Athletics

পদক জিতে অমিতাভের সঙ্গে স্বপ্নের ‘লাঞ্চ’ চান লড়াকু দ্যুতি

সাফল্য পাওয়ার জন্য দেশের দ্রুততম মহিলা অ্যাথলিট দ্যুতি চন্দের প্রেরণা ‍‘বিগ বি’ অমিতাভ বচ্চন।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০৪:৪০
Share:

লক্ষ্য: দ্যুতির পাখির চোখ এখন টোকিয়ো অলিম্পিক্স। নিজস্ব চিত্র

আগামী বছর টোকিয়ো অলিম্পিক্সে ১০০ মিটার ইভেন্টকে পাখির চোখ করছেন তিনি। সেখানে সাফল্য পাওয়ার জন্য দেশের দ্রুততম মহিলা অ্যাথলিট দ্যুতি চন্দের প্রেরণা ‍‘বিগ বি’ অমিতাভ বচ্চন।

Advertisement

৪৪০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে বুধবার গভীর রাতে ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতা এসেছেন। শনিবার এই শহরেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়াল)রাষ্ট্রপতির থেকে অর্জুন পুরস্কার নেবেন ভারতের ‍‘স্প্রিন্ট রানি’ দ্যুতি। সে প্রসঙ্গেই এই ভারতীয় অ্যাথলিট বলছেন, ‍‘‍‘জীবনে প্রচুর ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে মাথা তুলে চলার পথে অর্জুন পুরস্কার একটা জাতীয় স্বীকৃতি। এটা উৎসর্গ করছি তাঁদের, যাঁরা জীবনের প্রতি পদে লাঞ্ছনা, অসম্মানের শিকার।’’ যোগ করেন, ‍‘‍‘এতেই সন্তুষ্ট হলে চলবে না। আমাকে টোকিয়ো থেকে অলিম্পিক পদক নিয়ে ফিরতে হবেই।’’

দ্যুতি আরও বলেন, ‍‘‍‘একটি টিভি চ্যানেলের ‍‘গেম শো’-তে আমি আর হিমা (দাস) আমন্ত্রিত প্রতিযোগী ছিলাম। যার সঞ্চালক ছিলেন অমিতাভ বচ্চন স্যর। আমার কাহিনি শুনে তিনি বলে ওঠেন, ‍‘কখনও আত্মবিশ্বাস হারাবে না। আমাকেও অনেক প্রত্যাখ্যান সইতে হয়েছে। অলিম্পিক্স থেকে পদক পেলে তোমার সঙ্গে একদিন লাঞ্চ সারব। খুব আড্ডাও হবে।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাইপাসের ধারে একটি হোটেলে আনন্দবাজারের সঙ্গে আলাপচারিতার ফাঁকে সেই বচ্চন কাহিনি ফাঁস করে দ্যুতির মন্তব্য, ‍‘‍‘ওঁর মতো এক জন কিংবদন্তির সঙ্গে লাঞ্চে যাওয়াটা অলিম্পিক্স পদকের জন্য বাড়তি প্রেরণা। কিন্তু বাছাই পর্বের প্রতিযোগিতা কবে হবে, সেটাই তো জানি না!’’

টোকিয়ো অলিম্পিক্সে জন্য মেয়েদের ১০০ মিটারে যোগ্যতা অর্জনের নির্ধারিত সময় ১১.১৫ সেকেন্ড। দ্যুতি বলছেন, ‍‘‍‘অনুশীলনে তো কখনও কখনও ১১.০২ সেকেন্ডেও শেষ করছি। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়!’’

ওড়িশার মেয়ের আফসোস, ‍‘‍‘আমার অ্যাথলিট জীবনটাই শেষ হতে বসেছিল এক সময়। কলকাতার ক্রীড়া-অধিকার কর্মী পয়োষ্ণী (মিত্র) ম্যাডাম না থাকলে আজ এই জায়গায় আসতাম না। কিন্তু তিনি এখন লন্ডনে। তাই দেখা করতে পারলাম না।’’

মাস খানেক আগে অর্থের জন্য তিনি গাড়ি বিক্রি করতে চলেছেন বলে গোটা ভারতের সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছিল। সেই খবরের বেশিটাই রটনা, এখন বলছেন দ্যুতি। বলছেন, ‍‘‍‘কিছু মানুষ আমাকে নিয়ে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করে। ওটা তাদের চক্রান্ত ছিল।’’ যোগ করেন, ‍‘‍‘আমার তিনটি গাড়ি। টোকিয়ো অলিম্পিক্সের প্রস্তুতির জন্য ওড়িশা সরকার ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। তা গত জুলাই মাস পর্যন্ত অনুশীলনের জন্য। ছ’জনের পেশাদার দল নিয়ে আমি অনুশীলন করি। তাঁদের মাসে তিন লক্ষ টাকা বেতন দিতে হয়। অলিম্পিক্স তো এক বছর পিছিয়েছে। এ বার কী হবে?’’ বলে চলেন, ‍‘‍‘ওড়িশা সরকারের থেকে ফের আর্থিক সাহায্য পেতে বছর শেষ হবে। তা হলে কি অনুশীলন বন্ধ করব? তাই একটা গাড়ি বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। সেটা নিয়েই বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে।’’

বৃহস্পতিবার সকালেই শুনেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহালি আগামী বছর বাবা হতে চলেছেন। কোহালি ও দ্যুতি দু’জনেই একটি ‍খেলার জুতো প্রস্তুতকারী সংস্থার শুভেচ্ছাদূত। বলছেন, ‍‘‍‘বিরাট ভাইকে আমার শুভেচ্ছা। শেষ বার কথা হওয়ার সময়ে আমাকে বলেছিল, তোমার কাহিনি কঠিন সময়ে প্রেরণা দেয়। অলিম্পিক্স থেকে পদক আনতে বিরাটের শৃঙ্খলা ও ফিটনেস সাধনা আমার কাছে অনুপ্রেরণা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement