দাদা জিশানের সঙ্গে ফয়সাল । ছবি ফেসবুক
সকাল সাতটায় উঠে প্র্যাকটিস। তারপর এগারোটায় স্কুলে যাওয়া। স্কুল থেকে ফিরে পাড়ার মেডিকেল স্টোরে কাজ করে আবার প্র্যাকটিস। এটাই ক্লাস নাইন থেকে রোজকার রুটিন মহমেডানের মিডফিল্ডার ফয়সাল আলির। পার্ক সার্কাসের জান নগর রোডের ঘিঞ্জি বস্তি থেকে উঠে আসা ফয়সাল প্রথমবার মহমেডানের জার্সি পরে আই লিগের মঞ্চে গোল করায় দারুণ খুশি তিনি এবং তাঁর বাবা- মা।
বাড়ির আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। ২১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারের ওপরেই সংসারের সমস্ত আর্থিক দায়িত্ব। আনন্দবাজার ডিজিটালকে ফোনে ফয়সাল জানান, ‘‘বাড়িতে আর্থিক সমস্যা আছে অনেকটাই। আমার ওপরে দায়িত্ব অনেক। বাবা-মা সবসময় আমাকে সাহায্য করেছেন ফুটবলকে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে। আমি আরও একজনের কথা বলব। তিনি আমার পাড়ার দাদা জিশান আলি। ও আমায় সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ওর জন্যই আমি আজ এই জায়গায়।’’
কলকাতা গোলস প্রজেক্ট থেকে উঠে এসে ভবানীপুরে সুযোগ পান ফয়সাল। আই লিগ কোয়ালিফায়ারের পরই প্রস্তাব আসে মহমেডানের থেকে। এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে দেরি করেননি তরুণ এই মিডফিল্ডার। মহমেডানের জার্সি পরে গোল করা দারুণ এক অভিজ্ঞতা তরুণ এই ফুটবলারের কাছে। এ প্রসঙ্গে কিছুটা আবেগপ্রবণ ফয়সাল বলেন, ‘‘এটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। সমস্ত ফুটবলারের স্বপ্ন থাকে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল বা মহমেডানের জার্সি পরে গোল করার। সেটা করতে পেরে আমি দারুণ খুশি।’’
প্রথমার্ধে ভাল খেলেও গোল আসছিল না। বারবার আটকে পড়ছিলেন সাদা-কালো স্ট্রাইকার রাফায়েল ওডোইন। দ্বিতীয়ার্ধের ড্রিঙ্কস ব্রেকে জামাল ভূঁইয়া-সহ সতীর্থদের ফয়সাল বলেছিলেন, তাঁর উদ্দেশ্যে বল বাড়াতে। যে করেই হোক গোল করবেন তিনি। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে সুরজ রাওয়াতের পাস থেকে বল ধরে ডানদিক থেকে উঠে এসে গোল করে যান তিনি।
আরও পড়ুনঃ সুদেভার বিরুদ্ধে ফয়সালের একমাত্র গোলে জয় পেল মহমেডান
করোনার কারণে বায়ো বাবলে থাকতে হচ্ছে ফুটবলারদের। মাঝেমধ্যেই তা অসহ্য হয়ে উঠলেও লক্ষ্যে অবিচল থাকতে চান তিনি। জেদ ধরা পড়ল ফয়সালের গলায়, ‘‘বায়ো বাবলে থাকা খুব কঠিন। বাইরে বেরনো বারণ। কোথাও যেতে হলেই অনুমতি নিতে হচ্ছে। তবুও, আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে। টুর্নামেন্টটা জিততেই হবে।’
আরও পড়ুনঃ আমরাই চ্যাম্পিয়ন দল, ‘বড়’ ম্যাচের আগে হুঙ্কার প্রীতম কোটালের