উদয়: ২০২০ আইপিএলের সেরা উঠতি খেলোয়াড় দেবদত্ত। টুইটার
শুধুমাত্র একটি মরসুমের ধূমকেতু হয়ে থাকতে চান না তিনি। জীবনের প্রথম আইপিএলে সেরা উঠতি খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েও আত্মতুষ্ট নন দেবদত্ত পাড়িকল। ভারতীয় দলের হয়ে ওপেন করার স্বপ্নই যে এখনও পূরণ হয়নি তাঁর।
দেবদত্ত মনে করেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য তিনি তৈরি। সুযোগ এলে হাতছাড়া করতে চান না। বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে দেবদত্ত বলেন, "রাবাডা, বুমরাদের খেলার পরে আমার সাহস বেড়ে গিয়েছে। এই আত্মবিশ্বাস সারা জীবনের জন্য কাজে লাগবে। আন্তর্জাতিক মানের বোলিং সামলাতে পারার তৃপ্তি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ওপেন করতে বলা হলে আমি তৈরি।"
এমন দু'জনের সঙ্গে ড্রোসিংরুম ব্যবহার করেছেন, যাঁদের সমীহ করেন বিশ্বের সব বোলার। বিরাট কোহালি এবং এবি ডিভিলিয়ার্স। দুই কিংবদন্তির সঙ্গে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা কী রকম? দেবদত্তের উত্তর, "ব্যর্থতার দিনে সব সময় পাশে পেয়েছি বিরাট ভাইকে। সাফল্যের দিনে সে ভাবে কথা হত না। কিন্তু কোনও ম্যাচে ভাল খেলতে না পারলে, আমার পাশে বসে প্রশ্ন করত। জানতে চাইত, কোথায় সমস্যা হচ্ছে। বিরাট ভাই জানত, জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে ব্যর্থতা ভোলা কঠিন। তাই অধিনায়ক চেষ্টা করত অন্যদের চাপ কমানোর।" যোগ করেন, "ডিভিলিয়ার্স একেবারে প্রাণখোলা একজন মানুষ। ওর সামনে থাকলে কখনও স্নায়ুর চাপ বলে কিছু মনেই হবে না। ব্যাট করতে যাওয়ার আগেও ফুরফুরে মেজাজে থাকত। কী জানি, আত্মবিশ্বাসই হয়তো মানুষকে এতটা পরিণত করে দেয়!"
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও নজর কেড়েছেন দেবদত্ত। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে মিড-অফ অঞ্চলে শূন্যে ঝাঁপিয়ে তালুবন্দি করেন সৌরভ তিওয়ারির ক্যাচ। ক্যাচটি সম্পূর্ণ করার পরে অধিনায়কের আলিঙ্গন কখনও ভুলবেন না দেবদত্ত। বলছিলেন, "ফিল্ডিং করতে ছোটবেলা থেকেই পছন্দ করি। আরসিবি-র প্রত্যেক ম্যাচের আগের দিন দলীয় বৈঠকে বিরাট ভাই বলত, একটি ভাল ক্যাচ কিন্তু বদলে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য। নিজেও সে ভাবে অনুশীলন করত। "
কেরলের এড়াপ্পালে বড় হওয়ার সুবাদে ফুটবলকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেননি দেবদত্ত। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ভক্তের ক্রিকেট-প্রেম শুরু হয় হায়দরাবাদে যাওয়ার পর থেকে। ২০১১ সালে বেঙ্গালুরু আসার পরে ভর্তি হন কর্নাটক ইনস্টিটিউট অব ক্রিকেটে। ২০১৪-এ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে প্রচুর রান করেন দেবদত্ত। সেখান থেকে সুযোগ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। কোচবিহার ট্রফিতে ভাল পারফরম্যান্সই খুলে দেয় অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের দরজা। ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। বিজয় হজারে ট্রফিতে ৬০৯ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের পুরস্কার পাওয়ার পরেই ডাক পান রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গলোরে। সেখান থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। দেবদত্ত বলছিলেন, "গত ৬০ দিনে জীবন পাল্টে গেল। এখন যতই ঝড়-ঝাপটা আসুক ঠিক সামলে নেব।"