আবার কবে দেখা যাবে এই দৃশ্য? কুস্তির জাতীয় প্রতিযোগিতা নিয়ে সংশয়। —ফাইল চিত্র।
এখনও নিলম্বিত রয়েছে ভারতীয় কুস্তি সংস্থা। তার মধ্যেই তারা জাতীয় প্রতিযোগিতা আয়োজনের কথা ঘোষণা করেছিল। দিল্লি হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তারা সেই প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক যে অ্যাড-হক কমিটি তৈরি করে দিয়েছে তারাই ভারতীয় কুস্তি সংক্রান্ত সকল সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত।
৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুতে সিনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ভারতীয় কুস্তি সংস্থা। সেই ঘোষণার পর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কুস্তিগির সত্যব্রত কাদিয়ান। সম্পর্কে তিনি অলিম্পিক্সে পদক জয়ী কুস্তিগির সাক্ষী মালিকের স্বামী। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছে আদালত। কেন্দ্রের গড়ে দেওয়া অ্যাড-হক কমিটিকে পুরো বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় কুস্তিকে বাঁচানোর অনুরোধ করেছেন সাক্ষীও। রিয়ো অলিম্পিক্সে পদকজয়ী সাক্ষী কয়েক মাস আগেই কুস্তি থেকে অবসর নিয়েছেন। তাঁর মতে, ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে ক্রমাগত ভয় দেখানো হয়েছে। এখনও তা চলছে। সেই ভয়েই তিনি কুস্তি ছেড়েছেন। কিন্তু ভয় কাটছে না তাঁর। সাক্ষী বলেন, “গত বছর থেকেই ব্রিজভূষণ ও তাঁর অধীনে থাকা কুস্তি সংস্থা কী ভাবে কুস্তিগিরদের সমস্যায় ফেলেছে তা গোটা দেশ দেখেছে। আমরা প্রতিবাদ করায় হেনস্থা করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমি কুস্তি ছেড়েছি। তার পরে কেন্দ্রীয় সরকার কুস্তি সংস্থাকে নিলম্বিত করেছে। কিন্তু কুস্তি সংস্থা নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুন।”
সাক্ষীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার বা আদালতের কোনও নির্দেশ কুস্তি সংস্থা মানছে না। এতে কুস্তিগিরদের সমস্যা হচ্ছে। এখন কুস্তি সংস্থার মাথায় রয়েছেন ব্রিজভূষণ ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিংহ। তিনিও একই কাজ করছেন বলে অভিযোগ সাক্ষীর। তিনি বলেন, “সরকার নিলম্বিত করার পরও কুস্তি সংস্থা কী ভাবে নিজেদের কাজ চালায়? হাই কোর্টও কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ওরা কোনও নির্দেশই শুনছে না। আদালত যখন প্রশ্ন করছে তখন ওরা কুস্তিগিরদের এগিয়ে দিচ্ছে। ওদের ভবিষ্যতের কথা বলে সময় নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, আপনার যদি মনে হয় কুস্তি সংস্থার অধীনে মহিলা কুস্তিগিরেরা সুরক্ষিত থাকবে তা হলে ওদের কাজ করতে দিন। নইলে পদক্ষেপ করুন। ভারতীয় কুস্তিকে বাঁচান।”
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন বিনেশ ফোগাট-সহ কয়েক জন মহিলা কুস্তিগির। তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে যন্তর মন্তরে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন তাঁরা। সেই আন্দোলনে ছিলেন সাক্ষী ও কুস্তিগির বজরং পুনিয়া। আন্দোলনের চাপে অবশেষে সরেন ব্রিজভূষণ। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও করছে দিল্লি পুলিশ। প্যারিস অলিম্পিক্সে ফাইনালের আগে বিনেশের ওজন-বিতর্কে বাতিল হওয়ার ঘটনাতেও ব্রিজভূষণকে নিশানা করেছিলেন সাক্ষীরা। যদিও পাল্টা বিনেশকেই দায়ী করেছিলেন কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি।