নোভাক জোকোভিচ মনে করছেন পিক্লবল ধীরে ধীরে টেনিসের জায়গা নিয়ে নিতে পারে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বোমা ফাটিয়েছেন নোভাক জোকোভিচ। টেনিস কর্তাদের সতর্ক করেছেন তিনি। ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের মতে, দ্বাদশ শতকে জন্ম নেওয়া ৯০০ বছরের ইতিহাস বহন করা টেনিস খেলায় যদি এ বার বদল না আনা হয় তা হলে মাত্র ৫৯ বছরের পুরনো পিক্লবল তার জায়গা নিয়ে নেবে। সত্যিই কি তাই? পিক্লবলের দাপটে কি দর্শকেরা ভুলে যাবেন বিয়ন বর্গ, রড লেভার, জন ম্যাকেনরো, পিট সাম্প্রাস, আন্দ্রে আগাসি, রজার ফেডারের, রাফায়েল নাদাল, মার্গারেট কোর্ট, সেরিনা উইলিয়ামস, মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা, মার্টিনা হিঙ্গিস, লিয়েন্ডার পেজ, কার্লোস আলকারাজ়দের র্যাকেটে গড়া এত এত রূপকথা? জোকোভিচ মনে করেন। তিনি সতর্কও করেছেন। সত্যিই কি ৫৯ বছর পুরনো পিক্লবল ৯০০ বছর পুরনো টেনিসের জন্য অশনি সঙ্কেত?
জোকোভিচের আশঙ্কা
চলতি বছর জুলাই মাসে পিক্লবলের জনপ্রিয়তার প্রসঙ্গ তুলেছেন জোকোভিচ। তাঁর মতে, টেনিসে প্রয়োজনীয় বদল না করলে ধীরে ধীরে টেনিসের জায়গা দখল করে নেবে পিক্লবল। তিনি বলেন, “পিক্লবলের মতো খেলা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। ওই খেলায় মজা থাকতে পারে, কিন্তু টেনিসের বিকল্প হতে পারে না। র্যাকেট স্পোর্টসের রাজা টেনিস। কিন্তু যদি গোটা বিশ্বে টেনিসের জনপ্রিয়তা আমরা বাড়াতে না পারি তা হলে এই সব খেলা ধীরে ধীরে টেনিসের জায়গা নিয়ে নেবে। তার জন্য টেনিস সংস্থাদের ভাবতে হবে। এই খেলায় দর্শকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পেশাদারিত্ব বাড়াতে হবে। নইলে ভবিষ্যতে বিপদ।”
র্যাকেট হাতে এ ভাবেই কোর্ট শাসন করেন নোভাক জোকোভিচ। —ফাইল চিত্র।
পিক্লবল কী?
পিক্লবল এক ধরনের খেলা যা র্যাকেটের বদলে প্যাডল দিয়ে খেলা হয়। টেনিসের সঙ্গে তার মিল রয়েছে। কারণ, খেলাটি হয় কোর্টে। তবে টেনিস কোর্টের থেকে আকার ও আয়তনে ছোট হয় পিক্লবল কোর্ট। এই খেলায় যে বল ব্যবহার করা হয় তা পিংপং বলের থেকে কিছুটা বড়। তাতে অজস্র ফুটো থাকে।
পিক্লবলের নিয়ম
দু’জন বা চার জন এই খেলা খেলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সার্ভিস করতে হয় আন্ডারহ্যান্ড। অর্থাৎ, হাত কোমরের উপরে ওঠানো যাবে না। সার্ভিসের সময় কেউ চাইলে কোর্টে এক বার ড্রপ খাইয়ে সার্ভিস করতে পারেন। কেউ চাইলে সরাসরি করতে পারেন। সার্ভিস করার পর বল যেন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের কোর্টেই পড়ে। এ ক্ষেত্রে সাইডলাইনে একটিই লাইন থাকে। টেনিস বা ব্যাডমিন্টনের মতো দু’টি লাইন থাকে না। সার্ভিস রিটার্নের ক্ষেত্রে প্রথম বার বল যেন দুই কোর্টেই অন্তত এক বার করে ড্রপ খায়।
এই খেলায় সার্ভিস করা খেলোয়াড় বা দল যদি পয়েন্ট না পায় তা হলে সার্ভিস প্রতিপক্ষের হাতে যায়। কিন্তু যে দল সার্ভিস করছে তারাই একমাত্র পয়েন্ট পাবে। প্রতিপক্ষ দল সেই র্যালি জিতলেও পয়েন্ট পাবে না। সার্ভিস হাত বদল হবে শুধু। ১১ পয়েন্টের খেলা হয়। জিততে হলে ২ পয়েন্টের ব্যবধান থাকতে হবে। সিঙ্গলসের ক্ষেত্রে পাঁচ ও ডাবলসের ক্ষেত্রে সাত গেমের ম্যাচ হয়।
র্যালি চলাকালীন ভলি, ড্রপ শট, স্ম্যাশ সব মারা যাবে। কিন্তু নেটের দু’ধারে কিছুটা জায়গা লাইন করা থাকে। তাকে বলে ‘কিচেন’। সেই এলাকায় পা দিয়ে ফেললে ফাউল। সেই লাইনের কাছে দাঁড়িয়ে খেলতে হলে এমন ভাবে মারতে হবে যাতে বল প্রতিপক্ষের কোর্টে এক বার অন্তত ড্রপ খায়। অর্থাৎ, সেখানে দাঁড়িয়ে খুব জোরে শট খেলা যায় না। এই খেলায় গতি বা শক্তির থেকে বুদ্ধির প্রয়োজন বেশি। ফলে যে কোনও বয়সের লোকই পিক্লবল খেলতে পারেন।
পিক্লবল খেলতে ব্যবহার করা হয় এই ধরনের প্যাডল ও বল। —ফাইল চিত্র।
টেনিসের সঙ্গে তফাত কোথায়?
কোর্টে হলেও এই খেলার সঙ্গে টেনিসের অনেক তফাত। টেনিস খেলা হয় র্যাকেটের সাহায্যে। পিক্লবল প্যাডলের সাহায্যে। দুই খেলায় ব্যবহার হওয়া বলও আলাদা। পিক্লবলের কোর্টের আয়তন ৪৪ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট চওড়া। অর্থাৎ, ব্যাডমিন্টন কোর্টের সমান। এই খেলা নেটের উচ্চতাও টেনিসের থেকে কম হয়। টেনিসে নেটের উচ্চতা দু’ধারে ৪২ ইঞ্চি ও কোর্টের মাঝে ৩৬ ইঞ্চি হয়। পিক্লবলে নেটের উচ্চতা দু’ধাপ ৩৬ ইঞ্চি ও মাঝে ৩৪ ইঞ্চি হয়। টেনিসের সঙ্গে এই খেলার নিয়মেও বিস্তর তফাত।
এই তফাতের কথাই জানিয়েছেন সর্বভারতীয় টেনিস সংস্থার সহ-সভাপতি হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়। তিনি পিক্লবলকে বিনোদনের মাধ্যম হিসাবেই দেখছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে হিরণ্ময় বললেন, “পর পর নতুন খেলা আসছে। এটাও একটা নতুন খেলা। টেনিস আর পিক্লবল তো এক নয়। টেনিস থাকবে টেনিসের জায়গায়। পিক্লবল থাকবে তার জায়গায়। বিশ্ব জুড়ে ফুটবলের পর সবচেয়ে বড় খেলা টেনিস। পিক্লবল পেশাদার খেলা নয়। বিনোদনের মাধ্যম।” জোকোভিচ টেনিসে বদলের কথা বলেছেন। হিরন্ময়ের মতে, বদল তো হচ্ছে। তিনি বললেন, “টেনিসেও তো বদল হচ্ছে। ফরাসি ওপেন ছাড়া সব জায়গায় লাইন বিচারক উঠে গিয়েছে। প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাতে বিতর্ক কমছে। এ ভাবেই তো খেলায় বদল হয়। তাতে খেলার উন্নতিই হয়।”
৫৯ বছরের পুরনো খেলা পিক্লবল
এই খেলা ৫৯ বছর পুরনো। ১৯৬৫ সালে আমেরিকার বেনব্রিজ আইল্যান্ডে বিল বেল ও জোয়েল প্রিচার্ড নামের দুই ব্যক্তি এই খেলা শুরু করেন। সন্তানদের আনন্দের জন্য এই অদ্ভুত খেলা শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তখন তাঁদের কাছে ভাল প্যাডল ছিল না। সেখানকারই এক বাসিন্দা বার্নে ম্যাককুলাম এই প্যাডল তৈরি করে তাঁদের দেন। সেই থেকে এই খেলা শুরু। তার নাম পিক্লবল হওয়ার পিছনেও একটি মজার গল্প রয়েছে। বিল ও জোয়েলের একটি পোষ্য সারমেয় ছিল। তার নাম পিক্ল। খেলার মাঝে যখনই বল কোর্টের বাইরে চলে যেত সেই সারমেয় বল মুখে করে নিয়ে আসত। সেই থেকে এই খেলার নাম পিক্লবল। সেই সময় আমেরিকার কয়েকটি প্রদেশেই এই খেলা সীমাবদ্ধ ছিল। এত নিয়মও ছিল না। ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়েছে।
টেনিসের ইতিহাস
তুলনায় টেনিস ৯০০ বছর পুরনো। দ্বাদশ শতাব্দীতে উত্তর ফ্রান্সে এই খেলার উৎপত্তি। তবে তখন র্যাকেটের সাহায্যে এই খেলা হত না। হত হাতের তালুর সাহায্যে। সেই সময়ে মূলত রাজ পরিবারের মধ্যেই এই খেলা সীমাবদ্ধ ছিল। ষোড়শ শতাব্দীতে র্যাকেট আসে। ফরাসি শব্দ ‘তেনেজ়’ থেকে এসেছে টেনিস। সেই সময় ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সেই এই খেলার চল ছিল। চার দেওয়ালের মধ্যে হত টেনিস। বল দেওয়ালে লেগে ফিরে আসত। তখন এত নিয়ম ছিল না। ধীরে ধীরে বেড়েছে এই খেলার জনপ্রিয়তা। অনেক পরে এসেছে নিয়মকানুন। ১৮৫৯ থেকে ১৮৬৫ সালের মধ্যে টেনিসের আধুনিক যুগের শুরু। ১৯৬৮ সালের পর থেকে ধরা হয় টেনিসের ওপেন এরা।
আমেরিকার ১০ শতাংশ টেনিস কোর্ট বদলে গিয়েছে পিক্লবল কোর্টে
আমেরিকায় পিক্লবলের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ জানিয়েছে, সেখানকার টেনিস কোর্টের ১০ শতাংশ পিক্লবল কোর্টে বদলে ফেলা হয়েছে। আমেরিকার টেনিস সংস্থার সিইও লিউ শের জানিয়েছেন, পিক্লবল খেলোয়াড়ের সংখ্যা বাড়ছে। সেখানে এমন কোর্ট নেই যেখানে একই সঙ্গে দু’টি খেলা আয়োজন করা যায়। সেই কারণে টেনিস কোর্ট বদলে ফেলা হচ্ছে। একটি টেনিস কোর্টে খুব বেশি হলে চার জন খেলতে পারেন। কিন্তু সেই কোর্টকেই যদি পিক্লবল কোর্টে বদলে ফেলা যায় তা হলে সেখানে একসঙ্গে ১৬ জন খেলতে পারবেন।
একসঙ্গে খেলার কথাই বলেছেন প্রাক্তন গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলোয়াড় তথা ডেভিস কাপার বাংলার জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “পিক্লবল কখনই টেনিসের বিকল্প হতে পারে না। কোনও সম্ভাবনাই নেই। পিক্লবল জনপ্রিয় হচ্ছে। পরিবার নিয়ে সকলে একসঙ্গে খেলতে পারছে। মজা করছে। এই খেলায় বিনোদন আছে। কিন্তু টেনিসের বিকল্প হতে পারে না। আমার মনে হয় আগামী ১০০ বছরেও পিক্লবল টেনিসের বিকল্প হতে পারবে না।”
‘স্পোর্টস অ্যান্ড ফিটনেস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন’ জানিয়েছে, গত তিন বছরে শুধু আমেরিকায় পিক্লবল খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেড়েছে ২২৩.৫ শতাংশ। গত ১২ মাসে এক কোটির বেশি মানুষ এই খেলা শুরু করেছেন। পিক্লবলের জনপ্রিয়তা বাড়লেও তাতে টেনিসের কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেছেন আমেরিকার টেনিস সংস্থার সিইও লিউও। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বে টেনিস খেলোয়াড়ের সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। আগামী ১০ বছরে তা বেড়ে সাড়ে তিন কোটি হয়ে যাবে বলে আশা তাঁর।
ছোট কোর্টে চার জন খেলতে পারেন পিক্লবল। যে কোনও বয়সে খেলা যায় এই খেলা। —ফাইল চিত্র।
জনপ্রিয় রেস্তরাঁ বন্ধ করে পিক্লবলে মজেছেন মালকিন
কলোরাডোর জনপ্রিয় রেস্তরাঁর মালকিন ওয়েন্ডি মিচেল জানিয়েছেন, তিনি এ বার থেকে পুরো সময় খেলায় দেবেন। ১৫ বছর বয়স থেকে এই ব্যবসায় রয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব মিচেল। তাঁর রেস্তরাঁয় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় থাকে। তা হলে কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি? মিচেল বলেন, “অনেক দিন তো ব্যবসা হল। বয়স বাড়ছে। পিক্লবল খেলতে খুব ভাল লাগছে। এই বয়সেও এই খেলা খেলতে পারছি। এর থেকে ভাল কী হতে পারে? তাই শেষ জীবনটা পিক্লবল নিয়েই চলতে চাই। এই বয়সে আমেরিকার কোনও প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নও হয়ে যেতে পারি।”
৩৭,০০০ কোটি টাকার বাজার, কী কারণে এত জনপ্রিয়?
চড়চড় করে বাড়ছে পিক্লবলের বাজার। ‘মার্কেট.ইউএস’-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২৩ সালে পিক্লবলের বাজারমূল্য ছিল ১২,৬০৮ কোটি টাকা। ২০৩৩ সালের মধ্যে তা হবে ৩৬,৯৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বছরে ১১.৩ শতাংশ বৃদ্ধি। এই খেলার জনপ্রিয়তা ও বাজারমূল্য বৃদ্ধির নেপথ্যে কয়েকটি কারণ রয়েছে।
১) আট থেকে আশি, সকলেই খেলতে পারেন— এই খেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনও বয়স নেই। টেনিস বা ব্যাডমিন্টনের জন্য যেমন একটি নির্দিষ্ট বয়স থাকে, এতে তা লাগে না। আট থেকে আশি, সকলেই এই খেলা খেলতে পারেন। এই খেলায় শারীরিক দক্ষতাও কম লাগে। পাশাপাশি খেলার উপকরণও সহজলোভ্য। বিশেষ কোচিংয়েরও প্রয়োজন পড়ে না।
২) চোটের আশঙ্কা কম— এই খেলায় খেলোয়াড়দের গতি কম লাগে। ফলে চোটের আশঙ্কা কম থাকে। সেই কারণেই এই খেলায় অনেক বেশি মানুষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
৩) পেশাদার প্রতিযোগিতা— এখন পিক্লবলের বিভিন্ন পেশাদার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। তাতে অর্থ বাড়ছে। সেই কারণে এই খেলার দিকে ঝুঁকছেন অনেকে।
পিক্লবলের এই ব্যবসায়িক দিক উঠে এসেছে বাংলার টেনিস কর্তা সুজয় ঘোষের কথায়। তিনি বললেন, “কলকাতা, ভারত-সহ গোটা বিশ্বে পিক্লবল অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে। কলকাতায় পঞ্জাব ক্লাব, স্ট্যাডেল, কসমোপলিটন ক্লাবের মতো পাঁচ থেকে সাতটা ক্লাবে পিক্লবলের কোর্ট হয়েছে। রুফটপে অনেক জায়গায় খেলা হচ্ছে। এটা একটা ব্যবসা। এক ঘণ্টার জন্য খেলতে দেড় থেকে দু’হাজার টাকা লাগছে। তার পরও সকলে খেলছে।” তবে বেশি দিন এই জনপ্রিয়তা থাকবে না বলেই মনে করেন তিনি। সুজয়ের কথায়, “দু’তিন বছরের বেশি এই খেলার জনপ্রিয়তা থাকবে না। ঝুঁকে খেলতে হয় বলে অনেক মধ্যবয়সি বা বয়স্ক মানুষের কোমরে সমস্যা হচ্ছে। জোকোভিচের আশঙ্কা ঠিক হলেও আমার মনে হয় টেনিস টেনিসই থাকবে। অন্য কোনও খেলা এর জায়গা নিতে পারবে না।”
বিশ্বের ক’টি দেশে পিক্লবলের চল আছে?
আমেরিকায় এই খেলার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। তবে আমেরিকার বাইরেও অনেক দেশে পিক্লবলের চল রয়েছে। ডায়নামিক ইউনিভার্সাল পিক্লবল রেটিং অনুযায়ী, বিশ্বের যে ১০টি দেশে এই খেলার চল বেশি সেগুলি হল— আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, মালয়েশিয়া, পুয়ের্তো রিকো, ভিয়েতনাম, ফিলিপিনস, মেক্সিকো ও চিন। তবে গত তিন বছরে এই খেলার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেড়েছে ভারতে। সেই নিরিখে সেরা ১০টি দেশ হল— ভারত, তাইল্যান্ড, ভেনেজুয়েলা, চিন, ফিলিপনস, মেক্সিকো, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স ও ব্রিটেন। গত বছর আরও কয়েকটি দেশে পিক্লবল শুরু হয়েছে। সেই দেশগুলি হল— ব্রুনেই, শ্রীলঙ্কা, রাওয়ান্ডা, ঘানা, ইরান, এল সালভাদর, কাতার, আর্মেনিয়া, জ়িম্বাবোয়ে, হন্ডুরাস, জিবৌতি, প্যারাগুয়ে, লেবানন ও জার্সি।
ভারতে পিক্লবলের জনপ্রিয়তা
ভারতেও পিক্লবলের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই খেলায় যোগ দেওয়া খেলোয়াড়ের সংখ্যা ১৫৯ শতাংশ বেড়েছে। ক্রীড়াপ্রযুক্তি সংস্থা ‘হাডল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সুহেল নারাইন বলেন, “পিক্লবলের যা জনপ্রিয়তা দেখছি তাতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই খেলা প্রতিটি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়বে। শুধু বড় শহর নয়, ছোট শহরেও এই খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ছে।” চলতি বছর ভারতে পিক্লবলের প্রথম পেশাদার প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। নাম ‘ওয়ার্ল্ড পিক্লবল লিগ’। প্রাক্তন ডেভিস কাপার গৌরব নাটেকর ও সোনি এন্টারটেনমেন্টের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। ছ’টি দল খেলবে এই প্রতিযোগিতায়। প্রতি দলে পাঁচ থেকে আট জন থাকবেন। ভারতীয় প্রতিযোগীর পাশাপাশি বিদেশি প্রতিযোগীদেরও দেখা যাবে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সর্বভারতীয় পিক্লবল সংস্থা।
কলকাতার একটি কোর্টে চলছে পিক্লবলের প্রশিক্ষণ। অল্প বয়স থেকেই এই খেলায় ঝুঁকছে ছেলে-মেয়েরা। —ফাইল চিত্র।
পিক্লবলের জনপ্রিয়তাকে অশনি সঙ্কেত মনে করছেন জোকোভিচ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে একমত নন জয়দীপ, হিরণ্ময়েরা। তাঁরা এই খেলাকে স্রেফ আলাদা একটি খেলা হিসাবে দেখছেন। তাঁদের মতে, টেনিসের গৌরব বা জায়গা, কোনওটাই কাড়তে পারবে না পিক্লবল।