ইস্টবেঙ্গল ১ (ডো ডং-পেনাল্টি)
মহমেডান ০
ডংয়ের পেনাল্টি গোলে চ্যাম্পিয়নের হাসি হাসল ইস্টবেঙ্গল।
কল্যাণীর গ্যালারিতে উড়়ল পতাকা, উঠল জয়ধ্বনি, ‘আসছে বছর আবার হবে’। হাতে হাতে ঘুরল ইলিশ। ডার্বিহীন কলকাতা লিগের শেষ হাসি হাসল লাল-হলুদ সমর্থকরাই।
সাতে সাত। কলকাতা লিগে টানা সাতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড করে ফেলল লাল-হলুদ। সঙ্গে ৩৮বার লিগ জয়ের স্বাদ। যদিও এখনও অফিশিয়ালি বাতিল ডার্বির পয়েন্ট দেওয়া হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে। ফুটবলের নিয়ম মেনে সেই পয়েন্ট যে অবধারিত ভাবে পাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল তা বলাই বাহুল্য। তাই আজই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। দলের সঙ্গে সাতে সাত করে অভিনব রেকর্ডের মালিক হয়ে গেলেন ইস্টবেঙ্গল মিড ফিল্ড জেনারেল মেহতাব হোসেনও। যদিও চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচে ভাল ফুটবল অধরাই থেকে গেল।
ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন। এমন অবস্থায় কলকাতা লিগের মিনি ডার্বি খেলতে কল্যাণী স্টেডিয়ামে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। তাই হয়তো উচ্চমানের ফুটবল উপহার দিতে পারল না লাল-হলুদ ব্রিগেড। উল্টো দিকে গোল না খাওয়ার পরিকল্পনা থেকে তেমন ভাবে আক্রমণেই গেল না মহমেডান। তাও প্রথমার্ধে একমাত্র পজিটিভ আক্রমণটা হল সেটা মহমেডানেরই। অতিরিক্ত সময় শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগের মুহূর্তে ডো ডং-এর উঁচু করে তোলা গোলমুখি শট ধরতে নিজের জায়গা ছেড়়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার দিব্যেন্দু। কিন্তু বলের নাগাল পেতে ব্যর্থ হন তিনি। বলের গতিকে মাত দিয়ে জায়গায় ফেরাও তখন আর সম্ভব ছিল না তাঁর পক্ষে। পিছন থেকে এসে সেই বল দক্ষতার সঙ্গে গোল লাইন থেকে ক্লিয়ার করেন কালাম আঙ্গাস। না হলে প্রথমার্ধের শেষে এক গোল হজম করেই মাঠ ছাড়তে হত।
প্রথমার্ধে কিছুটা ছন্নছাড়া ফুটবল। মিস পাস, বল কন্ট্রোলের অভাব, ওভারল্যাপে না যাওয়া সবই ছিল। কিছুটা যেন একে অপরকে মেপে নেওয়ার পালা চলছিল প্রথমার্ধে। সেই মেপে নেওয়ার প্রভাব অবশ্য দেখা গেল না দ্বিতীয়ার্ধে। তার মধ্যেই নজর কাড়লেন ইস্টবেঙ্গলের রাহুল ভেকে। যে কয়েকবার হাফ চান্স তৈরি হল তাতে রাহুলের ভূমিকা ছিল অনেকাংশেই। প্রথমার্ধে রাহুলের মাপা ক্রস মহমেডান বক্সের মধ্যে থেকে সঠিক জায়গায় জিতেন মুর্মু হেড করতে পারলে গোলের মুখ খুলতে পারত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তেমনটা হয়নি।
আরও পড়ুন...
মেয়েকে বলেছিলাম ক্লাসে ফার্স্ট হলে আমিও সোনা আনব
৫৭ মিনিটে ডিকার ফ্রিকিক থেকে মহমেডান গোলের মুখে জটলা তৈরি থেকে উত্তেজনার সৃষ্টি। দু’পক্ষের বাদানুবাদ যদিও বেশি দূর গড়ায়নি। তার পরই কাফ মাসলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়়েন মহম্মদ রফিক। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি বাড়ে অনেকটাই। যা থেকে পেনাল্টি ও গোল। বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়়া লালরিন ডিকা রালতেকে অপ্রয়োজনীয় ভাবেই ফাউল করেন মহমেডান গোলকিপার জেমস। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি ডং। তার পরই আরও একটি গোল পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অফ সাইডের জন্য তা বাতিল হয়। শেষ মুহূর্তে মহমেডানের দীপঙ্করের দুরন্ত শট ততোধিক দক্ষতার সঙ্গে ক্রসবারের উপর দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে বাইরে পাঠান ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার দিব্যেন্দু।
চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেও আরও একটি ম্যাচ বাকি থাকছে ইস্টবেঙ্গলের। এরিয়ানের বিরুদ্ধে খেলেই লিগ শেষ করবেন মেহতাবরা। সব ম্যাচ জিতে লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে টানা সাত বারের চ্যাম্পিয়নরা। এর আগে ১৯৭৫ ও ১৯৭৭ এ ‘অল-উইন’ রেকর্ড রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। এ বারও শেষ ম্যাচ জিতেই লিগ শেষ করতে মরিয়া টিম ইস্টবেঙ্গল। এই মুহূর্তে আট ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ২৪।ম্যাচের সেরা হয়েছেন ডিকা।
ইস্টবেঙ্গল: দিব্যেন্দু সরকার, সামাদ আলি মল্লিক (কৌশিক সরকার), অর্ণব মণ্ডল, কালাম আঙ্গাস, নারায়ন দাস, লালরিনডিকা রালতে, মেহতাব হোসেন, মহম্মদ রফিক (বিকাশ জাইরু), রাহুল ভেকে, ডো ডং হিউন (অবিনাশ রুই দাস), জিতেন মূর্মূ।
মহমেডান: জেমস কিথান, নিতেশ চিকারা, লানসিন টুরে, রানা ঘরামি, প্রনিত লামা তামাং, অতিন্দর মানি (সাজির কেভি), মুমতাজ আখতার, দিপঙ্কর দাস, দীপেন্দু দুয়ারি, মনভীর সিংহ, জিকাহি ডোডজ।