে ভাবে দলের প্রস্তুতি হয়েছে, যে ভাবে তাঁরা বিদেশে প্রস্তুতি সফর করেছেন, এই ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী ভারতীয় মহিলা দলের কোচ থমাস ডেনারবি। তাঁর বক্তব্য, “অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে দলটা এক সঙ্গে রয়েছে। অনুশীলন, ট্রেনিং, প্র্যাকটিস ম্যাচ মিলিয়ে ২০০-রও বেশি সেশন করেছি আমরা। আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে মেয়েরা। মনে হচ্ছে আমরা প্রস্তুত। আশা করি, এই প্রতিযোগিতায় তার প্রতিফলন দেখা যাবে।’’
কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পরীক্ষাটা বেশ কঠিন। কারণ, গ্রুপ পর্বেই ভারতকে খেলতে হবে ইরান, চিন ও চিনা তাইপের বিরুদ্ধে।
নাইজেরিয়ার মহিলা দলের সঙ্গে কাজ করে আসা সুইডিশ কোচ ডেনারবির বক্তব্য, “কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারলে যে কোনও কিছু হতে পারে। নক আউট পর্বে কে কেমন খেলবে, তা আগে থেকে আন্দাজ করা বেশ কঠিন। প্রত্যেক দলই চাপে থাকবে। তাই কোয়ার্টার ফাইনালই আপাতত আমাদের লক্ষ্য।’’
মোট ১২টি দলকে নিয়ে দেশের তিনটি কেন্দ্রে এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে। দলগুলিকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি দলকে গ্রুপের বাকি তিন দলের মুখোমুখি হতে হবে। প্রতি গ্রুপ থেকে প্রথম দুই দল সরাসরি যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। এ ছাড়া তিন গ্রুপের তৃতীয় স্থানাধিকারী দলগুলির মধ্যে সেরা দু’টি দল শেষ আটে উঠবে। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচগুলি হবে ৩০ জানুয়ারি। সেমিফাইনাল ৩ ফেব্রুয়ারি ও ফাইনাল ৬ ফেব্রুয়ারি।
শেষ চারে যারা যাবে, আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে মহিলাদের বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। কোয়ার্টার ফাইনালে যারা হারবে, আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে জিতে তারা বিশ্বকাপের মূল পর্বে যেতে পারে।
প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইরানকে নিয়ে বেশ চিন্তায় ভারতীয় দলের কোচ। বলেন, ‘‘ওদের রক্ষণ বেশ শক্তিশালী এবং সঙ্ঘবদ্ধ। তা ছাড়া ওদের এমন একজন স্ট্রাইকার আছে, যাকে কেন্দ্র করে প্রতি আক্রমণে ওঠে ইরান। ফলে আমাদের রক্ষণকে সব সময় তৈরি থাকতে হবে। সেট পিসেও ওরা যথেষ্ট ভাল। কর্নার ও ফ্রি কিক থেকে প্রচুর গোল করেছে। তাই এই দিকেও তৎপর ও সজাগ থাকতে হবে।’’
চিনা তাইপের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচটি নিয়ে ডেনারবির বক্তব্য, “ওরা একেবারে এশিয়ান ঘরানার ফুটবল খেলে। ছোট ছোট পাসে ভাল কম্বিনেশনে খেলে ওরা। ওই ম্যাচটাও কঠিন হবে।’’