সুনীলের জোড়া গোল। ছবি টুইটার
যুবভারতীর জনসমর্থন চেয়েছিলেন সুনীল ছেত্রীরা। সেই জনসমর্থন মিলল। তবে এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের খেলা পুরোপুরি মন ভরাতে পারল না। গোটা ম্যাচেই অসংখ্য সুযোগ নষ্ট করলেন ভারতের ফুটবলাররা। সেগুলি গোল হলে ব্যবধান বাড়তে পারত। সুনীলের জোড়া গোলে কম্বোডিয়াকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম ম্যাচে জিতল ভারত। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৮২টি গোল হয়ে গেল সুনীলের।
কম্বোডিয়ার কোচ হিসাবে জাপানের প্রাক্তন বিশ্বকাপার কিউসুকে হোন্ডা ছিলেন বটে। তবে ম্যাচে ক’বার তাঁর দলের ফুটবলাররা আক্রমণে উঠেছেন সন্দেহ। দু’-একটি শট ছাড়া বাকি সময়টা ভারতের আক্রমণ বাঁচাতেই ব্যস্ত থাকলেন। ম্যাচের রাশ থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ, সবই ছিল ভারতের হাতে। আক্রমণ করলেই বিপক্ষ দল পায়ের জটলা তৈরি করে ফেলায় গোল হয়নি।
কলকাতায় ‘শ্বশুরবাড়ি’তে ফিরেছিলেন সুনীল। যাবতীয় আকর্ষণ ছিল তাঁকে ঘিরেই। দলের তালিকায় তাঁর নাম স্টেডিয়ামের স্পিকারে ঘোষণা হওয়ামাত্রই যে চিৎকারটা হল, সেটা বুঝিয়ে দিল যে দর্শকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি ভুল করেননি। এর আগে মুম্বইয়ে ভারতের ম্যাচ থাকাকালীন এক বার সমর্থকদের মাঠে আসার আবেদন করেছিলেন সুনীল। অন্ধেরি স্পোর্টস কমপ্লেক্স ভরে গিয়েছিল সমর্থকে। যুবভারতী পুরোপুরি না ভরলেও যে পরিমাণ সমর্থক এলেন, তাতে কান ফাটানো আওয়াজের কমতি হল না।
সামনে মনবীর সিংহকে রেখে দল নামিয়েছিলেন ভারতের কোচ ইগর স্তিমাচ। সুনীল খেলছিলেন একটু পিছন থেকে। দুই প্রান্তে তাঁকে সাহায্য করার জন্য ছিলেন ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ এবং লিস্টন কোলাসো। প্রথম থেকেই ভারত চাপে রেখেছিল কম্বোডিয়াকে। মূলত দু’টি উইং ধরেই আক্রমণ হচ্ছিল। প্রথম কয়েক মিনিটেই অন্তত দু’টি গোলের সুযোগ চলে এসেছিল ভারতের কাছে। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝির জন্য তারা এগিয়ে যেতে পারেনি।
তবে প্রথম গোলের জন্যে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ১২ মিনিটেই বক্সের ভেতরে লিস্টন ফাউল করেন কম্বোডিয়ার চোউন চানচাভ। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সুনীল ভারতকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি। প্রথমার্ধে ভারতেরই দাপট বজায় থাকে। মাঝে এক বার সুনীল সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। ৪১ মিনিটে আকাশ মিশ্রের শট বাঁচিয়ে দেন কম্বোডিয়ার গোলকিপার সিউই ভিসাল।
দ্বিতীয়ার্ধেও ভারতের আক্রমণ বজায় ছিল। তবে এ বার আরও বেশি সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নেমেছিল কম্বোডিয়া। তবে সাহাল আবদুল সামাদ এবং উদান্ত সিংহকে নামিয়ে মাঝমাঠ আরও সচল করে দিলেন স্তিমাচ। ফলও মিলল। ৫৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোল সুনীলের। ব্রেন্ডনের ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে গোল করার সময় কেউ তাঁকে মার্ক করেননি। কিছু ক্ষণ পরে সুনীলকে বসিয়ে দেন স্তিমাচ। তবে যাঁরা নেমেছিলেন তাঁরা ব্যবধান বাড়াতে পারেননি। সুযোগ নষ্ট এবং কম্বোডিয়ার রক্ষণাত্মক মনোভাব না থাকলে ব্যবধান আরও বাড়ত।