মধ্যমণি: জাতীয় পতাকা নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে লিয়েন্ডার (মাঝখানে)। শুক্রবার ডেভিস কাপ ম্যাচ শুরুর আগে। টুইটার
ডেভিস কাপে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে টাইয়ের প্রথম দিন ভারতের পরিকল্পনা কাজে এল না। দুটি সিঙ্গলস ম্যাচেই হেরে ০-২ পিছিয়ে গেল ভারত। প্রথম ম্যাচে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও হেরে গেলেন ভারতের প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরন। দ্বিতীয় ম্যাচে স্ট্রেট সেটে হার রামকুমার রমানাথনের।
জ়াগ্রেবে শুক্রবার প্রথম ম্যাচে প্রজ্ঞেশের লড়াই ছিল বোর্না গোজোর বিরুদ্ধে। তাতে প্রথম সেট ৬-৩ দখল করে এগিয়ে গিয়েছিলেন প্রজ্ঞেশ। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। এর পরের দু’সেটে তিনি হারেন ৪-৬, ২-৬। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে গোজো (২৭৭) অনেকটাই পিছিয়ে প্রজ্ঞেশের (১৩২) চেয়ে। তা ছাড়া এর আগে তিনি ডেভিস কাপে একটিও ম্যাচ জিততে পারেননি। তাই ভারতীয় দলের পরিকল্পনা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে জেতার জন্য ঝাঁপানো। কিন্তু এক ঘণ্টা ৫৭ মিনিটের লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়ার তরুণ ভারতের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন।
প্রথম ম্যাচে এই ধাক্কা দেওয়ার পরে ভারতীয় দলের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর পরীক্ষা কঠিন হয়ে যায়। দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্বের ১৮২ নম্বর রামকুমারের লড়াই ছিল বিশ্ব র্যাঙ্কিংেয় ৩৭ নম্বরে থাকা মারিন চিলিচের বিরুদ্ধে। দু’ঘণ্টা ১২ মিনিট লড়ে ৬-৭, ৬-৭ হারেন রামকুমার।
ক্রোয়েশিয়ার এক নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে নামেন এই টাইয়ে প্রাক্তন যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন চিলিচ। তাদের আর এক তারকা বোর্না চোরিচ (বিশ্ব র্যাঙ্কিং ৩৩) এই টাইয়ে খেলছেন না। ভারতীয় দলে আছেন আবার সুমিত নাগাল (১২৭)। তিনিই এক নম্বর খেলোয়াড় এই মূহূর্তে ভারতের। তবে টাইয়ে নামার আগের দিন ভারতীয় দল ঠিক করেছিল রামকুমার রমানাথনকে (বিশ্ব র্যাঙ্কিং ১৮২) খেলানো হবে সুমিতকে না নামিয়ে। কারণ, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে যে ধরনের কোর্টে খেলা হচ্ছে সেখানে রামকুমার আরও ভাল খেলবেন বলে মনে করছিল ভারতীয় শিবির। সুমিতের অস্ত্র ‘টপ স্পিন’ এই কোর্টে কাজে আসবে না বলেই মনে হয়েছিল। ভারতের নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন রোহিত রাজপালও সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
গোটা ম্যাচে নটি এস সার্ভিস করেন গোজো। তুলনায় প্রজ্ঞেশের এস সার্ভিসের সংখ্যা ৩। প্রথম সার্ভিসের দিক থেকে যদিও গোজোর (৫৯ শতাংশ) চেয়ে এগিয়ে প্রজ্ঞেশ (৬০ শতাংশ)। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। শনিবার ডাবলস ম্যাচে লিয়েন্ডার পেজ এবং রোহন বোপান্না জুটি বাঁধতে পারেন। লিয়েন্ডার আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, এ মরসুমেই পেশাদার টেনিস থেকে অবসর নেবেন তিনি। ভারতীয় সমর্থকদের আশা ডাবলসে জয় এনে দেবেন লিয়েন্ডার।
প্রথম সেটে হারার পরে পরিকল্পনায় পরিবর্তন করেন গোজো। ঘন ঘন নেটে উঠে আসতে থাকেন। সহজ ভলি শট মারার সুযোগ পেয়ে দ্রুত পয়েন্ট তুলে নেন। তাঁর শক্তিশালী সার্ভিসের জন্য এই পরিকল্পনা দারুণ ভাবে কাজেও আসছিল। এ ভাবেই দ্বিতীয় সেট দখল করে সমতা ফেরান।
তৃতীয় সেটে সেই আনফোর্সড এররের ফাঁদে পড়ে ১-৩ পিছিয়ে পড়েন প্রজ্ঞেশ। সেখান থেকে পরের গেমে ১-৪ পিছিয়ে যান। গোজো এই সুযোগে আরও চাপ বাড়ান প্রতিপক্ষের উপরে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে ফেটে পড়েন উচ্ছ্বাসে। দ্বিতীয় ম্যাচে চিলিচকে কড়া পরীক্ষার মুখে ফেলে দিয়েছিলেন রামকুমার। কিন্তু চিলিচের দুরন্ত সার্ভিসের বিরুদ্ধে হার মানেন তিনি। ক্রোয়েশীয় তারকা মারেন ১৮টি এস। ভারতকে এই টাই দখল করতে হলে শনিবারের তিনটি ম্যাচই জিততে হবে। অর্থাৎ ডাবলস ছাড়াও বাকি দুটি সিঙ্গলস ম্যাচ।
শনিবার ডেভিস কাপে: ক্রোয়েশিয়া বনাম ভারত, সন্ধে ৭.৩০, সরাসরি ডি স্পোর্টস চ্যানেলে।