ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে দায়ের করা হল এফআইআর। — ফাইল চিত্র
অবশেষে জয় হল কুস্তিগিরদের। জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরন সিংহের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতের দিকে দু’টি এফআইআর দায়ের করল দিল্লি পুলিশ। দু’টি এফআইআর-ই ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন এক নাবালিকা। তাই একটি এফআইআর ‘পকসো’ ধারা মেনে সেই নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে। দ্বিতীয় এফআইআরের ক্ষেত্রে বাকি কুস্তিগিরদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগের কথা মাথায় রেখে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য দায়ের করা হয়েছে। দিল্লির কনট প্লেস থানায় মোট সাতটি অভিযোগ করেছিলেন কুস্তিগিররা।
ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করা হবে তা আগেই জানা গিয়েছিল। দিল্লি পুলিশের তরফে আইনজীবী তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিংহের বেঞ্চকে জানিয়েছিলেন, শুক্রবারই এফআইআর দায়ের করা হবে অভিযুক্ত কুস্তি সংস্থার কর্তা তথা কাইজারগঞ্জের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে। সেই প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করা হল শুক্রবার রাতে।
এফআইআর দায়ের করা হবে জেনে ধর্নায় থাকা কুস্তিগির সাক্ষী মালিক বলেন, “জয়ের দিকে প্রথম ধাপ। কিন্তু আমাদের প্রতিবাদ চলবে।” বিনেশ ফোগাট বলেন, “হয়তো খুবই হালকা এফআইআর দায়ের করা হতে পারে। আমরা আগে এফআইআর দেখব, তার পর ঠিক করব ধর্না তুলে নেওয়া হবে কিনা। ব্রিজ ভূষণকে আগে গ্রেফতার করতে হবে এবং সব পদ থেকে সরাতে হবে। না হলে উনি তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন।”
শুক্রবার কুস্তিগিরদের ধর্নাকে সমর্থন জানিয়ে টুইট করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জা। দু’জনেই কুস্তিগিরদের ন্যায়বিচারের আবেদন করেছেন।
এ দিন দুপুর ১.৩০টা নাগাদ টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “যে সব কুস্তিগিররা প্রতিবাদ করছে তাদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো দরকার। ওরা সবাই এক হয়ে কথা বলছে। আমাদের ক্রীড়াবিদরা দেশের গর্ব। ওরাই আসল চ্যাম্পিয়ন। প্রকৃত দোষী যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন, তাঁকে প্রকাশ্যে আনা উচিত। ন্যায়বিচার হওয়া দরকার। সত্যের জয় হোক।”
শুধু ক্রীড়াবিদ হিসাবে নয়, মহিলা হিসাবেও কুস্তিগিরদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন সানিয়া। তিনি লিখেছেন, “শুধু ক্রীড়াবিদ হিসাবে নয়, একজন মহিলা হিসাবেও ওদের ধর্না দিতে দেখা কঠিন। ওরা আমাদের দেশকে সম্মান এনে দিয়েছে। তখন আমরা ওদের সঙ্গে উৎসব করেছি। আপনিও যদি সেটা করে থাকেন, তা হলে এই কঠিন সময়েও ওদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয় এবং গুরুতর অভিযোগ। আমি চাই সত্য প্রকাশ্যে আসুক এবং ন্যায়বিচার পাক সবাই। দেরি না হয়ে যায়।”