আত্মবিশ্বাসী: গোয়ার কোচ খুয়ানের সামনে কঠিন পরীক্ষা।
ভারতের প্রথম ফুটবল ক্লাব হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন করে গত মরসুমেই ইতিহাস গড়েছিল এফসি গোয়া। কাল, বুধবার এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায় যাত্রা শুরু করছেন হর্ঘে ওর্তিস, ঈশান পণ্ডিতারা। প্রথম ম্যাচে গোয়ার প্রতিপক্ষ কাতারের আল রায়ান এসসি। যে দলের কোচ ১৯৯৮ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স দলের অন্যতম সদস্য লরা ব্লঁ!
সপ্তম আইএসএলে গোয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছিল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে মুম্বই সিটি এফসির কাছে টাইব্রেকারে হেরে। কিন্তু ইগর আঙ্গুলোদের পাসের বন্যায় বিপক্ষকে ভাসিয়ে দেওয়ার ফুটবল মুগ্ধ করেছিল ফুটবলপ্রেমীদের। নেপথ্যে কোচ খুয়ান ফেরান্দোর রণনীতি।
চোটের কারণে বার্সেলোনা ‘বি’ দলের এই প্রাক্তনীর ফুটবল জীবনে যবনিকা নেমে এসেছিল অকালেই। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই খুয়ান কোচিং শুরু করেন। গত বছর গ্রিসের ক্লাব ভোলোস ছেড়ে তিনি গোয়ার দায়িত্ব নেন। ফুটবলারদের সঙ্গে ৪০ বছর বয়সি স্পেনীয় কোচের সম্পর্ক বন্ধুর মতো। এই কারণেই মুম্বইয়ের কাছে হারের পরে ফুটবলারেরা যাতে হতাশা কাটিয়ে উঠতে পারেন, তার জন্য দেড় সপ্তাহের ছুটি দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার গোয়া থেকে খুয়ান বললেন, ‘‘এশিয়ার সেরা ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের খেলতে হবে। কঠিন লড়াইয়ে নামার আগে ফুটবলারদের ছুটি দেওয়া জরুরি ছিল। যাতে ওরা তরতাজা হয়ে খেলতে পারে। ’’
এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কঠিন গ্রুপে পড়েছে গোয়া। আল রায়ান এসসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ তাদের ১৪ ও ২৬ এপ্রিল। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আল ওয়াহাদা এফসি-র বিরুদ্ধে ঈশানরা খেলবেন ১৭ ও ২৯ এপ্রিল। এই গ্রুপের সব চেয়ে শক্তিশালী দল গত মরসুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রানার্স ইরানের পার্সিপোলিস এফসি-র বিরুদ্ধে গোয়ার ম্যাচ ২০ ও ২৩ এপ্রিল। গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি দ্বিতীয় পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। দ্বিতীয় স্থান থাকা দলেরও সুযোগ থাকবে দ্বিতীয় পর্বে খেলার। সব গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে যে তিনটি দলের পয়েন্ট বেশি থাকবে, তারা যোগ্যতা অর্জন করবে দ্বিতীয় পর্বে।
প্রতিপক্ষ যতই শক্তিশালী হোক, দর্শন বদলাতে রাজি নন পেপ গুয়ার্দিওলার ভক্ত খুয়ান। বললেন, ‘‘পাসিং ফুটবলই আমাদের অস্ত্র। কোনও অবস্থাতেই নিজেদের ঘরানা বদল করব না।’’ তবে দলের দুই সেরা অস্ত্রকেই তিনি পাচ্ছেন না এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। আইএসএলে সর্বোচ্চ গোলদাতা (১৪ গোল) হয়ে সোনার বুট জেতা ইগরের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে। মাঝমাঠের প্রধান ভরসা আলবের্তো নগুয়েরা দেশে ফিরে গিয়েছেন। পরিস্থিতি সামলাতে রোমিয়ো ফার্নান্দেসকে সই করিয়েছে গোয়া। ইগরের অভাব অনুভব করলেও তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে রাজি নন খুয়ান। বললেন, ‘‘ইগর অসাধারণ ফুটবলার। ও দলে থাকলে খুশি হতাম।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘আমাদের দলে আরও অনেক দুর্দান্ত ফুটবলার রয়েছে।’’ নগুয়েরার না থাকা? গোয়া কোচের কথায়, ‘‘অবশ্যই বড় ধাক্কা। তবে এই মুহূর্তে আমি পিছনের দিকে তাকাতে চাই না।’’